বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম |
---|
আমাদের ঈদুল ফিতর শেষ হয়েছে আজ দুই দিন হলো। আমি এবং আমার বাড়ির আশে পাশের মামা এবং ভাইদেরকে কোন একটি জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার জন্য উদ্যোগ নিলাম। অবশেষে আমরা ১০-১২ জন সরিষাবাড়ী স্বপ্ননীল পার্কে যাওয়ার জন্য একমত হলাম সবাই। আমরা আমাদের মতামত একদিন আগে ঠিক করেছিলাম। তাই আজ ১৪ তারিখ আমরা সকালে সেই স্বপ্ননীল পার্কে যাওয়ার জন্য সকাল সকাল উঠে পড়লাম। আমি সকাল সাতটার সময় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হওয়ার গোসল করলাম। দাঁত ব্রাশ করে এবং গোসল শেষ করে আমি ঘরে এসে নতুন কাপড় পরিধান করলাম। যেহেতু আমরা নতুন একটি জায়গায় ঘুরতে যাচ্ছি তাই আমরা সকলে নতুন কাপড় চোপড় পড়ে যাচ্ছি। সকাল সাতটার সময় আমরা আমাদের এলাকারই অটো ড্রাইভার রনি ভাইকে ডাক দিলাম। তার গাড়িতে করে আমরা মোট ১২ জন জামালপুর রেল স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। তবে সেদিন আমাদের ভাগ্যটা ভালো ছিল না তাই আমরা ট্রেন মিস করে ফেলেছিলাম। যাইহোক আমাদের সকলের যেতে হবেই তাই আমরা দুটো সিএনজি গাড়ি নিলাম এবং সিএনজি ড্রাইভারকে তাদের ভাড়া জিজ্ঞাসা করলাম। তারা ৪০০ টাকা চাইলো এবং অবশেষে ৩৫০ টাকায় রাজি হয়ে গেল তারা। তো আমরা আর দেরি না করে সিএনজিতে উঠে পড়লাম। জামালপুর থেকে সরিষাবাড়ী বেশ দূরে। তাই সেখানে যেতে আমাদের প্রায় এক ঘন্টা সময় লেগেছে। সরিষাবাড়ী স্বপ্ননীল পার্কের গেটে যাওয়ার পর, আমার এক মামা রেজাউল করিম সবাইকে সেখানে ভালোভাবে চলাফেরার জন্য কিছু পরামর্শ করলেন। এবং নিচের দেয়া ফটো টি হচ্ছে হচ্ছে সরিষাবাড়ি স্বপ্ননীল পার্কের প্রবেশপথ।
সেখানে যাওয়ার পর আমরা দুই মিনিট রেস্ট নিয়ে টিকিট কাউন্টারের দিকে গেলাম টিকিট কাটার জন্য। গিয়ে দেখলাম প্রতিজনের টিকেট মূল্য হচ্ছে ৬০ টাকা। যেহেতু আমরা ১২ জন, ১২ জনের ক্রিকেট মূল্য আসে ৭২০ টাকাএবং আমরা ৭২০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে স্বপ্ননীল পার্কের ভিতরে ঢুকি। ভিতরে ঢোকার পর আমরা কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করি এবং পার্কের ভিতরের সুন্দর্য উপভোগ করি। পার্কের ভিতরে দর্শনার্থীদের জন্য নানা ধরনের শিল্পকর্ম সাজানো আছে। নিচে দেয়া ফটোটি হচ্ছে, সরিষাবাড়ি পার্কের সৌন্দর্যের একটি অংশ।
সেখানে রয়েছে একটি সুইমিং পুল। আরো আছে বেশ কয়েকটি দোলনা। দর্শনার্থীদের সঙ্গীতের মাধ্যমে মনোরঞ্জন করার জন্য একটি বড় ঘর রয়েছে। তাছাড়া দর্শনার্থীদের বসে থাকার জন্য তিনতলা বিশিষ্ট একটি গোলাকার ঘর রয়েছে যেখান থেকে পার্কের সমস্ত জায়গা দেখা যায়। স্বপ্ননীল পার্কের মূল আকর্ষণ হচ্ছে সেই পার্কের সুইমিং পুলটা। আমার মতে সকল শরণার্থীরা সেখানে সেই সুইমিং পুলে গোসল করার জন্য এসে থাকে। তো আমরা পার্কের ভিতরে ঢোকার পর দুই তিনটি দলে ভাগ হয়ে পার্কের সকল জায়গায় ঘোরাঘুরি করলাম এবং যে যার মতো কয়েকটি ফটো তুললাম। তারপর আধা ঘন্টার মত ঘোরাঘুরি করে আমরা সবাই আবার এক হলাম এবং কয়েকটি গ্রুপ ফটো তুললাম।
যাইহোক পার্কে সৌন্দর্যটা লিখে বুঝানোর মতো নয়। আমরা সেখানে ঘোরাঘুরি করতে করতে ১টা বেজে যাই। অবশেষে আমরা সবাই রাজি হই সুইমিং পুলে গোসল করার জন্য। সুইমিং পুলের টিকেট মূল্য ছিল ২০০ টাকা। তাই প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০০ টাকা নিয়ে মোট ১২ জনের ২৪০০ টাকা দিয়ে সুইমিং পুলের টিকিট কেটে নিয়ে আমরা সবাই। টিকিট কাটার পর আর বেশি দেরি না করে আমরা গোসল করার জন্য এগিয়ে যাই সেই সুইমিং পুলের গেটের দিকে। সুইমিং কল গেটে যাওয়ার পর গ্রেট ম্যান আমাদের জুতা ভেঙে পড়ে ভিতরে ঢুকতে বললেন তো আমরা তার কথামত ভিতরে ঢুকে পড়লাম। সুইমিং পুলের ভিতরের সৌন্দর্য একটা ছিল মনোমুগ্ধকর। নিচের দেওয়া ফটোটি হল সুইমিংপুলের ভেতরের অংশ।
সুইমিং পুলের ভিতরে ঢোকার পর, যে যার মত পোশাক চেঞ্জ করে গোসল করতে নেমে পড়ল। আমি আগেই গোসল করতে না নেমে, কয়েকটি ফটো তুলে, এবং পুলের সৌন্দর্য উপভোগ করে তারপর সেখানে গোসল করতে নেমে পড়লাম। আমরা সবাই মিলে দুই থেকে তিন ঘন্টার মত সেখানে গোসল করলাম। গোসল করতে করতে তখন বেলা প্রায় ৩:৩০ বাজে। এছাড়া দীর্ঘ সময় গোসল করার পর আমরা সবাই উঠে পড়লাম। তারপর কাপড় চেঞ্জ করে, সুইমিংপুল থেকে বাইরে বের হলাম। তারপর আমার মামা রেজাউল করিম আমাদের সবাইকে একত্রিত করলেন এবং কিছু উপদেশ দিলেন। আমরা তার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনলাম।অল্প কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে, তোমরা সেই স্বপ্ননীল পার্ক থেকে বের হয়ে আসলাম। আমরা সবাই সরিষাবাড়ী থেকে জামালপুর ট্রেন দিয়ে আসতে চাইলাম। তাই আর বেশি দেরি না করে একটি অটো রিক্সা নিয়ে সরিষাবাজ রেলস্টেশনের দিকে রওনা দিলাম। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর আমাদেরকে সরিষার রেল স্টেশনে নামিয়ে দিলেন অটো ড্রাইভার। আমরা সবাই সকালবেলা খেয়ে এসেছিলাম তার মাঝখানে আর কিছুই খাইনি, তাই সবাই খাওয়া-দাওয়া করার জন্য একটি হোটেলে গেলাম। সেখানে সবাই খাওয়া-দাওয়া করার পর আবার সরিষাবাডি রেলস্টেশনের এসে পড়লাম।
সন্ধ্যা ৫টার দিকে ট্রেন আসে। এবং সেই ট্রেন সন্ধ্যা সাতটার দিকে সরিষাবাড়ি রেলস্টেশন থেকে জামালপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এক ঘণ্টার মধ্যে ট্রেন জার্নি করার পর আমরা জামালপুর এসে পৌঁছাই। খাবার পর আসার পরে একটি অটো দিয়ে সবাই বাড়ির দিকে রওনা দেই। প্রায় নয়টার দিকে আমরা বাড়িতে এসে পৌছাই। বাড়িতে আসার গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিই। এবং খাওয়া দাওয়া করি। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে পড়ি আমি। এভাবে আমি আমার আজকে সারাদিনের কর্মকাণ্ড শেষ করি।
তোমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ। |
---|