মায়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির ইয়াংগুনের বাড়িতে এক ব্যক্তি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে।
গত বৃহস্পতিবার হামলার এ ঘটনাটি ঘটেছে।
সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি’র (এনএলডি) একজন কর্তৃপক্ষ ফেসবুকে জানান, এ হামলায় খুব সামান্যই ক্ষয়ক্ষতি হয়ছে।
এছাড়া এনএলডি এর সেই কর্তৃপক্ষ বলেছেন,”কোনোকিছুই নষ্ট হয়নি বা পুড়ে যায়নি। আমাদের সম্মানিত নিরাপত্তা বাহিনী সেই দুর্বৃত্তকে গ্রেফতার করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।”
সু চির মুখপাত্র ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করলেও আর কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি। এমনকি হামলার সময় সু চি বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন কিনা, তা-ও জানাতে সম্মত হননি। তবে সন্দেহভাজন হামলাকারীকে ৪০ বছর বয়স্ক কালো চুলের এক ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ফেসবুকে তিনি একটি ছবিও দিয়েছেন, যেখানে গোলাপি টি-শার্ট ও নীল লুঙ্গি পরিহিত এক ব্যক্তিকে সম্ভাব্য হামলাকারী বলে মনে করা হচ্ছে।
সু চি মায়ানমারের সাবেক সামরিক শাসকের দ্বারা ইয়াংগুনের সেই বাড়িতে ১৫ বছর ধরে গৃহবন্দী ছিলেন। ২০১০ সালে তিনি মুক্তি পান। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে তার দল এনএলডি ভোটে জয়ী হয়ে ক্ষমতা লাভ করলে মিয়ানমারে কয়েক দশক পরে প্রথম গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
তবে গণতান্ত্রিক এই নেত্রী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নিধনের ব্যাপারে বিশ্ববাসীর কাছে সমালোচিত হন। দেশটির রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনী মুসলিম রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ চালালে প্রায় সাত লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় গ্রহণ করে। গত সপ্তাহে রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট সমাধানে সু চির গঠিত উপদেষ্টা প্যানেল থেকে বিল রিচার্ডসনের পদত্যাগ তার জন্য সম্প্রতি সবচেয়ে বড় ধিক্কার ছিল।
তবে মায়ানমারের অনেকেই সেখানকার রোহিঙ্গাদের বাঙালি শরণার্থী বলে মনে করে। মায়ানমারের অধিকাংশ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠী সু চি কে নিজেদের আদর্শ নেত্রী হিসেবে বিবেচনা করে।
হামলার সময় তিনি নপিডোতে সংসদে তার দলের ক্ষমতাগ্রহণের দু’বছর পূর্ণ হওয়ার সুবাদে ভাষণ দিতে গিয়েছিলেন। এ ঘটনায় এখনও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। হামলার ঘটনাটি শীর্ষস্থানীয় মুসলিম আইনজীবী, সু চির উপদেষ্টা কো নি হত্যার ঠিক এক বছর পরে সংগঠিত হলো। এ হামলায় দেশটির মুসলিম সম্প্রদায় এবং ক্ষমতাসীন দল আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।