সুস্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ভিটামিন-খনিজ দরকার আমাদের। খাবারের মাধ্যমে ভিটামিনের অভাব দূর করা যেতে পারে।
তবে অনেক সময়ই ভিটামিনের অভাব ঘোঁচাতে বিশেষজ্ঞরা সাপ্লিমেন্টারি দিয়ে থাকেন।
হরহামেশাই ভিটামিন বা খনিজের এই ট্যাবলেটগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে খেতে হয়। কিন্তু এই ভিটামিন ট্যাবলেট আর খাবার থেকে পাওয়া ভিটামিন কী একই? বিশেষজ্ঞরা দুঃখের সঙ্গে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। ওষুধের দোকান থেকে কেনা এই ভিটামিনগুলো আসলে সিনথেটিক। এর সম্পর্কে আমাদের কিছু তথ্য না জানলেই নয়।
অধিকাংশই জানেন না, ভিটামিনের যে ওষুধগুলো বাজারে বিক্রি হচ্ছে তার শতকরা ৯৫ ভাগের বেশি আপনার জন্যে ক্ষতিকর। কারণ, এসব ভিটামিনের ৯৫ শতাংশের বেশিই প্রাকৃতিক ভিটামিন নয়। এসবই সিনথেটিক ভিটামিন। তাই এ বিষয়ে সবারই সচেতন হওয়া জরুরি।
সিনথেটিক ভিটামিন গবেষণাগারে রাসায়নিক উপাদানের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়।
হয়তো ভাবতে পারেন যে, নামি ব্র্যান্ডের উন্নত ভিটামিন কিনে খেলে ক্ষতি কী? এসব ওষুধ তো খোদ বিশেষজ্ঞরাই দিয়ে থাকেন। আপনার চিন্তা ভুল নয়। অসুখ-বিসুখে বা ভিটামিনের চাহিদা পূরণে বিশেষজ্ঞরা যে ভিটামিন দিয়ে থাকেন, সেগুলো সিনথেটিক হওয়ার সম্ভাবনাই অনেক বেশি।
আপনি নিশ্চয়ই 'সেন্ট্রাম' এর মতো বিশ্বের সেরা ব্র্যান্ডের ভিটামিন খেয়েছেন কিংবা কাছের কাউকে খেতে দেখেছেন। অন্তত এটার নাম তো শুনেছেন। আমাদের দেশে 'উন্নত বিদেশি ভিটামিন' হিসাবে কদর আছে এর। জানলে অবাক হবেন, এটিও সিনথেটিক ভিটামিন। সরাসরি তাদের ওয়েবসাইটে গেলেও কিছু তথ্য মিলবে।
প্রাকৃতিক ভিটামিনটাকে যখন সিনথেটিক রূপে তৈরি করা হচ্ছে তখন অনেক সময় এদের নামও বদলে যায়। যেমন- ভিটামিন বি১২ এর সিনথেটিক অবস্থাকে বলা হয় 'সায়ানোকোবালামিন'। সত্যিকার অর্থেই এতে আছে সেই সায়ানাইড, যা এক মারাত্মক বিষাক্ত উপাদান। এই বিষ ভেতরে গেলে খুব দ্রুত বের করতে হয় লিভারের সমূহ ক্ষতি সামলাতে। আবার 'সায়ানোকোবালামিন' যখন ভিটামিন বি১২ এর সিনথেটিক অবস্থা, তখন 'মিথাইলকোবালামিন' তার প্রাকৃতিক অবস্থাকে প্রকাশ করে।
বাজারে হাজার রকমের ভিটামিন মেলে। উন্নত দেশের বাজারেও বিখ্যাত কম্পানির নামকরা ভিটামিনগুলোকে সিনথেটিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেমন- 'সেন্ট্রাম' ভিটামিনটি তৈরি করে ফাইজার। তেমনি 'ওয়ান ডে' প্রস্তুত করে বায়ার। এ সবই কিন্তু সিনথেটিক ভিটামিন।
ওষুধটা যেই প্রস্তুত করুক না কেন, সিনথেটিক ভিটামিন স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর। এ নিয়ে গুগলে সার্চ দিলেও অনেক তথ্য মিলবে। দু'একটির কথা এখানে বলা যায়। যেমন- 'সিনথেটিক ক্যালসিয়াম'র মতো অতি সাধারণ একটি ওষুধের কথা শুনুন। এটি হার্ট অ্যাটাক আর স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে বলে প্রমাণিত হয়েছে। কেবল এই সিনথেটিক ক্যালসিয়াম দুটো মারাত্মক শারীরিক অবস্থার ঝুঁকি ৩০ শতাংশের মতো বাড়িয়ে দিতে পারে।
এ নিয়ে মানুষ সচেতন নয়। গণমাধ্যমও এসব নিয়ে তেমন তথ্য দেয় না। আসলে তারাও ঠিকমতো বোঝে না সিনথেটিক এবং প্রাকৃতিক ভিটামিনের পার্থক্য। আর জানারই বা কী দরকার? এত চিন্তা না করে ভিটামিন আর খনিজের জন্য প্রকৃতির খাবারে নির্ভর করলেই তো হয়।
তবুও মানুষ এগুলো খায় এবং খেতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। একটা কারণ টানা যায়। যেমন- 'মিথাইলকোবালামিন' এর চেয়ে শত গুন কম দামে মেলে 'সায়ানোকোবালামিন'। দুটোই কিন্তু ভিটামিন বি১২। কিন্তু প্রথমটি অনেক দামি। আরেকটি বিষয় বিবেচ্য। সিনথেটিক ভিটামিনগুলো দীর্ঘ সময় দোকানের তাকে থাকতে পারে। সহজে নষ্ট হয় না। কিন্তু প্রাকৃতিক ভিটামিন খুব দ্রুত নষ্ট হতে পারে। আবার যে খাবারগুলো থেকে বিভিন্ন ভিটামিন সংগ্রহ করতে পারবেন, সে খাবারও তো অনেক দিন রাখা যায় না।
একটু সচেতন হয়ে ভাবুন, ভিটামিনের এই ওষুধগুলো কিন্তু কেবল আপনি নন, আপনার বাচ্চারাও খাচ্ছে। সত্যিকার অর্থে প্রকৃতিপ্রদত্ত ভিটামিন আর রাসায়নিক উপাদানে তৈরি সিনথেটিক ভিটামিনের মধ্যে বিস্তার পার্থক্য রয়েছে। প্রকৃতি আপনাকে নির্ভেজাল ভিটামিন-খনিজ দিচ্ছে। আর সিনথেটিক দিচ্ছে বিষাক্ত উপাদান। নিরাপত্তার জন্যে তাই কিছু শিক্ষা অর্জন অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ নিয়ে অনলাইনে সামান্য গবেষণাও চালাতে পারেন। অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে আসবে।
সূত্র : ইন্টারনেট
Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
https://www.medinewsbd24.com/?p=14029
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit