'ভাঁজ করা কাগজটা নিয়ে যখন বাড়ি ফিরছিল তিতির তখন বুঝতে পারল অনেকেই তার দিকে কৌতূহলী চোখে তাকাচ্ছে। তার খুব অস্বস্তি হচ্ছিল। দ্রুত পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরে এল। দরজা খুলল বাবা, 'কোথায় গিয়েছিলি রে?'
'বিজয় ডাক্তারের চেম্বারে।'
'সে কী। শরীর খারাপ বলিসনি তো।'
'দাদার জন্যে।'
'আ' বাবা আর কথা না বলে নিজের ঘরে চলে গেলেন।
মা বেরিয়ে এসেছিল। তিতির বলল, 'দুপুরবেলা আসবেন, একটা দশে।'
'ওমা। ওটা কি রুগি দেখার সময়?'
'আমি কী বলব? তার আগে উনি আসতে পারবেন না।'
'তী হয়েছে বলে ওষুধ নিয়ে এলি না কেন? অতক্ষণ বিনা ওষুধে থাকবে।' তিতির তাকাল। তারপর বলল, 'পেশেন্ট না দেখে উনি ওষুধ দেবেন না।' কথাটা সে বানিয়ে
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
বলল। এমন তো হতে পারে এই কথাটাই সত্যি। কিন্তু অতগুলো লোকের সামনে দাদার মাথা ফাটার কারণ বলা তার পক্ষে যে সম্ভব নয় একথা মাকে বোঝানো যাবে না। তিতির নিজের ঘরে চলে এল। পরদাটা টেনে দিয়ে খাটে বসে কাগজটা খুলল। উরেব্বাস। এত বড় ছবি বের হয়েছে তার? নিজের মুখের দিকে তাকিয়ে অনেকগুলো খুঁত আবিষ্কার করল সে। জগুদা বলেছেন দামি মেকআপে অনেক ত্রুটি ঢেকে দেওয়া যায়। বোম্বের অনেক নায়িকার মেকআপবিহীন মুখের দিকে তাকালে নাকি আঁতকে উঠতে হয়। অথচ মেকআপে তাদের মতো সুন্দরী ভূভারতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। মেকআপের কথা মনে পড়তেই মেকআপ বক্সের কথা মনে এল। এখনও কেনা হয়নি। জঙদা বলেছেন ফ্যান্সি মার্কেটে সস্তায় অথচ ভাল জিনিস পাওয়া যায়। ওটা খুব তাড়াতাড়ি কিনে ফেলতে হবে। তারপর সে হেসে ফেলল। যদি এটাই তার প্রথম এবং শেষ সিরিয়াল হয় তা হলে মেকআপ বক্স কিনে কী হবে? অভিনয় ছাড়া ওটার তো কোনও দরকার হবে না। ছবিটাকে আবার দেখল সে। হঠাৎ বেশ ভাল লাগল। মনটা কেমন হালকা হয়ে গেল। এবার ছবির নীচের লেখাটা পড়ল। ওদের সিরিয়ালের বিস্তৃত বিবরণ দিয়ে লেখা হয়েছে যে তিতির এর মধ্যেই অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, বিভাসবাবু বলেছেন, তিতির বাংলা ছবির নায়িকার অভাব পূর্ণ করতে পারবে। বিভাসদা তার সম্পর্কে এত বড় কথা বলেছেন? তিতিরের মনে হল তার দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল। আরও ভাল কাজ করতে হবে তাকে।
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
কাগজটা নিয়ে সে বাবার ঘরের দরজায় গেল। বাবা বই পড়ছেন। তিতির জানে ওটার নাম। পৌরাণিক অভিধান। পৌরাণিক এবং মহাকাব্যের চরিত্রগুলোর বিস্তৃত ব্যাখ্যা এতে আছে। বহুবার পড়া হয়ে গেলেও বাবার যেন কৌতূহল মেটে না।
'কিছু বলবি?'
'ই।'
'আয়।'
ঘরে ঢুকল সে। কাগজটাকে বাবার সামনে রাখল।
বাবা জিজ্ঞেস করলেন, 'কীরে?' তারপরই ছবিটাকে দেখতে পেলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মুখ হাসিতে ভরে উঠল, 'বাঃ। তোর ছবি। কী কাগজ এটা?' উলটে কাগজের নাম দেখে নিয়ে বললেন,
'তুই প্রথম, বুঝলি, তুই প্রথম।'
'কী প্রথম?'
'আমাদের বংশের কারও ছবি আজ পর্যন্ত কাগজে ছাপা হয়নি।'
'তুমি এমন করে বলছ। ধরো, আমি যদি তিনটে খুন করতাম তা হলেও আমার ছবি কাগজে ছাপা হত।' তিতির হেসে বলল।
বাবা মাথা নাড়লেন, 'ঠিক। কিন্তু ওটা করার ক্ষমতাও আমার বংশের কারও ছিল না, হয়নি।
বড়জোর নেশা করে মাথা ফাটিয়ে বাড়িতে বসে থাকতে পারে।'
তিতির ঠোঁট কামড়াল। দাদার ব্যাপারটা যে বাবা হজম করতে পারছে না তা সে জানে।
বাবা বললেন, 'খুব খুশি হয়েছি রে। এই যে কথা লিখেছে তার মর্যাদা তোকে রাখতে হবে।
কিন্তু একটা মুশকিল হয়ে যাবে রে।'
'কী?'