বেহেস্তবাসীগণ হাশরের মাঠ হইতে মহা ধুমধামের সহিত বেহেস্তে প্রবেশ করিয়া বেহেস্তের
অগণিত নেয়ামত দেখিয়া অত্যন্ত আনন্দিত ও আত্মহারা হইয়া পরিবে, তহারা আপনাপন
স্ত্রীদিগকে অপরূপ বেশভূষা ও রত্নালঙ্কারে ভূষিত দেখিতে পাইবে । তদুপরি অতুলনিও রূপবতী হুরগণের রূপ-লাবণ্য দেখিয়া তাহারা আনন্দে আত্মহারা হইয়া পরিবে ।
হূরগণ সম্মন্দে আল্লাহ পাক কুরান মজিদের সূরায়ে আর-রাহমানে বলিয়াছেন---
“ ....এর মধ্যে নিম্নলিখিত নয়নাগন রহিয়াছে, ইতিপূর্বে কোন মানুষ বা জীন তাদের স্পর্শ করে নাই.....।“
প্রত্যেক বেহেস্তবাসী পুরুষকে আপনাপন স্ত্রী ছাড়াও ৭২ জন করিয়া হুর দেওয়া হইবে ,
তাহারা এতই সুন্দর ও লাবণ্যময়ী হইবে যে, ৭০ পর্দা কাপড়ের ভিতর হইতেও তাদের রূপ বিজলীর মত ফুটিয়া বাহির হইবে । তাহাদের চেহারা এইরূপ স্বচ্ছ হইবে যে, তাদ্বারা আয়নার কাজ চলিবে । তাহারা ইহার আগে অন্য কোন পুরুষের সংস্পর্শ লাভ করে নাই,
এবং নিজ নিজ নির্দিষ্ট পুরুষ ব্যতীত অন্য কাহারও দিকে ফিরিয়া তাকাইবে না ।
হুরদের রূপ-লাবণ্য সম্বন্ধে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলিয়াছেন, ---
বেহেস্তের হুরগণ এত অধিক সুন্দরী হইবে যে, তাহাদের চেহারা, বক্ষস্তল , হাঁটু প্রভৃতিতে তাহাদের স্বামীগণ স্বীয় অবয়ব সম্পূর্ণ সুস্পষ্টভাবে দেখিতে পাইবে
যদি কোন হুরের সামাণ্য অংশও আকাশ হইতে দুনিয়ার দিকে বাহির করিয়া ধরা হইত,তবে তাহার উজ্জলতায় সমগ্র দুনিয়া আলোকিত হইয়া জাইত ।
হাদিস শরিফে উল্লেখিত আছে ---বেহেস্তে এক প্রকার বিরাট ফল হইবে । বেহেস্তীগণ যখন উহা ভাঙ্গিবে, তখন উহার ভিতর হইতে বিবিধ রত্নালঙ্কারে ভূষিত অপূর্ব সুন্দরি কুমারী যুবতি বাহির হইয়া আসিয়া সেই বেহেস্তীর সেবায় আত্মনিয়োগ করিবে ।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বর্ণনা করিয়াছেন----------------
বেহেস্তবাসীগন বেহেস্তের অপরূপ শোভা সুন্দর্য দর্শন করিয়া অবাক হইয়া একই দিকে ৭০ হাজার বৎসর অপলক দৃষ্টিতে তাকাইয়া থাকিবে । ইতিমধ্যে একজন হুর আসিয়া তাহার কাঁধের উপর হাত রাখিলে সে চমকিত হইয়া তাহার দেকে ফিরিয়া তাকাইয়া এক অতুলনীও সুন্দরী রমণীকে দেখিতে পাইবে । সে এতই সুন্দরি হইবে যে,তাহার শরীরের ভীতর দিয়া সে নিজের সম্পূর্ণ অবয়ব দেখিতে পাইবে। তাহার পরিধানের অলঙ্কারের একটি ক্ষুদ্র মূর্তিও এইরূপ উজ্জ্বল হইবে যে, উহার দ্বারা সমগ্র দুনিয়া আলোকিত হইয়া যাইবে ।
হুরটি আসিয়া তাহাকে সালাম করিবে । সেই সালামের উত্তর দিয়া জিজ্ঞাসা করিবে
তুমি কে?
সে উত্তর করিবে—আল্লাহ পাক তাঁহার পাক কালাম কোরান মজিদে আপনাদিগকে যে হুরদানের অঙ্গীকার করিয়াছেন, আমি সেই হুরদের মধ্যেই একজন, আপনার খিদমত ও
সন্তষ্টি বিধান করাই আমার একমাত্র কাজ ।
হুরগণ প্রত্যেকেই ১৬ বৎসর বয়সী কুমারী সদৃশ্য হইবে এবং তাহারা অনন্তকালব্যাপী চির কুমারী থাকিবে । তাহাদের বক্ষপরি সুউচ্চ সুঢৌল স্তনদ্বয় সদা উন্নত থাকিয়া তাহেদের দেহের সৌন্দর্য শতগুণ বৃদ্ধি করিবে---
উহা কখনই অবনমিত হইবে না । ইহারা সদা নিচু দৃষ্টিসম্পন্না ও লজ্জাবন্তা হইবে । ইহাদের রূপের নিকট চন্দ্র সূর্য ম্লান ও নিষ্প্রভ হইয়া জাইবে । ইহাদের প্রত্যেকের পরিধানে সত্তর স্তর পুরু চক্ষু ঝলসানো উজ্জ্বল রক্ত বর্ণের রেশমী বস্ত্র থাকিবে, অথচ সেই সত্তর স্তর পুরু বস্ত্রের ভিতর দিয়া তাহাদের দেহের সৌন্দর্য ফুটিয়া বাহির হইবে ।
হুরদের প্রত্যেকের বক্ষের উপর নিজ নিজ স্বামীর নাম লিখিত থাকিবে । তাহাদের প্রত্যেকের অন্তরে নিজ নিজ স্বামীর প্রতি গভীর প্রেম ও ভালোবাসা থাকিবে । স্বামীগণও
তাহাদের প্রেমের গভীরতা হৃদয় দিয়া অনুভব করিবে । আল্লাহ পাক পবিত্র কোরানের সূরা আর রাহমানে বিশেষভাবে বিভিন্ন্ প্রকার হুরদের প্রশংসা ও রূপ বর্ণনা করিয়াছেন ।