১৯৬৮ সালে জন্মগ্রহন করেন পাকিস্তানের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান সাঈদ আনোয়ার। তাঁর ব্যাটিং এক সময় লাখো দর্শককে মোহিত করে তুলত। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ইনজামামের চোখে তিনি পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার। ১৯৯৩-৯৪ সালে অয়েলিংটনে ক্যারিয়ারের মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট শতক(১৬৯) হাঁকিয়েছিলেন। এর পরে ১৯৯৬ সালে দা ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও ১৭৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। ১৯৯৮-৯৯ সালে কলকাতা টেস্টে ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে দলের বাকি সবাইকে আউট হতে দেখেছেন। একরকম ইনিংসকে বলা হয় ক্যারিং ব্যাট থ্রু ইনিংস। সাঈদ আনোয়ারের অপরাজিত ১৮৮ রানের সেই ইনিংসটা ছিল এমনই একটা ইনিংস। তিনি এমন ঘটনা শুধু টেস্টেই ঘটাননি ওয়ানডেতেও ঘটিয়েছেন।

Source
১৯৯৭ সালে চেন্নাইতে তিনি ১৪৬ বলে ১৯৪ রানের এক ইনিংস খেলেছিলেন। তাঁর দুর্ভাগ্য যে তিনি ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির মালিক হতে পারেননি। টেন্ডুলকারের বলে ছক্কা মেরে ডাবল সেঞ্চুরি করতে গিয়ে সৌরভ গাঙ্গুলির হাতে ধরা পড়েছিলেন। ওডিআইতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের এই রেকর্ড অক্ষত ছিল ২০১০ সাল পর্যন্ত। সাঈদ আনোয়ারের অমন মারকাটারি ব্যাটিংয়ের সহায়তায় চেন্নাইয়ে ইন্ডিপেনডেন্স কাপে ৩৫ রানে ভারতকে হারিয়েছিল পাকিস্তান। বাঁ-হাতি ওপেনার সাঈদ আনোয়ারের ইনিংসে ছিল ২২টি চার ও পাঁচটি ছয়। এরমধ্যে টানা তিনটি ছয় মেরেছিলেন অনিল কুম্বলেকে। এছাড়া গত শতাব্দীর একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সেরা ইনিংসের তালিকায় এটার অবস্থান ছিল ৫ নম্বরে। একদিনের ক্রিকেটে তিনি একবার টানা তিন ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। তিনি ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২০ টি সেঞ্চুরি করেছিলেন যার মধ্যে মাত্র ৩ সেঞ্চুরি ইনিংসে পাকিস্তান জয় লাভ করতে পারেনি। তিনি পাকিস্তানের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ খেলেছিলেন এবং প্রতিবারই দলের সবচাইতে বেশি রান করেছিলেন। এমন কীর্তি আর কোনও ব্যাটসম্যানেরই নেই।

Source
২৪৭ ওয়ানডেতে ৩৯.২১ গড়ে ৮ হাজার ৮২৪ রান করেছেন সাঈদ আনোয়ার। রয়েছে ২০ সেঞ্চুরি ও ৪৩ টি অর্ধশত রান। এছাড়া ৫৫ টেস্টে ৪৫.৫২ গড়ে ৪ হাজার ৫২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। টেস্টে রয়েছে ১১টি শতক এবং ২৫টি অর্ধশত রান। নব্বই দশকে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির দৌড়ে প্রতিযোগিতা চলেছে শচীন টেন্ডুলকার ও সাঈদ আনোয়ারের মধ্যে। তবে পাকিস্তানের সাবেক এ ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং চোখ জুড়িয়েছে সবার। দুর্দান্ত টাইমিং আর কবজির মোচড়ে অবিশ্বাস্য সব শট খেলতেন। তিনি শুধু ক্রিকেটেই পারদর্শী ছিলেন না। পড়াশোনাতেও ছিলেন অনেক মেধাবী ছাত্র। ১৯৮৯ সালে তিনি করাচির এনইডি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে কম্পিউটার সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।