
বন্ধুত্বের সেতু
এক গ্রামে ছিল দুই বন্ধু, রাহুল ও সোহান। তারা ছোটবেলা থেকেই একসাথে খেলাধুলা করত, পড়াশোনা করত এবং একে অপরের সুখ-দুঃখে পাশে থাকত। কিন্তু তাদের বন্ধুত্বের একটি বিশেষত্ব ছিল—তারা দুজনেই সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্মের। রাহুল হিন্দু এবং সোহান মুসলিম।
গ্রামের মানুষজন তাদের বন্ধুত্বকে ভালো চোখে দেখতো না। তারা বলতো, "এরা তো আলাদা ধর্মের, এদের বন্ধুত্ব কখনো টিকবে না।" কিন্তু রাহুল ও সোহানের বন্ধুত্ব ছিল অটুট। তারা একে অপরের ধর্ম ও সংস্কৃতিকে সম্মান করত এবং সবসময় একে অপরের পাশে দাঁড়াত।
একদিন গ্রামে একটি বড় উৎসবের আয়োজন করা হলো। গ্রামের প্রধান সিদ্ধান্ত নিলেন, উৎসবে একটি সেতু তৈরি করা হবে, যা গ্রামের দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক হবে। রাহুল ও সোহান সেই সেতু নির্মাণের কাজে হাত লাগাল। তারা একসাথে কাজ করতে লাগল, এবং তাদের বন্ধুত্বের শক্তি সেতুর নির্মাণে নতুন আশা যোগ করল।
কিন্তু সেতু নির্মাণের সময় কিছু সমস্যা দেখা দিল। গ্রামের কিছু মানুষ সেতুর বিরোধিতা করতে লাগল। তারা বলল, "এটি আমাদের ধর্মের বিরুদ্ধে!" কিন্তু রাহুল ও সোহান তাদের বোঝানোর চেষ্টা করল যে, এই সেতু শুধুমাত্র একটি নির্মাণ নয়, এটি তাদের বন্ধুত্বের প্রতীক।
শেষ পর্যন্ত, রাহুল ও সোহানের প্রচেষ্টায় সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হলো। উৎসবের দিন গ্রামে সবাই জড়ো হলো। সেতুর উদ্বোধন করতে গিয়ে রাহুল বলল, "এটি আমাদের বন্ধুত্বের সেতু, যা আমাদের একসাথে বেঁধে রাখবে।" সোহান যোগ করল, "এটি আমাদের ধর্মের সীমানা অতিক্রম করে, ভালোবাসার একটি উদাহরণ।"
গ্রামের মানুষজন ধীরে ধীরে বুঝতে পারল, বন্ধুত্বের শক্তি ধর্মের সীমানা অতিক্রম করতে পারে। তারা একসাথে সেতু পার হলো, এবং সবার মধ্যে নতুন করে বন্ধুত্বের সেতু তৈরি হলো।
সেতুটি শুধু একটি নির্মাণ নয়, বরং এটি ছিল রাহুল ও সোহানের বন্ধুত্বের একটি স্মারক, যা তাদের গ্রামে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল।
এভাবেই বন্ধুত্বের সেতু তাদের জীবনকে বদলে দিল এবং গ্রামে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit