গল্প: হোটেল রজার্স স্টে

in story •  8 months ago 

গাড়িটা যখন দার্জিলিং–এর খাড়াই পথে এসে মলের কাছে দাঁড়ালো তখন ঘড়িতে বিকেল পাঁচটা বেজে গ্যাছে। সারা রাস্তায় মাঝে মাঝেই বৃষ্টি হচ্ছিল। কিন্তু যাত্রাশেষের আধঘণ্টায় জাঁকিয়ে বৃষ্টি এল। শিলিগুড়ির ছেলে সুরেশের এসব রাস্তায় চলে অভ্যাস। সে ভরসা দিয়েছিল যতই আবহাওয়া খারাপ হোক, পাঁচটার মধ্যেই সে হোটেলে পৌঁছে দেবে আমাদের। কাদা–মাখা রাস্তার একপাশে গাড়িটা পার্ক করে সে অভয় দিল ‘আপনারা হোটেলের ভিতরে গিয়ে ওদের লোককে এসে মালপত্রগুলো নিয়ে যেতে বলুন স্যার। আমি আছি।‘ আমরা, মানে আমি, রঞ্জনা, পার্থ আর জয়শ্রী, একসঙ্গে ঢাল বেয়ে উঠে এলাম হোটেল রজার্স স্টে’র রিসেপশনে। কাচের দরজা ঠেলে ঢুকতেই ভেতরের উষ্ণতায় শরীর জুড়িয়ে গেল।

ম্যানেজার মিস্টার ব্রেগাঞ্জা কলকাতার লোক। মাঝবয়সী। একমুখ হাসি নিয়ে নিজের ঘর থেকে

বেরিয়ে এসে খ্যানখ্যানে গলায় একটা ‘গুড ইভিনিং’ ছুড়ে দিলেন। পার্থ বলল ‘ইফ ইউ ক্যান প্লিজ টেল ইউর ম্যান টু কলেক্ট আওয়ার লাগেজ ফ্রম দ্য কার?”

— “ওহ ইয়েস, হি মাস্ট হ্যাব গন বাই দিস টাইম।‘

বলতে বলতেই দেখি দুজন নেপালি ছেলে আমাদের তিনটে সুটকেস আর দুটো হ্যাবার স্যাক নিয়ে উপস্থিত, পিছনে সুরেশ। সে এসেছে গাড়ির ভাড়া বুঝে নিতে। আমি পকেট থেকে টাকা বের করে দিয়ে বললাম, ভাই গুনে নাও একবার।

টাকা গুনতে গুনতেই সে আমায় চাপা গলায় বলল, স্যার এখানে কদিন থাকার প্লান আপনাদের?

আমি একটু বিরক্তই হলাম তার এই প্রশ্নে। বললাম, কেন বল তো? দিন তিনেক আছি আমরা।

“না স্যার, মানে যদি তার আগেও দরকার হয় জানাবেন। এই আমার ফোননম্বর।” এই বলে ঝটপট আমার হাতে একটা ছোট্ট কার্ড ধরিয়ে সে ঝড়ের গতিতে বেরিয়ে গেল।
castle-mystical-ghosts-creepy-e1693400891701 (1).jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!