রোকসানা আজকে আমরা সুন্দর সুন্দর জায়গায় ঘুরবো।দুপুরে বাইরে থেকেই খাবো।
- হুমম।চলো এখনই বের হই।
- আগে ব্রেকফাস্ট তো করে নিই।তারপর আমি গোসল করে জুম্মার নামাজ পড়ে এসেই রেডি হয়ে বের হবো। আজ কিন্তু তোমায় শাড়ি পরতে হবে।
- তুমি পড়ায়ে দিলে পড়বো । ঠিক আছে আমিই পড়িয়ে দিব। সকালে একসাথে নাস্তা করলাম। দুপুরে নামাজ পড়ে এসে রেডি হলাম। আমি শাড়ি পড়ায়ে দিলাম । যতবারই শাড়ি পড়েছে প্রতিবার আমাকে পড়িয়ে দিতে হতো। রোকসানা ভালো করে শাড়ি পরতে পারতো না। ইচ্ছা করেই শিখে নি। আমি বলে খুব সুন্দর শাড়ি পড়াতে পারি। আমারও শাড়ি পড়াতে ভীষণ ভালো লাগে। বুঝেনইতো বউকে শাড়ি পড়িয়ে দেবার মজাই আলাদা । অনেক বছর আগে আম্মুর কাছ থেকে শাড়ি পড়া শিখেছিলাম। সেদিন শিখার জন্য আমাকেই শাড়ি পড়তে হয়েছিলো। আম্মু আর দাদী দেখে ওরে হাসাহাসি করা। এখন ভাবতেও লজ্জা লাগে। শুধুমাত্র বউকে শাড়ি পড়াতে পারার জন্য এমন করা। সেই ইচ্ছাও পূর্ণ হলো। রোকসানারম আমার কোন ইচ্ছাই অপূর্ণ রাখে না।
- দেখোতো কেমন লাগছে।
খুব সুন্দর করে সেঁজেছে আমার বউটি। রোকসানাকে দেখে নতুন করে প্রেমে পড়ে গেলাম।এত্তো সুন্দর লাগছে কি আর বলবো। ইচ্ছা করেই বললাম - একটুও ভালো লাগছে না। মন খারাপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো। এমন কথা আশা করে নি। বেশি মন খারাপ হলে এখনই কেঁদে চোখের কাঁজল লেপ্টে যাবে সুন্দর সাঁজটাও নষ্ট হয়ে যাবে। রোকসানা এতো কষ্ট করে আমার জন্যে সাঁজলো আর আমি কি বলে ফেললাম ।
- ওলে আমার সুন্দরী পরীরে। আমি এমন কথা বললাম আর তুমি বিশ্বাস করে নিলে? তোমাকে এত্তো এত্তো সুন্দর লাগছে। পরীরাও দেখলে নিশ্চিত লজ্জা পাবে গাল টেনে বললাম। চলো তাহলে যাওয়া যাক ।
- হুমমম।
রোকসানা প্রাকৃতিক পরিবেশেই ঘুরতে খুব ভালোবাসে। দুপুরের খাবার বাইরে থেকে খেয়ে ঘুরতে লাগলাম প্রকৃতির মাঝে। আজকের আবহাওয়াটাও অনেক সুন্দর।দক্ষিণা বাতাস বইছে । আবহাওয়াটা হালকা ঠান্ডা ঠান্ডা। ঘুরতে ঘুরতে কখন যে দুপুর থেকে বিকাল আর বিকাল থেকে সন্ধা হয়ে গেছে বুঝতেই পারি নি। আমার মনে হয় এমন মিষ্টি সুন্দরী বউয়ের সাথে ঘুরলে কারোর সময়ের প্রতি খেয়াল থাকবে না ।খুব মজা করলাম ।এখন বাড়িতে যেতে হবে। হঠাৎ রোকসানা মার্কেট করতে চাইলো। বাধ্য হয়ে মার্কেটে যেতে হলো। বরাবরের মতো এবারও রোকসানার জিনিস আমি ও আমার জিনিস রোকসানার পছন্দ করলো।রোকসানার আমার জন্য নীলের মাঝে সাদা চেক শার্ট আর জিন্সের প্যান্ট পছন্দ করলো। আর আমি সুন্দর একটি সবুজ শাড়ি পছন্দ করলাম। এদিকে পকেটে হাত দিয়েই দেখি আর তেমন টাকা নেই। মনটাই খারাপ হয়ে গেলো।এখন বলতেও খারাপ লাগছে। রোকসানা আমার দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবলো তারপর বললো
- আজ আর কিছু কিনবো না।পরের সপ্তাহে মনভরে কেনাকাটা করবো কিন্তু। তারমানে বুঝে গেছে আমার মন
খারাপের কারণ। আমিও খুশিতে রাজি হলাম। রোকসানা কেনাকাটা তেমন পছন্দ করতো না। যখন বুঝতে পারলো আমি নিত্যনতুন পোশাকে রোকসানাকে দেখতে খুব পছন্দ করি তখন থেকেই কেনাকাটা ভালো লাগে ।রোকসানা আগে আমার পোশাক কিনবে তারপর নিজের পোশাক কিনে। দোকানীদের বিল দিয়ে মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসলাম। - আমার কোন দোষ নেই। আমিতো জানতাম না তুমি কেনাকাটা করবে আজ। তাই টাকা বেশি এনেছিলাম না।
- আমি কি এতার জন্য কিছু বলেছি তোমায় ?
