গত পর্বের পর...
শিয়ালটা সাইজে ছিল অনেক বড় এবং দেখতেও বেশ ভয়ানক ছিল। রিফাত ভেবে পাচ্ছিল না সে কি করবে। তার মনে হচ্ছিল গিয়ে একটু সাহায্য করি। আবার সে ভয়ও পাচ্ছিল কারণ বড় শেয়ালটা যদি তাকে কামড়ে দেয়। রিফাত সেখানে দাঁড়িয়েই বেশ কিছুক্ষণ দেখতে লাগলো। শিয়ালটা অনেক চেষ্টা করছিল তারপর দুইটা দড়ি থেকে ছাড়ানোর। অনেকক্ষণ ঝাপাঝাপি করার পর শিয়ালটা মনে হল ক্লান্ত হয়ে গেছে। তারপরও তার পা দুটি এমন ভাবে আটকে আছে যেন ছোড়ার কোন সম্ভাবনাই নেই।
রিফাতের দৃশ্যটি দেখে অনেক মায়া হল শেয়াল তার ওপর। ওদিকে প্রায় সন্ধ্যা নেমে এসেছে। বাড়ির দিকে চলে যেতে হবে কারণ একটু পরে অন্ধকার নামবে। রিফাতের মনে হল শিয়ালটাকে যদি এখন এই অবস্থাতে রেখে চলে যায় এবং পরবর্তীতে শেয়ালটার যদি কোন ক্ষতি হয় বা মারা যায়। এ কথা ভেবে রিফাত এর খারাপ লাগছিল। রিফাতের মনে হলো আমরা তো মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব, এই অবলা প্রাণীদেরকে যদি আমরাই সাহায্য না করি তাহলে আর কিভাবে হবে। আর তাছাড়া এই জায়গাতে আমি একমাত্র যে শিয়ালটাকে সাহায্য করতে পারে। তারপর রিফাত আর কোন কিছু না ভেবে আল্লাহর নাম করে সে এগিয়ে গেল। একটু একটু ভয় ভয় পাচ্ছিল রিফাত।
আস্তে আস্তে পা ফেলে শিয়ালের দিকে হেঁটে যেতে শুরু করল। কাছাকাছি যেতে পায়ের শব্দে শিয়ালটি ঘুরে তার দিকে তাকালো। রিফাতের কিছুটা ভয় লাগলো। শিয়ালটা এক নজরে তার দিকে তাকিয়ে আছে। রিফাত আল্লাহর নাম করে সামনের দিকে এগিয়ে গেল। সে খেয়াল করল শিয়ালটা চুপ করে তার দিকে তাকিয়ে আছে সে কোন ধরনের ছোটা ছুটি বা হিংস্র মনোভাব করছে না। রিফাত আস্তে করে হাতটা বাড়িয়ে শিয়ালের পা দুটি দড়ি দিয়ে ছড়িয়ে দিল। পা দুটি ছড়াতে শেয়ালটি এক দৌড় দিয়ে সেখান থেকে মাঠের ভেতর দিয়ে পালিয়ে গেল।
রিফাতের অনেক ভালো লাগলো দৃশ্যটি। মনে মনে অনেক খুশি লাগলো যে সে একটা অবলা প্রাণী কে বাঁচিয়েছে। তারপরে মনে আনন্দ নিয়ে বাড়ির দিকে হাটা দিল ততক্ষণে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। মাগরিবের আজান দিচ্ছে।