জেনারেল রাইটিং : অধরা ভালোবাসা
এখনো প্রতিষ্ঠিত হতে অনেক দেরি। মেয়েদের বাড়িতে প্রায় অনেক ঝগড়া ঝামেলা হয় বিয়ে নিয়ে। রাইমা তার ব্যতিক্রম ছিল না। তার বাড়ি তো একই প্রবলেম হত। তাও সে আমাকে ভালোবাসে বলে মুখ বুঝে বাড়ির সমস্ত কথা সহ্য করতো। রাত তখন সাতটা বাজে সে আমাকে ফোন দিয়ে বলল বাবু কোথায় আছো তুমি ? এইতো আমি ঘরে রয়েছি ঘরে বসে খেলা দেখছি। সামনে থেকে আওয়াজ শুনতে পারি কাঁদো কাঁদো স্বরে বলে তাড়াতাড়ি তুমি আমাদের বাড়িতে এসো।
আমি কোন কথা বলতে সে তাড়াতাড়ি ফোনটা কেটে দেয়। আমি তো ভয়ে তাড়াতাড়ি তাদের বাড়ি চলে যাই এবং গিয়ে দেখি অনেক কান্ড। রাইমা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে আর ওর মা দাদা মামা-মামী সবাই ঘরে রয়েছে। আমি কিছু না বুঝতে পেরে রায়মার মাকে জিজ্ঞাসা করি কি হয়েছে কাকিমা? ওর দাদা তখন বলে যারা আমাকে নিয়ে যা তোর সাথে ও আমাদের সাথে থাকবে না। রাইমা ও কাঁদতে কাঁদতে আমাকে বলে নিয়ে চলো আমাকে তোমাদের বাসায় আমি এখানে থাকবো না এরা আমাকে থাকতে দিচ্ছে না। আসলে ঘটনাটা ঘটে তার মায়ের সাথে কথা কাটাকাটি হতে হতে বড় ঝগড়া বেধে যায় এবং রাইমা ঘর থেকে সমস্ত জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল আমার কাছে আসার জন্য। সেটা দেখে তার দাদা থাকে দাঁড় করায় আর বলে আমাকে ফোন করতে। যখন আমি বুঝতে পারি জিনিসটা অনেক বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে তখন আমার মুখ থেকে কোন কথা বের হয়নি।
আমার বয়স তখন কুড়ি কোন কাজকর্ম করি না এখন যদি তাকে বাড়িতে বিয়ে করে নিয়ে যায় কি করে খাওয়াবো তাকে? আমি যতটা পারি আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করি কথাগুলো কিন্তু সে এই সমস্ত কোন কথা শোনার মেয়ে নয়। সে আমাকে বলে তুমি যদি আজকে না নিয়ে যাও আমি কিন্তু এখনই মরে যাব। আমি ভাবী সে রাগের মাথায় সেটা বলছে এবং তাকে এক ধমক দিয়ে চুপ করায়। রীতিমতো তখন কাঁদতে কাঁদতে চোখমুখ একদম লাল হয়ে যায় ।আমি বুঝতে পারিনা আমি কি করবো। রাইমা শেষবারের মতো জিজ্ঞাসা করে আমাকে, তুমি কি আমাকে নিয়ে যেতে পারবে? আমি কোন উত্তর না পেয়ে তাকে না বলে দি। হয়তো এই উত্তরটা সে আশা করেনি কখনো আমার কাছ থেকে তাই হয়তো সে ভেতর থেকে অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছিল।
কিছু না বলেছি আমার হাত ধরে আমাকে টানতে টানতে ঘর থেকে বার করে দেয়। নিজেকে অনেকটা ছোট লাগছিল, নিজেকে একজন পুরুষ বলতে লজ্জা লাগছিল কারণ আমি যাকে এতদিন ভালোবেসেছি তাকে বিয়ে করার ক্ষমতাই আমার নেই তাহলে আমি কি পুরুষ!! বাড়ি চলে আসি বাড়ি চলে এসে রাই মাকে ফোন করেই যাই করেই যাই কিন্তু তার ফোন সুইচ অফ ছিল। আমি ভেবেছি এখন তার ফোন হয়তো সুইচ অফ সে রাগের মাথায় করে রেখেছে কিছুক্ষণ পর হয়তো আবার খুলে দেবে এবং আগের মত সমস্ত কিছু ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আমি ভুল ছিলাম, কিছুক্ষণ পরেই রাইমার দাদা আমাকে কল দিয়ে বলে ভাই তুই এটা কি করলি? আমার বোন আর কি পৃথিবীতে নেই সে সুইসাইড করেছে। কথাটা শুনে আমার মাটির তলায় পা ছিল না। শুনা মাত্রই আমি ছুটতে থাকি তার বাড়ির দিকে , গিয়ে দেখি তার হাসিমুখ হয়ে বিছানায় শুয়ে রয়েছে। তার মা তাকে ধরে অঝোরে কাঁদছে, পাড়া-প্রতিবেশী লোক তাদের বাড়িতে জমায়েত বেঁধেছে। হয়তো কিছু ভালোবাসার পরিণতি এটাই হয়। কিছু ভালোবাসার অধরা থাকে সারা জীবন, কিছু ভালোবাসা মনে থাকে সারা জীবন।
এখন বয়স আমার ৭৮ বছর। নিস্তব্ধ ঠান্ডা পরিবেশে তার স্মৃতিগুলো যেন এখনো আমার মনে রয়ে গেছে। এখনো আমি অবিবাহিত, এই বয়সে এসে আমি ভাবি যে আমি যদি সেদিন তাকে নিয়ে চলে আসতাম আমাদের বাড়ি। তাহলে হয়তো আমাদের ভালোবাসাটা পরিপূর্ণ হতো। কিছু ভালোবাসা হয়তো এই ভাবেই অধরা হয়ে রয়ে যায়......💔
♥️আমার পরিচয়♥️
আমার নাম সুপ্রিয় লামা, আমার বয়স কুড়ি বছর। আমি একজন ভারতীয়। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি জেনারেল সাবজেক্ট নিয়ে গ্যাজুয়েশন পাস করি। বর্তমানে আমি একটা ফটো স্টুডিওতে এডিটর রূপে কাজ করি। আমি ব্লগ লিখতে খুব ভালোবাসি, ভ্রমণ, জিমেইল রাইটিং, বিভিন্ন ধরনের খবর, ক্রিপ্টো, ঐতিহাসিক বিষয়, বৈজ্ঞানিক বিষয়, বিভিন্ন ধরনের খেলা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আমি ব্লগ লিখতে ভালবাসি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit