তুলির শেষ খুদে বার্তায় আত্মহত্যার ইঙ্গিত
সাংবাদিক সোহানা পারভীন তুলি তার মুঠোফোন থেকে শেষ যে খুদে বার্তাটি পাঠিয়েছিলেন, সেখানে আত্মহত্যার ‘স্পষ্ট ইঙ্গিত’ ছিল বলে জানিয়েছেন তার স্বজনেরা। ওই বার্তায় তুলি তার প্রেমিক হিসেবে পরিচিত এক সাংবাদিককে লেখেন, ‘আজকে তুই মরার খবর পাবি।’
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, লাশ উদ্ধারের আগের দিন (১২ জুলাই) দুপুরে ওই সাংবাদিককে এক লাইনের এই এসএমএস পাঠিয়েছিলেন সোহানা তুলি।
তবে ওই সাংবাদিক পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, খুদে বার্তাটি না দেখেই তিনি ডিলিট করেছিলেন।
কিন্তু তুলির পরিবার বলছে, ‘এই বার্তা পাওয়ার পর তিনি উদ্যোগ নিলে তুলি হয়তো আত্মহত্যা করতো না। তাকে এই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরিয়ে আনা যেতো।’
আত্মহত্যার কথা বলে খুদে বার্তা পাঠানোর আগে তুলি সেই সাংবাদিককে ফোনও করেছিলেন। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি ফিরতি কলও করেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘তারা সবগুলো বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। তুলির মৃত্যুর পেছনে যদি কারও প্ররোচনা বা সম্পৃক্ততা থাকে তবে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’
বুধবার (১৩ জুলাই) হাজারীবাগ থানাধীন রায়ের বাজার শেরেবাংলা রোডের ২৯৯/৫ বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে সোহানা পারভীন তুলির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বাসাটির তত্বাবধায়কের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী-ওই সাংবাদিক মোটরসাইকেল নিয়ে তুলির বাসায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন।
ওই সাংবাদিক আর তুলির মধ্যে বেশ কয়েক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। ঘটনার আগের দিন মঙ্গলবার (১২ জুলাই) ওই সাংবাদিক নিজ মোটরসাইকেলে তুলির বাসায় যান। এক ঘণ্টা অবস্থান করে সেখান থেকে বের হন। ইতিমধ্যে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
তুলির বাড়ি যশোর সদরের বটতলা এলাকায়। ২০১৮ সাল থেকে তিনি রায়েরবাজারের শেরেবাংলানগর রোডের বাসায় ভাড়ায় থাকতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছিলেন তুলি।
তিনি দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক কালের কণ্ঠে কাজ করেছেন। সর্বশেষ ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলা ট্রিবিউনে কর্মরত ছিলেন।
সোহানা তুলি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন। সাব-এডিটর কাউন্সিলেরও সদস্য ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি নিজের ব্যবসা দাঁড় করানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।