একটা আলাে জ্বলছিল
একটা গুন্ডামার্কা পােকা এসে বলল,
‘এই বুকের হুক খােল, ঝাপ দেবাে’
আলাে বলল, ‘জোর নাকি?’
পােকা বলল, ‘আলবাত’
পােকা ঝাঁপ দিল, পাখা খােয়া গেল।
বলল পােকা, ‘আগুন এত বুঝি নরম!’
আলাে নিজেও খানিক পুড়ে বলল,
‘গুন্ডাগিরি শেষ? এই হয়েছে বেশ
এবার আজন্ম ঘর কর।’
রেল-কলােনির কাছে কৃষ্ণচূড়ার নীচে
হঠাৎ গজিয়ে উঠল ঘর,
ঘরের মধ্যে আলাে পােকার এক-পৃথিবী সংসার।
দশম মাসের পরে কৃষ্ণচূড়ার ডালে তখন আগুন
আলাে লাজুক হেসে বলল, ‘পুড়বি?’
পােকা বলল, ‘তাের পেটের মধ্যে সুজ্জি
এখন কেমন করে পারবি?’
আলাে বাড়িয়ে দিল হাত, পােকার আঙুল ছুঁল।
আঙুল ছুঁয়ে বলল, ‘কী ভালাে রে তুই
সুখে দুঃখে এমন আমায় জড়িয়ে নিয়ে রাখিস,
মরণ এলেও আমার হাতের আঙুল ধরে থাকিস।’
দেখল সবাই,
দেখল সবাই কৃষ্ণচূড়ার হাঁটুর কাছের ঘরে
দুটো জীবন বাঁচে আর বাঁচার জন্য মরে।
সবাই বলল বেশ ওরা ঘর বেঁধেছে।
সবাই বলল বেশ, ওরা ঘর বেঁধেছে।
আলাে শুনতে পেল।
আলাে শুনতে পেল রাস্তায় কারা ফিশফিশিয়ে বলছে,
‘পােকা যেমন প্রেমিক আলােও তেমন জ্বলছে।
প্রেমে জাত পােড়ে না পাত পােড়ে না পােড়ে অহম।
প্রেমে জাত পােড়ে না পাত পেড়ে না পােড়ে অহম।’
আলাে আনন্দে উদার।
আলাে আনন্দে উদার, পােকার বুকের মধ্যে গলছে,
কয়লার দারিদ্রে যেন হিরের কুঁচি জ্বলছে!
কৃষ্ণচূড়া দেখছে,
সব কৃষ্ণচূড়া দেখছে আর হাওয়ার কানে বলছে,
‘ওরা জ্বলুক, ওরা জ্বলুক,
এই মাংসখেকোর দেশে ওরা প্রেমের কথা বলুক।’