নিজেকে আজ বড় অসহায় মনে হচ্ছে
কিসের অভাব যেন
হৃদয়ে নাড়াচাড়া দিয়ে উঠেছে।
কিছুই ভালো লাগছে না
না কোকিলের সূর,
না সেই মনভুলানো উত্তাল হাওয়া,
জানালার দিকে তাকিয়ে তাই
আকাশের দিকে মুখ ফিরিয়ে আছি।
কই, আকাশে তো আজ সূর্যের দেখা নেই
দূর থেকে গর্জন শুনছি মেঘের
চারিদিক তাহলে মেঘেই ঘিরে রেখেছে।
যদি একটু আলো দেখতে পেতাম
মনটা নাহয় একটু শান্তি পেত।
এইতো সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত্রি নেমে আসছে
বাগানে হাসনাহেনার গন্ধ
নাকটি যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
যে গন্ধ একসময় আমার হৃদয়ে
ভালোবাসার ছোঁয়া লাগিয়ে যেত
কিন্তু আজ বিরক্তিকর মাছের কাঁটা
যেন গলা আটকে রেখেছে।
পৃথিবীটা আজ সরু হয়ে আসছে
দম বন্ধ হওয়ার উপμম।
বাইরে দূর্বাঘাসের উপর
শিশিরের বিন্দু পড়তে শুরু করেছে।
যে শিশিরের ছোঁয়ায়
আমার শরীরে শিহরন জাগত
জীবনে যেন নতুন অধ্যায় সূচিত হতো।
কিন্তু আজ আর সেই শিশিরবিন্দুতে
পা রাখতে ইচ্ছে করছে না।
কার ভালো লাগে একা একা
সেই অন্ধকারে শিশিরে পা ভিজাতে?
পা কর্দমাক্ত হয়ে যদি পিছলে পড়ে যাই
কে আমাকে হাত ধরে উঠিয়ে দেবে?
যে হাতের স্পর্শে আমি হারিয়ে যেতাম
কোনো এক স্বর্গপুরে।
আজ আর কিছুই ভালো লাগছে না
পড়ার টেবিলেও মন বসছে না।
ডায়রির পাতা খুলে
কিছু লিখতে হাত বাড়ালাম
কিন্তু কলম আর চলছে না।
হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে
চোখদুটি লাল হয়ে গেছে,
আর একটু হলেই অঝোর ধারায়
বৃষ্টি নামবে হৃদয়ের আকাশে।
জানালা দিয়ে হঠাৎ চোখ পড়ল আকাশের দিকে
কী যেন মিটি মিটি করে জ্বলছে,
হয়তো মেঘের ফাকে চাঁদ উকি দিচ্ছে পৃথিবীর দিকে।
হৃদয়ে প্রশান্তির ছোঁয়া
আধো আলো, আধো ছায়ার মতো
ফিরে আসতে শুরু করেছে
নতুন কোনো আশার আলো।
কিন্তু সবই স্বপড়ব
যে স্বপড়বই বাঁচিয়ে রেখেছে আমায়।
হয়তো সে স্বপড়ব আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যাবে
হৃদয়ের রক্তক্ষরণে।
তবুও স্বপড়ব নিয়েই তাকিয়ে আছি
আকাশের দিকে।
কখন চাঁদের দেখা মিলবে ঐ দূর আকাশে
আর মেঘগুলো সব ঝরে পড়ে
ভিজিয়ে যাবে আমার সেই শুকনো হৃদয়টাকে।