এই যে নবাব সাহেব।
তুমি আর কত ঘুমাবে। কত সকাল হইছে একবার উঠে দেখ।
ওই তুমি এতো ডাকাডাকি কর কেন।
আজ তো অফিস বন্ধ। একটু শান্তিতে ঘুমাই।
মামার বাড়ির আবদার। ঘুমানো চলবে না। বাসায় আনাজপাতি কিছু নাই। যাও বাজার করে নিয়ে আসো।
আচ্ছা তুমি কখনও মানুষ হবে না। সারাজীবন এভাবে ওই রয়ে যাবে। সকাল হলেই শুধু ডাকাডাকি।
শুনো কম কথা বলে উঠো।
সুস্মিতা বলতে লাগলো
বাবা তুমি আমাকে কার কাছে বিয়া দিলা।
কেন কি হয়েছে গো?
কি হয়েছে আবার বলছ?
আমি ঠিক মতো ঘুমাতে পারি না। ভালো খাট নাই। বাসায় ভালো চেয়ার টেবিল নাই। আমি ঠিক মতো খেতে পারি না।
হা রে কি কষ্ট।
সপ্তাহে কয় বার বাজার করি তুমি বলতো?
আর বাসায় এতো ভালো ভালো খাট আছে। চেয়ার টেবিল আছে। আর কি লাগে তোমার?
পাশের বাসার আপুর চেয়ার টেবিল দেখছ?
কত সুন্দর। আমাদের ওই রকম চেয়ার টেবিল বাসায় আনতে হবে।
শুনো আমার বেতন মাএ ২০ হাজার টাকা। তা দিয়ে কোনো মতে আমাদের সংসার খরছ চলে। আর তুমি বলছ এসব আনতে। জানো এসবের দাম কত টাকা?
আমি এতো কিছু বুঝি না। আমাদের বাসায় এ সব কিছু চাই।
আর শুন বাজার করতে যাও।
আগে কিছু নাস্তা করি।
না ।
বাজার থেকে এসে নাস্তা করবে।
এই তুমি কি আমাকে না খাইয়ে মারতে চাও নাকি?
জ্বী না।
তুমি এমন কর কেন? তুমি আমার কোনো কথা ওই শুনো না। যাও বাজারও করতে হবে না।
আরে যাচ্ছি বাবা।
.
এই যে শুনছো?
বাজার নেও। আমি গোসল করতে গেলাম। তুমি আমার জন্য খাবার রেডি করে টেবিলের মধ্যে রাখো।
.
সুস্মিতা বাজারের ব্যাগে বাজার দেখার পর রাগে গজগজ করতে করতে রান্নাঘরে গেল।
গিয়ে রাগের মাথায় নাস্তার মধ্যে লবণ বেশি দিল। তারপর টেবিলের মধ্যে নাস্তা রেখে গেল।
ওই তুমি এতো ডাকাডাকি কর কেন।
আজ তো অফিস বন্ধ। একটু শান্তিতে ঘুমাই।
>> মামার বাড়ির আবদার। ঘুমানো চলবে না। বাসায় আনাজপাতি কিছু নাই। যাও বাজার করে নিয়ে আসো।
>> আচ্ছা তুমি কখনও মানুষ হবে না। সারাজীবন এভাবে ওই রয়ে যাবে। সকাল হলেই শুধু ডাকাডাকি।
>> শুনো কম কথা বলে উঠো।
সুস্মিতা বলতে লাগলো
বাবা তুমি আমাকে কার কাছে বিয়া দিলা।
>> কেন কি হয়েছে গো?
>> কি হয়েছে আবার বলছ?
আমি ঠিক মতো ঘুমাতে পারি না। ভালো খাট নাই। বাসায় ভালো চেয়ার টেবিল নাই। আমি ঠিক মতো খেতে পারি না।
>> হা রে কি কষ্ট।
সপ্তাহে কয় বার বাজার করি তুমি বলতো?
আর বাসায় এতো ভালো ভালো খাট আছে। চেয়ার টেবিল আছে। আর কি লাগে তোমার?
>> পাশের বাসার আপুর চেয়ার টেবিল দেখছ?