- না। আচ্ছা তুমি প্রতিবার কীভাবে বুঝো আমার মন খারাপ?-এতো ভালোবাসি তোমায় আর এটুকু বুঝবো না। তাছাড়া তুমিও তো বুঝে ফেলো ।তোমার ঐ চোখের ভাষা আমি বুঝতে পারি। আর এমন প্রশ্ন করছো কেন? তার মানে তোমার বিশ্বাস হয়না আমি তোমাকে ভালোবাসি?
- তুমিও না কথার শুধু অন্যমানে খুঁজে বের করো।
- আমি অন্যমানে বের করি? জেনেশুনে তাহলে ওমন প্রশ্ন করো কেন বলো?
এইরে আরো রেগে যাওয়ার আগেই কিছু করতে হবে। ওইতো সামনে ফুসকাওয়ালা। রোকসানারতো ফুসকা পাগলী।
-আর বলব না ।ভুল হইছে ।এবার রাগ করতে হবে না চলো ফুসকা খাই। রোকসানার জন্য একপ্লেট ফুসকা
অর্ডার দিলাম। - এই তুমি খাবে না ?
- আমার খেতে ইচ্ছে করছে না।
- জানি তোমার ফুসকা ভালো লাগে না। তবুও তোমাকে খেতে হবে। তোমাকে ছাড়া আমি একা কখনও খেতে পারবো না।
কি আর করার। আরেকপ্লেট ফুসকা অর্ডার দিলাম। রোকসানার জন্য হলেও খেতে হবে। দুজনে একসাথে ফুসকা খাচ্ছিলাম। রোকসানাতো এমনভাবে খাচ্ছে যেন আরো ৪-৫প্লেট ফুসকা দিলেও খেয়ে ফেলবে। এদিকে আমি আস্তে আস্তে খাচ্ছি। এমন সময় কোথা থেকে আমার কলেজ লাইফের বান্ধবী সামনে এসে হাজির। অনেক বছর পর দেখা ভাব বিনিময় করলাম। আমার বউয়ের সাথে পরিচয় করিয়েদিলাম। হেসে হেসে একটু গল্প মজা করছিলাম। ওদিকে বউয়ের দিকে তাকাতেই মুখ ফুলিয়ে রেগে আগুন হয়ে আছে । ভয়ে তাকাতেই পারছি না। বুঝতে পেরেছি আজ আমার কপালে দুঃখ আছে। পরিস্থিতি খারাপ দেখে বান্ধবীকে ইশারা করে বুঝানোর চেষ্টা করলাম যে বউ খুব রেগে গেছে আমাদের গল্প করাতে ।
সে কিছুটা আঁচ করতে পেরে বেস্ট অফ লাক বলে বিদায় নিলো। রোকসানা ফুসকা না খেয়েই রাগে বাসার দিকে হাঁটা দিলো। এখান থেকে বাসা মিনিট পাঁচেকের রাস্তা। রোকসানা সামনে সামনে হাঁটতে লাগতো আর আমি পিছনে পিছনে। বাসায় গিয়ে দৌড়ে বেড রুমে চলে গেল। আমি রুমে যেতেই দেখি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।
কাছে যেতেই অন্যদিকে ঘুরে বসলো।
- কি হলো বউ? কাঁদছো কেন?
- একদম আমায় বউ বলবে না। আমার ইচ্ছা হচ্ছে তাই কাঁদছি। তোমারকি? আর তুমি এখানে কেন? যাও তোমার প্রাণের বান্ধবীর সাথে মনভরে গল্প করো।
- এতো রাগ? দীর্ঘদিন পর দেখা কথা না বললে কি না মনে করবে তাই একটু বললাম।
- সে কি মনে করবে সেটা দেখছো আর আমার কষ্ট হচ্ছে সেটা বুঝো না ? আমারতো কোন গুরুত্বই নাই তোমার কাছে। তুমি খুব ভালো করেই জানো অন্যকোন মেয়ের সাথে আমি তোমাকে সহ্য করতে পারি না। তারপরও তুমি খুবতো গল্প করলে হেসে হেসে। আমাকে কষ্ট দিতে খুব ভালো লাগে তাইনা ? যখন থাকবো না তখন বুঝবে বলেই আরো কান্না জুড়ে দিল।
- আমার বউ আমায় এত্তো ভালোবাসে বুঝি? আচ্ছা মাফ করে দেও। এইযে কান ধরছি এমন হবে না কখনও। তুমিই আমার হৃদয়,প্রাণ,ভালোবাসা সবকিছু। তোমার কিছু হলে কি আমি বাঁচবো বলো? চলে যাওয়ার কথা কখনও মুখে আনবে না। যদি আনো তাহলে আমি নিজেকেই বলার আগেই আমাকে রোকসানা জড়িয়ে ধরলো। অনেক শক্ত করে ধরলো যেনো হারিয়ে যেতে না পারি।
- মার দিবো কিন্তু। তোমাকে ভালোবাসবো নাতো কাকে ভালোবাসবো? তোমাকে ছাড়া এই মেয়েটা যে শূন্য। অনন্তকাল তুমি শুধু আমার আর কারোর না।অন্যকোন মেয়ের সাথে এবার হেসে কথা বললে চোখ তুলে নিব বলে দিলাম। আমি দুই হাতের বৃদ্ধ আঙুল দিয়ে চোখের পানি মুছে দিলাম। আমি খুব ভাগ্যবান এতো ভালোবাসাকারী বউ পেয়েছি বলে। এভাবেই যেন চিরটাকাল আমাদের ভালোবাসা অটুট থাকে।
Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
https://www.nhl.com/player/evgeny-kuznetsov-8475744
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
This post has received a 1.04 % upvote from @drotto thanks to: @ohimahathir.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit