Monpura Iceland

in travel •  7 years ago 

#মনপুরা_দ্বীপ

মোটামুটি পুরো বাংলাদেশেই ঘুরেছি। মিশেছি হাজারো রকমের মানুষের সাথে। হাজারো চরিত্রের সাথে এই ট্যুরে ট্যুরে। কিন্তু এ দ্বীপের মত মাটির মানুষ দেশের আর কোথাও দেখা পাইনি। এত আন্তরিক মানুষ হতে পারে এটা আমার মত শহুরে মানুষের কল্পনাতীত।

image
ভাল এত ভাল কিভাবে হয় !

এরা কি সত্যিই এদেশের মানুষ। কি আছে এ মায়াদ্বীপে?
এত ভাল তারা কিভাবে হয় 😍
কি করেনি তারা আমাদের জন্য..........
ছবিতে যে নৌকা দেখতে পাচ্ছেন তার ভেতর আমরা তিনদিন ছিলাম। ঝড়-বৃষ্টিতে আমরা এখানেই ছিলাম,
তারা সম্পূর্ণ ফ্রি তে আমাদের এখানে থাকতে দিয়েছেন যাতে আমরা ঝড়ের কবলে বিপদে না পড়ি।
আমাদের তাবু আসলেও ঝড়ের মোকাবেলা করতে পারত না যদি তারা আমাদের এখানে আশ্রয় না দিত।
যেহেতু ক্যাম্পিং করতে গিয়েছিলাম, তারা বাসা থেকে রান্নার পাতিল,চামচ, বালতি,প্লেট এমনকি চুলা পর্যন্ত বানিয়ে দিয়েছে। ঘর থেকে অফুরন্ত লাকড়ি আর কাঠ এনে দিয়েছে যা দিয়ে আমরা তিনদিন রান্না করেছি এবং রাতে ক্যাম্প-ফায়ার করেছি। কোন বিনিময় ছাড়াই এগুলো আমাদের দিয়েছেন 😍😍😍

এই দ্বীপের মানুষগুলো প্রকৃতির মত সুন্দর।
মনে হয় যেন তারা প্রকৃতিরই অংশ। প্রায় ৪০ কিলোমিটার হবে দ্বীপটা। অনেক হরিণ আছে এখানে।
বিকাল বেলা হরিণের দেখা মিলে। রাতের বেলা এখানের বাজার জমজমাট হয়। সকাল বিকাল দুইবেলা পাওয়া যায় তরতাজা মাছ। আর এত অল্প দামে কোথাও মাছ পাওয়া যায় কিনা আমার জানা নেই।
মাছ কিনতে গিয়ে আমরা বিপদেই পরে ছিলাম, ৫০০ টাকার সমপরিমাণ মাছ মাত্র ৫০ টাকায় বিক্রি করতেছে। মাছ কেনার পর ভাবতে ছিলাম এত মাছ নিয়ে কি করব! অর্ধেক ফেরত দেয়ার পরিকল্পনাও ছিল। ইলিশ মাছ থেকে শুরু করে সব ধরনের মাছ টাটকা পাওয়া যায়। এবং নিজেরা বাজার করে হোটেলে রান্না করে দিতে বললেও দেয়। যদিও আমরা দ্বীপে রান্না করে খেয়েছি। রাতের বেলা অন্ধকার হওয়াতে তারা কুপিবাতি আর সোলারের লাইট এনে দিয়েছিল। রাতের বেলা সব কিছু চার্জ দিয়েছিলামও বিনামূল্যে। মানুষের দুর্বলতা নিয়ে ব্যবসা করতে তারা জানে না। তারা জানে কিভাবে তাদের সাহায্য করতে হয়। "রাজিব" নামের পিচ্চি একটা ছেলে ছিল সারাদিন আমাদের সাথে... সে অনেক হেল্প করেছে আমাদের।
বিদায় বেলায় তার চোখের অশ্রু আমাদের অনেক ব্যথা দিয়েছে। তার ভাষা ছিল " আজকে কি সত্যিই চইলা যাবেন? আর থাকবেন না? শুটিং শ্যাষ আপ্নেগো?"

("পিচ্চিটা আমাদের সাথে আনাড়ি রান্না করা খাবার খেয়েছে 😍 এবং যখন হোটেলে খেয়েছি তখন তাকেও সঙ্গে করে নিয়ে গেছি")

হয়তো এ অভিশপ্ত নগরী থেকে দূরে থাকে বলেই তারা এত অমায়িক। তাদের দ্বীপ তাদের মতই সুন্দর।
সারারাত নৌকার ছাদেই ঘুমিয়েছি আমরা কিন্তু কখনো মনে হয়নি নিচে পরে থাকা "ক্যামেরা/ মোবাইল" এগুলো চুরি হয়ে যাবে। হয়তো চুরি কি জিনিস তারা তা জানেই না। নৌকায় সব ফেলে আমরা সারাদিন ঘুরে বেড়াতাম নির্ভয়ে 😍😍
হারাবার ভয় ছিল না। সিকিউরিটি নিয়ে কোন প্রশ্ন হয় না। যেন দ্বীপের সবাই আপনার হেফাজতেই ব্যস্ত।

যেভাবে যাবেন :ঢাকা, সদরঘাট থেকে লঞ্চে মনপুরা দ্বীপ।(লঞ্চের নাম: "ফারহান ৩/৪ এবং এম ভি তাসরীফ-২)
ভাড়া ১৫০ টাকা (কেবিন নিলে ভাড়া রুম অনুযায়ী)
লঞ্চ বিকাল ৫:৩০ এ ছাড়ে আর পরের দিন সকালে ভোরে পৌছে। ফেরার সময় লঞ্চ দুপুর ২ টায় ছাড়ে।
লঞ্চঘাট থেকে মোটর সাইকেল বা টেম্পুতে যেতে পারবেন সদরে। বাইকের ভাড়াও কম। প্রতি বাইক ১০০ টাকা। সদরে নেমে যে কোন যায়গায় যেতে পারবেন।
এবং সদরে থাকার হোটেলও আছে। দ্বীপের এই হোটেলগুলো ডেকেরমত, ভাড়া অনেক কম। ৩০০/৪০০ করে রুম। সাদাসিধা হোটেল। এখানে ডাবের দাম অনেক কম, ২০/৩০ টা পিস। আমরা পাইকারি ১০ টাকা পিস কিনে ছিলাম গতবার।
"দ্বীপটি মূলত ভোলা জেলায় অবস্থিত"।

"আমরা যেখানেই ঘুরতে যাই সেখানে অপচনশীল জিনিস গুলা যেখানে সেখানে ফেলব না। আমাদের দেশটা অনেকবেশি সুন্দর তাই সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব আমারই "

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
https://www.xvideos.com/video22374949/japen_cosplay_hot_agent