কত সুন্দর। আমাদের ওই রকম চেয়ার টেবিল বাসায় আনতে হবে।
>> শুনো আমার বেতন মাএ ২০ হাজার টাকা। তা দিয়ে কোনো মতে আমাদের সংসার খরছ চলে। আর তুমি বলছ এসব আনতে। জানো এসবের দাম কত টাকা?
>> আমি এতো কিছু বুঝি না। আমাদের বাসায় এ সব কিছু চাই।
আর শুন বাজার করতে যাও।
>> আগে কিছু নাস্তা করি।
>> না ।
বাজার থেকে এসে নাস্তা করবে।
>> এই তুমি কি আমাকে না খাইয়ে মারতে চাও নাকি?
>> জ্বী না।
তুমি এমন কর কেন? তুমি আমার কোনো কথা ওই শুনো না। যাও বাজারও করতে হবে না।
>> আরে যাচ্ছি বাবা।
.
>> এই যে শুনছো?
বাজার নেও। আমি গোসল করতে গেলাম। তুমি আমার জন্য খাবার রেডি করে টেবিলের মধ্যে রাখো।
.
সুস্মিতা বাজারের ব্যাগে বাজার দেখার পর রাগে গজগজ করতে করতে রান্নাঘরে গেল।
গিয়ে রাগের মাথায় নাস্তার মধ্যে লবণ বেশি দিল। তারপর টেবিলের মধ্যে নাস্তা রেখে গেল।
আবির কিছু সময় পর টেবিলে মধ্যে বসে নাস্তা করতে শুরু করল। কিন্তু আবির খাবারের মধ্যে বেশি তিতা থাকার পরও সব খাবার খেয়ে ফেলল। কারণ আবির জানে টাকা রুজি করা কত কঠিন। এতো সহজ নয় টাকা রুজি করা। যারা অনেক টাকার মালিক তারাও জানে। টাকা কি জিনিষ।
আবির এসব চিন্তা বাদ দিয়ে একটা সিগারেট নিয়ে ছাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে সিগারেট টেনে যাচ্ছে। কিন্তু সুস্মিতা কেন এমন করছে আবির কিছু বুঝতে পারল না।
তাই আবির ছাদে কিছু সময় থাকার পর সুস্মিতার কাছে গেল। গিয়ে জিজ্ঞাস করল...
সুস্মিতা তুমি এমন করতাছ কেন?
খাবারের মধ্যে লবণ বেশি দিচ্ছ। ঠিক মতো কথা বলছো না।
আমি তোমার সাথে কথা কেন বলব?
তুমি আমার কোনো কথা ওই শুনো না।
এমন কি আজ কি ছিল তাও তুমি জানো না।
আরে বাবা আজ কি ছিল তা তো তুমি বলবে নাকি?
আমি কেন বলব?
তুমি জানো না। তুমি জানবে কেন?
আমি কে তোমার। আমি একটা কাজের মেয়ে। সারাদিন আমি শুধু রান্নাবান্না করি। এইটাই আমার কাজ। তোমার জামাকাপড় পরিষ্কার করা। তোমার জন্য সকালের নাস্তা তৈরি করা। নাস্তা তৈরি করে তোমাকে ঘুম থেকে তোলাও আমার কাজ।
এই একটাই মেয়েদের কাজ।
কিছু হলেই কান্না করতে করতে চোখের পানি আর নাকের পানি এক হয়ে যায়। আরে বাবা আমি সারাদিন কাজের চাপে থাকি তাই মনে নেই আজ কি ছিল।
প্লিজ বলো না?
আজ কি ছিল।
আজ আমাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী ছিল।
যাও আমার কাছ থেকে যাও। আমি কাল আমার বাবার বাড়ি চলে যাব। যে মানুষ পরিবারের মানুষের কথা চিন্তা করে না তার সাথে থাকা যায় না।
ও বাবা। এ কি বলছো।
তুমি ছাড়া আমার কে আছে। তুমি ওই তো আমার সব চাওয়া পাওয়া। তোমাকে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখি। আর তুমি বলছ আমাকে ছেড়ে যাবে।
আমি যাব ওই তো।
তুমি আমাকে কত টুকু ভালোবাস তা আমি জানি। আমার জন্য কাল বাসের টিকেট কেটে রেখো। আমি কাল ওই চলে যাব। আমার এ রকম ভালোবাসার কোনো দরকার নাই।
আমি তোমাকে ভালোবাসি না বুঝি?
