আকাশের মেঘ থেকে খসে পড়া পানির একটি বিন্দু দুনিয়ার দিকে আসছিল । রাস্তায় সে নিজের সৌন্দর্য দেখে বড়াই করে বলছিল , ' আমি কী সুন্দর গোলাকার , আমার সৌন্দর্য দেখে দুনিয়ার মানুষ মুগ্ধ হয়ে যাবে , সূর্যের কিরণ লেগে আমি আরও চক্চক্ করে উঠেছি , সবাই আমার মুখাপেক্ষী , কারণ আমি নাপাক মানুষকে এক মুহুর্তে পাক করে দিতে পারি । ' ইত্যাদি ভেবে সে গর্বে ও আহ্লাদে মত্ত হয়ে পড়েছিল । কিন্তু তার এই যোগ্যতা কোথায় থেকে আসলো , কে এই যোগ্যতা সৃষ্টি করে দিয়েছেন সেদিকে একবারও চিন্তা করে আল্লাহর শুকুর করলো না । তার এই অহঙ্কার আল্লাহর কাছে পসন্দ হলো না । ফলে তিনি তার প্রতিশোধ নিলেন এইভাবে যে তার সামনে এক সমুদ্র পেশ করলেন । সমুদ্র দেখে সে ভয়ে দিশাহারা হয়ে উঠলো । সমুদ্রের বিশালতার কাছে তার এক বিন্দু পানির কোন বড়াই চলে না । এই সমুদ্রে তাকে এখন পতিত হয়ে নিজের অস্তিত্ব হারাতে হবে । আরও ভাবলো , এই সমুদ্রের পানির তুলনায় আমি আগে থেকেই অস্তিত্বহীন ছিলাম । সমুদ্রের সাথে মিশে আরেকবার বিলীন ও নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছি । শুধু শুধু নিজের বড়াই করে আমি ভুল করেছি । ' এই কথা ভাবতে ভাবতে সে নীচের দিকে আসছে । তার এই অস্তিত্বহীনতার ভাবনা এবং বিনয় আল্লাহ্র কাছে পসন্দ হলো । তিনি তাকে পুরষ্কৃত করলেন এইভাবে যে , সমুদ্রের পানির পৃষ্ঠে একটি ঝিনুক ভেসে উঠলো । বৃষ্টির বিন্দুটি পড়তেই ঝিনুকটি হা করে সেটা তার পেটের ভিতরে ধারণ করে নিল । পেটের ভিতরে থেকে এই বৃষ্টি - বিন্দু ধীরে ধীরে এক মহা - মূল্যবান মুক্তায় পরিণত হলো । শেষে এই ঝিনুক থেকে মুক্তা স্থানান্তরিত হয়ে বাদশার মুকুটে স্থান লাভ করলো । সে এখন মর্যাদার সর্বোচ্চ শিখরে পৌচেছে । সুতরাং (যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্যে নত হয় আল্লাহ্ তাকে উচ্চে তুলে ধরেন)। ' কথাটি আবার প্রমাণিত হলো । নিজেকে আল্লাহর কাছে অস্তিত্বহীন করে দাও । আল্লাহ্ তোমাকে মর্যাদা দিবেন । তবে মর্যাদা লাভের আশায় নয় । এটা আল্লাহর হক যে তুমি তাঁর সামনে নিজেকে অস্তিত্বহীন মনে কর । তোমার সকল ইচ্ছাকে তাঁর ইচ্ছার সামনে জবাই কর । তিনি ইচ্ছা করেন তোমাকে তাঁর শরীয়তের বিধানের উপর চলতে দেখতে ।
এক ফোটা বৃষ্টির গল্প
2 years ago by sadik41 (25)