'আমি সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট যাই হই না কেন, আসল সমস্যাটা দিক তোমার । ছেলেরা চাকরি তার আমি সঙ্গ দিয়ে তাদের কর্তব্য শেষ করে ফেলে। কিন্তু বাড়িতে ফিরে সংসারের হরাম। তারা করে, টাকা এনে দিয়েবে ছেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে, আবার বাড়িতে ফিরে সংসারের হাঁড়ি ঠেলবো বাইরে গিয়ে কাজল হয়ে যাবে। সেখানে কিন্তু ছেলেরা পাশে বারে দাঁড়ানো আর আর এই করতে করতে একসময় যৌবন চলে যাবে, বুড়ো হয়ে যাবে। শুধু সংসার সামলানো আর টাকা রোজগার করতে একস মেশিনী হয়ে থাকতে হবে। এসব ভাবো, ভেবে যদি ইচ্ছে হয় চাকরি করো।' শাশুড়ি
লেমাডর হাসলেন, 'কথাগুলো মিথ্যে বলছ না, কিন্তু এখন জিনিসপত্রের যা দাম বেড়ে গেছে, একার রোজগারে সংসার চালানো মুশকিল। তাই না?' বইয়ে মুশকিল। কিন্তু বউমা যদি চাকরি করতে যায় তা হলে পাঁচ হাজার টাকা রোজগার করবে।এই যাওয়া-আসা ইত্যাদির জন্য কমপক্ষে মাসে হাজার টাকা খরচ হবে। তা হলে সংসার
পাবে চার হাজার।' শাশুড়ি হিসেব করছিলেন। 'কম কী।' তিতির মন্তব্য করল।
শাশুড়ি বললেন, 'যদি ওরা আলাদা থাকত তা হলে একটা দিনরাত্রের লোক রাখতে হত। আজকাল সাত-আটশো টাকার নীচে লোক পাওয়া যাবে না। তার চারবেলা খাওয়ার পিছনে কমসে কম বারোশো টাকা বেরিয়ে যাবে। তার মানে দু' হাজার চলে গেলে হাতে রইল, দু'হাজার। তাই তো?'
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
শ্বশুর বললেন, 'ঠিক।'
শাশুড়ি বললেন, 'দেখবি সংসার করতে গেলে মানুষ যেমন আয় তেমন খরচ করে। আমার কম
আয়, একটা ছোট ফ্রিজ দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছি। যেই বউমা পাঁচ হাজার টাকা রোজগার করবে তখনই মনে হবে বড় ফ্রিজ দরকার, বড় টিভি দরকার, ওভেন না হলে চলছে না। মনে হবেই। ব্যাস,
টাকাটা খরচ হয়ে যাবে কিন্তু, কিছুই জমবে না।' তিতির বলল, 'বাঃ, ওগুলো বাড়িতে এলে তো উপকার হবে।'
'হবে। কিন্তু কিছুদিন পরে মনে হবে ওভেনের চেয়ে মাইক্রোওভেন হলে ভাল হয়। একটা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার কেনা দরকার। চাহিদা বাড়তেই থাকবে। আর এসব করতে ওকে হিমসিম খেতে হবে। আর যদি নাও কেনে, তা হলে সংসারকে দিতে পারবে মাত্র দু' হাজার টাকা। এখন তোমরা
ভাব এত পরিশ্রমের দাম দু' হাজার কিনা।' শাশুড়ি বললেন। 'তা হলে তোমার কথা মানতে গেলে চাকরি করাই যায় না।' তিতির বলল, 'চিরকাল স্বামীর
হুকুম মেনেই চলতে হবে।'
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
'না। চাকরি নিশ্চয়ই করতে পারো। স্বাধীনভাবে রোজগার করো, আত্মসম্মন নিয়ে থাকো, কিন্তু
দেবাদেবীতে সন্তুষ্ট থাকো, আর কোনও প্রাণ পৃথিবীতে এনে নিজেদের ঝামেলা বাড়িয়ো না।'
শ্বশুর চা শেষ করলেন, 'তুমি বলতে চাইছ, চাকরি করা মেয়েদের মা হওয়া উচিত নয়। খুব
কঠিন পরামর্শ। দ্যাখো মা, কাগজটা দিয়ে গেছে কিনা, বাজারে যেতে হবে।'
রঞ্জনা এতক্ষণ চুপচাপ শুনে যাচ্ছিল, এবার বলল, 'আজ আপনাকে বাজারে যেতে হবে না।
ওকে ডেকে দিচ্ছি, ও যাবে।'
'ও যখন বাজারে যাবে তখন বাতিল জিনিস পড়ে থাকবে। তা ছাড়া খোকা কি কখনও বাজারে
গিয়েছে? তোমার শাশুড়ির পছন্দই হবে না।'
'যায়নি বলে যে কখনও যাবে না, এটা তো হতে পারে না। আমি ডেকে দিচ্ছি।' রঞ্জনা উঠে পড়ল। চায়ের কাপ-ডিশ তুলতে যাচ্ছিল সে, শাশুড়ি বাধা দিল, 'থাক, এখনই কালুর মা এসে যাবে। ওই তুলবে।'
ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত স্বামীর দিকে তাকাল রঞ্জনা। এত নিশ্চিন্তে কোনও মানুষ ঘুমাতে পারে তা সুবীরকে না দেখলে জানত না। বড় খাটের একটা পাশে পাশবালিশ আঁকড়ে ঘুমাচ্ছে এখন। জানলার পরদা সরিয়ে দিতে একঝাঁক রোদ বিছানায় ছড়িয়ে পড়ল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সুবীরের চোখমুখে অস্বস্তি হল। জড়ানো গলায় বলল, 'আহ্। কী হচ্ছে!'
'কিছুই হয়নি। এবার দয়া করে বিছানা ছাড়ো।'
'হঠাৎ। ঘুমাতে দাও না।'
'দেওয়া যাচ্ছে না। সবার চা খাওয়া হয়ে গিয়েছে, বাবা বাজারে যাচ্ছেন না, তোমাকে যেতে.......