আমার নিজের লেখা গল্প, কবিতা এবং আমার নিজের করা ফটোগ্রাফি।।। পর্ব- 104

in photography •  16 days ago 
আসসালামুআলাইকুম

চাকরি খুঁজে পাবে না। কী করবে বুঝতে পারছিল না রঞ্জনা। উপাসনার এত বিত্ত সত্ত্বেও এমন বন্ধুর মতো ব্যবহার ভাল লাগছিল, কিন্তু কোথাও যেন একটু অস্বস্তিও থেকে যাচ্ছিল। সেই অস্বস্তিটা ঠিক কী তা বুঝতে পারছিল না রঞ্জনা।
আজ যদি সুবীর তার সঙ্গে দেখা করতে আসত তা হলে উপাসনার সঙ্গে দেখা হত না। স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারা ওর কাছে বড় হয়ে গেল। ভগবান যা করেন তা যদি মঙ্গলের জন্য হয় তা হলে এটাই তার কপালে ছিল। এই চাকরিটা নিলে সুবীরকে খুব জব্দ করা যাবে। পুরনো হয়ে যাওয়া স্ত্রী যে বাড়ির আর পাঁচটা আসবাবের মতো নয় তা ওকে বুঝিয়ে দেওয়া যাবে। এই সময় গাড়ি পৌঁছে গেল তার বাপের বাড়ির ঠিকানায়।
বাড়িতে ঢোকামাত্র মা বলল, 'হ্যাঁ রে, কোথায় গিয়েছিলি?' 'কেন? বেশি রাত তো হয়নি।' রঞ্জনা গম্ভীর গলায় বলল।
'সুবীর এসেছিল। অনেকক্ষণ বসে থেকে চলে গেল।'
'সে কী। ওর তো আসার কথা নয়।'
'কী কথার ছিরি! তোর সঙ্গে দেখা করতে আগাম জানিয়ে আসবে নাকি!'
'ও বলেছিল আজ ওর সময় নেই। কিছু বলেছে?'

1730809783866.jpg

For work I use:


মোবাইল
Redmi Note 11s
ফটোগ্রাফার
@taskiaakther
লোকেশন
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবি তোলা
বাহিরে

'না। তবে ওকে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছিল।'
ধন্দে পড়ল রঞ্জনা। যে সুবীর বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারবে বলে তার সঙ্গে দেখা করতে রাজি হল না সে হঠাৎ বাড়িতে চলে এল। কোনও বিপদ হয়নি তো যা ও মাকে বলতে পারেনি। ফোন করে জানার উপায় নেই, রঞ্জনা হঠাৎ মন পালটাল।
বলল, 'মা, আমি ফিরে যাচ্ছি।'
শুনে মা বলল, 'সে কী! এত রাত্রে ফিরে যাবি?' 'এত রাত কোথায়? পাতালরেল পেয়ে যাব।'
মা আপত্তি করছিল। তেমন হলে সুবীর নিশ্চয়ই বলত। কিন্তু রঞ্জনার কানে সেসব যুক্তি ঢুকছিল না। শেষ পর্যন্ত রিকশা নিয়ে মা তাকে পাতালরেল স্টেশনে পৌছে দিল। শেষ ট্রেনটা ধরতে পারল রঞ্জনা। সুবীরের পরিবর্তন জানার পর সে আর বাপের বাড়িতে আজ রাত্রে থাকতে পারে না।
ওর উপর আর কোনও রাগ নেই তার। দরজা খুললেন শ্বশুরমশাই, 'এ কী? তুমি? এসো এসো।'
ভিতরে ঢোকামাত্র শাশুড়ি এগিয়ে এলেন, 'কী হয়েছে রঞ্জনা?
'কিছু হয়নি তো?' রঞ্জনার হঠাৎ খুব লজ্জা হচ্ছিল।

1730809783892.jpg

For work I use:


মোবাইল
Redmi Note 11s
ফটোগ্রাফার
@taskiaakther
লোকেশন
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবি তোলা
বাহিরে

'খোকা বলল তুমি ক'দিন ওখানে থাকবে, এইসময় হঠাৎ চলে এলে! কোনও সমস্যা হয়নি তো।
শ্বশুরমশাই বললেন।
'না। চলে এলাম।'
'বেশ করেছ। হাত-মুখ ধুয়ে নাও। খোকা তা এখনও বাড়ি ফেরেনি। এত রাত তো সচরাচর করে না। অবশ্য সকালে বেরোবার সময় বলে গিয়েছিল আজ ফিরতে দেরি হবে। খাবার বাড়ছিলাম,
হাত-মুখ ধুয়ে তুমিও খেয়ে নাও।' 'আমি না হয় পরে খাব মা।' রঞ্জনা নিজের ঘরে চলে গেল। জানলা বন্ধ, ঘরে গুমোট গরম। জানলা খুলে দিল, ফ্যান চালিয়ে দিয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিল সে। চোখ বন্ধ করে পড়ে রইল কিছুক্ষণ।
কেন এল সে? মিছিমিছি। বিকেলে ফোন রেখে দেওয়ায় সুবীর বোধহয় ভয় পেয়ে স্রেফ ডিউটি দেওয়ার জন্য তার খোঁজ নিয়েছিল। দেখা না পেয়ে আবার স্বাধীন পাখির মতো উড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। আর সে বোকার মতো ওর জন্য এখানে ছুটে এল। হঠাৎ খুব কান্না পেল রঞ্জনার।
'এ কী! জামাকাপড় ছাড়নি।'
তিতিরের গলা পেয়ে কান্নাটাকে গিলতে চেষ্টা করল রঞ্জনা। কোনওমতে সেটা পেরে মাথা নাড়ল, 'হু।'
'কী হয়েছে তোমার? শরীর খারাপ?' 'না তো!'
তিতির পাশে এসে বসল, 'তোমার কিছু একটা হয়েছে।'
উঠে বসল রঞ্জনা। কায়দা করে চোখ মুখে নিল। তারপর চেষ্টা করল হাসতে, 'খেয়েছ?'

ধন্যবাদ।আল্লাহ হাফেজ।
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!