বিষাক্ত কিছু খাবার (পর্ব-৪)

in some •  6 years ago  (edited)

আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অনেক খাবারের নাম থাকে এবং আমরা তা খেয়ে থাকি। অজানা বা অসচেতনতার কারনে এই খাদ্যের সাথে সাথে আমরা অনেক বিষযুক্ত খাবারও খেয়ে থাকি। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বে ৫টি করে খাবারের আলোচনা করা হয়েছে এবং এ পর্বে আরও ৫টি খাবার নিয়ে আলোচনা করা হলো-

D532354 (1).jpg

১. চেরি
চেরি জনপ্রিয় একটি ফল। চোখ ধাঁধানো হলকা টক মিষ্টি ফল চেরি। আকৃতি কিছুটা অরবড়ই-এর মত। দেহ সামান্য খাঁচযুক্ত। কাঁচা অবস্থায় সবুজ, পরে হালকা হলুদ এবং সর্বশেষ গাঢ় লাল রং ধারণ করে। গাছের আকৃতি মধ্যম মানের। চেরি হচ্ছে 'প্রুনাস' গণের অন্তর্ভুক্ত একটি ফল। চেরি কাঁচা বা রান্না করেও খাওয়া হয় এবং মদ তৈরিতে ব্যবহার হয়। চেরির পাতা এবং বীজে বিষাক্ত উপাদান আছে।যখন চেরির বীজকে চুষা বা চূর্ণ করা হয় তখন প্রুসিক এসিড (হাইড্রোজেন সায়ানাইড)উৎপন্ন হয়।যখন ই চেরি খাবেন এর বীচি চুষে খাবেন না।বরই এবং পীচ ফলের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

D532354 (2).jpg

২. এপ্রিকট ও বরই
চিন্তা করার কিছু নেই। এই মজাদার ফলগুলোতে কোনো বিষাক্ত পদার্থ নেই। বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে এদের বীজে। যা সায়ানাইড পরিবারের গোত্রভূক্ত। কখনও কখনও এগুলো দিয়ে তৈরি জ্যাম, স্প্রেড বা দুধ জাতীয় পণ্যসহ বিভিন্ন খাবারের প্যাকেটের গায়ে এসবের বীজ ফাটানো, গেলা বা চাবানো যাবে না বলে সতর্কীকরণ লেবেল সাঁটা থাকে। বিশষজ্ঞরা বলেন, বীজের উপাদানগুলো সনাক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। সেই সাথে সেই সুনির্দিষ্ট ফল কম পরিমাণে খেতে হবে।

D532354 (3).jpg

৩. ক্যাস্টর অয়েল
রেড়ির তেল বিভিন্ন ধরণের ক্যান্ডি,চকলেট ও অন্যান্য খাদ্যে ব্যবহার করা হয়।অনেকেই আছেন যারা প্রতিদিন একটু ক্যাস্টর অয়েল খেয়ে থাকেন এবং বাচ্চাদেরকেও জোর করে খাওয়ান।রেড়ীর বীচিতে রিচিন নামক বিষ থাকে যা খুবই মারাত্মক বিষ।যারা এই বীজ সংগ্রহরের কাজ করে থাকেন তাদের মারাত্মক ধরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। রেড়ীর একটা বীজ খেলে একজন মানুষ মারা যায় আর চারটা খেলে একটা ঘোড়া মারা যায়। আমরা ভাগ্যবান, কারণ আমরা যে ক্যাস্টর অয়েল কিনি তা ভালোভাবে প্রস্তুত করা থাকে।

D532354 (4).jpg

৪. ফুগু বা পাফার ফিস বা পোটকা মাছ
সবচেয়ে ভয়ংকর খাদ্যের এক নম্বরে আছে পাফার ফিস বা পোটকা মাছ যা জাপানে ফুগু নামে পরিচিত। ফুগু একটি অত্যন্ত দামী এবং উপাদেয় খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফুগু মাছ দেখতে অনেকটা বাংলাদেশি পোটকা মাছের মত। তবে জাপানী বিষাক্তকর এই ফুগু সাইজে বাংলাদেশি পোটকা মাছের চাইতে অনেক বড়। যখন মাছটি খাবার জন্য উপযুক্তভাবে তৈরি করা হয় তখন এতে ভয়ের কিছু থাকে না। তবে যখন মাছটি খাবারের জন্য ভালোভাবে তৈরি করা হয় না তখন এটিই আপনার শেষ খাবার হতে পারে। কেননা এই মাছে রয়েছে টেট্রোডোটক্সিন নামক এক প্রকার প্রাণঘাতী বিষ যা থাকে মাছের লিভারে।তবে জাপানের আইনে, সকল রেস্টুরেন্ট এই খাবার তৈরি করা হয় না। শুধুমাত্র অভিজ্ঞ শেফ দ্বারাই এই খাবার তৈরি করা হয়। যাদের কমপক্ষে তিন বছরের একটি ট্রেনিং করতে হয়। অনেক গন্যমান্য ফুগু শেফরা খাবারের মধ্যে খুব সামান্য পরিমান টেট্রোডোটক্সিন রেখে দেন খাবার খাওয়ার সময় কিছুটা শিহরন জাগে। সাধারণত বছরে প্রায় ১০০ জন মানুষের মৃত্যু হয় এই ভয়ঙ্কর ফুগু পাফার ফিস বা পোটকা মাছে খেয়ে।

D532354 (5).jpg
৫. সানাকজি

কোরিয়াতে এ ধরনের বিষাক্ত অক্টোপাসের নাম সান-নাকজি। সাধারণত রান্না না করেই এ ধরনের অক্টোপাস কোরিয়ায় খেতে দেওয়া হয়। সেটাই ডেলিকেসি। তবে শরীর থেকে পা’গুলো আলাদা করে দেওয়া হয়। শরীরেই থাকে বিষ, যা খাওয়া যায় না। কিন্তু পা’গুলো আলাদা করে সিসেম তেল দিয়ে মাখিয়ে সার্ভ করা হলেও পা’গুলো নড়তে থাকে। অতিথিদের বলে দেওয়া হয়, সাবধানে খেতে। যে কোনো সময় গলায় লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ করে ফেলতে পারে। এগুলো মানুষের মৃত্যুর কারণ না হলেও, মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Great post!
Thanks for tasting the eden!