আমি সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
প্লিজ যেও না সুস্মিতা। আমি একা হয়ে যাব।
.
কোনো কথা না বলে সুস্মিতা চলে গেল।
আবির বুঝতে পারল না। এ সাধারণ বিষয় নিয়ে সুস্মিতা এমন করল।
.
সকাল বেলা আবির দেখতে পেল কেউ তাকে ডাকছে না। অনেক সকাল হয়ে গেছে প্রায় ১০ টা। অফিসের অনেক দেরি হয়ে গেল। কিন্তু সুস্মিতা কোথায়?
সুস্মিতাকে অনেক ডাকাডাকি করার পর আবির দেখতে পেল টেবিলের মধ্যে একটা কাগজ। আবির সেটা হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করল। কাগজের মধ্যে লেখা তুমি আমার কোনো ইচ্ছা ওই পূরণ কর নি।
তুমি যদি নতুন চেয়ার টেবিল এসব কিছু নতুন কিনে না আনো তাইলে আমি বাসায় যাব না।
.
আবির সুস্মিতার ব্যবহারে মনে মনে অনেক কষ্ট পায়। আবির প্রত্যেকদিন দিন অফিস থেকে আসার পর সুস্মিতার জন্য ফুল নিয়ে আসতো। আইসক্রিম নিয়ে আসতো। কিন্তু এসব কিছুই ভালোবাসার অংশ ছিল না। আবির এখন বুঝতে পারল। কাকে এতো ভালোবাসতো। তাই আবির সব কিছু ভুলে যায়। সব স্মৃতি মুছে ফেলে। সুস্মিতাকে শাস্তি পেতে হবে।
.
আবির সুস্মিতাকে ফোন দিয়ে বলে আমি বাসার সব কিছু পরিবর্তন করেছে। তুমি এবার চলে আসো।
সুস্মিতা বাসায় এসে দেখে সব কিছু নতুন। সুস্মিতা অনেক খুশি। সুস্মিতা আবির আসতেই আবির কে গিয়ে জড়িয়ে ধরে। কিন্তু আবির কোনো কিছু না বলে তাকে ছাড়িয়ে তার রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ে।
সকাল বেলা আবির নাস্তা না করেই অফিস চলে যায়। সুস্মিতা ফোন দিলে আবির ফোন ধরে না। ফোন ধরলে শুধু উত্তর দেয়। তারপর রেখে দেয়।
.
রাতে আবির অফিস থেকে কালি হাতে বাসায় আসে। কিন্তু সুস্মিতা ভাবলো আবির তার জন্য আইসক্রিম ও ফুল নিয়ে এসেছে কিন্তু তার কিছু ওই আবির আনে নি।
সুস্মিতা মন খারাপ করে বলে...
তুমি আমার জন্য ফুল ও আইসক্রিম আনো নি কেন?
আর তুমি আমাকে এড়িয়ে চলছ কেন?
কই না তো।
আর ফুল ও আইসক্রিম আনতে মনে নেই।
অনেক ক্লান্ত লাগছিল তাই তাড়াতাড়ি বাসায় চলে এসেছি।
আচ্ছা তুমি খাবারের টেবিলে বসো আমি তোমার জন্য খাবার রেডি করতাছি।
আজ কিন্তু তোমার প্রিয় খাবার রান্না করছি।
আমি বাহিরে খেয়ে এসেছি। এখন ডিনার করব না। তুমি খেয়ে নিও।
তুমি বাহিরে খেয়ে এসেছো কেন ?
কোনো দিন তো বাহিরে খেয়ে আসো না।
এক বন্ধুর সাথে দেখা হয়েছিল। সে অনেক জোরাজোরি করে তাই খেয়ে এসেছি।
ও আচ্ছা।
.
এভাবে প্রায় ৫ দিন চলতে থাকে।
একদিন আবির অফিসের কাজ করতাছে। এমন সময় আবির দেখতে পেল সুস্মিতা কান্না করতাছে। সুস্মিতা কাছে গিয়ে আবির বসলো। আবির জিজ্ঞাস করল কান্না কর কেন?
তাতে তোমার কি?
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!