রিনির সঙ্গে ডিভোর্সের পর বিয়ের প্রতি ঘৃনা জন্মে গিয়েছিল। দুজনে এম.বিয়ে করতে গিয়ে বিয়ে আর তারপরে পুনেতেই সেটেল্ড করি। রিনি ভীষনরকম আ্যাম্বিসাস। কোনভাবেই মানিয়ে নিতে পারল না। প্রতিদিন অশান্তি, ঝগড়া লেগেই থাকত। আমি চলে এলাম ঢাকায় । সেই ডিভোর্সের নোটিস পাঠাল; এমনকি আমার মেয়েকেও আমার সঙ্গে থাকতে দিল না। প্রথমে রাগ হলেও পরে সবই মেনে নিলাম। কারণ ব্যাচেলারস’ লাইফে আমি ততদিনে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। ছয়দিন কাজের মধ্যে ডুবে থাকি আর উইকেণ্ডে বুজ পার্টি, ড্যান্স বার, ডিস্কোথেক; মজায় আছি।
এরই মধ্যে সম্পাকে খুঁজে পেলাম। বলতে গেলে সেই আমাকে খুঁজে নিল। সুন্দর,সেক্সী মেয়ে আমার ভাল লাগে, তবে নিজের থেকে যেচে প্রেম নিবেদন? ওসব পোষায় না। যাই হোক সম্পার সঙ্গে সম্পর্কটা বেশ জমে উঠল। সম্পা বিছানাতেও বেশ সাবলীল। রিনি আমাকে যা দিতে পারেনি, সম্পা সবই দিল। স্ত্রী না হয়েও স্ত্রী’য়ের ভূমিকা পালন করতে থাকল। কাজের মাসী না এলে রান্না করা কিংবা নোংরা জামাকাপড় ওয়াশ করে আয়রন করা। আমি যখন যেভাবে ওকে চাইতাম, পেতাম।
ও ভালবেসে ফেলছিল আমায়। ক’দিন যোগাযোগ না করলেই অস্থির হয়ে যেত। অশনি সঙ্কেত দেখলাম আমি। ‘ও কি বিয়ে করতে চায়? নো ওয়ে…আবার একটা ? আবার গণ্ডোগোল…অসম্ভব…এই বেশ আছি…’ তাই একদিন বলেই দিলাম,
“দেখ, সম্পা কারোর ওপর ইমোশানালি ডিপেন্ডেন্ড হয়ো না...কই আমি তো নই?” ও মুখে কিছু বলে নি, তাকিয়েছিল;ওর চোখ ছলছল করছিল, আমি দেখেও দেখলাম না। একদিন যখন আমি ওকে আদর করতে ব্যস্ত, বোকার মত বলে উঠল, “আমি তোমার সঙ্গে কেন থাকতে পারি না?”
“আমার কি কোন ঠিক আছে, যে কোনদিন চলে যাব বিদেশে…”
“ অপেক্ষা করব তোমার জন্যে…”
“গেলে আর ফিরবই না…”
সম্পা আর কথা বলল না। আমার রোমশ বুকে মুখ গুঁজল; ওর চোখের জলে আমার বুক ভিজে গেল। বুঝলাম ও কাঁদছে। কিন্তু আমি কিইবা করতে পারি?
এরপর থেকে ও আর বায়না করত না। ফোন না করলেও, মেসেজ না করলেও কোন অভিযোগ করত না। কয়েক মাস মিট করতে পারি নি তাও মেনে নিয়েছিল। কিন্তু আমি যখনই ওকে যেমনভাবে চেয়েছি, ও নিজেকে উজাড় করে দিত। এমনকি সেদিনও…যেদিন আমি গ্রুপ-সেক্স করতে চাইলাম।
“আমি যে তোমায় ভালবাসি কৌশিক; অন্য কেউ তোমার সামনে আমার সঙ্গে…তোমার খারাপ লাগবে না?”
“ওহ্! ডোন্ট বি সো ইমপালসিভ সম্পা…ইটস্ ওনলি আ ফান!”
এতটাই ভালবাসত সে যে আমার এই ইচ্ছেটাও অপুর্ণ রাখল না। আমরা বন্ধুরা যখন যৌন উন্মাদনাকে শান্ত করে ক্লান্ত, তখন ও ওয়াশ-রুমে কল খুলে বসেছিল; কাঁদছিল। ভালবেসেছিল যে!
একমাস পরে আড্ডায় এল; বিয়ের কার্ড হাতে করে। আমি অবাক। “ তুমি বিয়ে করছো?” তাচ্ছিল্য করে প্রশ্ন করলাম। শান্ত স্বরে সে উত্তর দিল, “ মা চাইছেন…” প্রথমে আমার খুব রাগ হল। তারপর শরীরে, মনে জ্বালা ধরল। মনে হল আমার জিনিষটাকে কেউ ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। একদিন গিয়ে ওর হবু বরকে দেখেও এলাম। ‘আমার থেকে স্মার্ট নয়।’ বিয়ের দিন যত এগিয়ে আসতে থাকল আমার জ্বালা যন্ত্রনায় পরিণত হতে থাকল। মনে হল, হ্যাঁ, প্রথমবার মনে হল যে আমি ওকে ছাড়া বাঁচব না।
বিয়ের দিন বন্ধুদের নিয়ে ছুটে গেলাম ওর বাড়িতে। ফোন পেয়ে ও নীচে নেমে এল। গরদের লাল পাড় শাড়িতে ওকে অপরূপা লাগছিল। বললাম, “ এ বিয়ে ভেঙে দাও…আমি তোমায় বিয়ে করব…”
“তা আর হবার নয়।” ফিরে আসছিলাম, পিছন থেকে ও আমার বন্ধুকে ডেকে বলল, “ স্বান্তনু…নেক্সট মান্থে আমরা সুইৎজারল্যান্ড যাচ্ছি…ভিসাটা হয়েছে কিনা চেক করে দেবে?”
বিয়ের পর সে ভাল আছে কিনা জানি না, তবে আমি নিশ্চিত ভাল নেই; জীবন্ত লাশ হয়ে বেঁচে আছি।
বর্তমান যা ঘটে তাই এই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গল্পটা লেখা হয়েছে ছেলে এবং মেয়ে উভয়কে উদ্দেশ্য করে ।
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!