পানখিলি পিঠার রেসিপি।
আজ - ২৮ই, অগ্রহায়ণ |১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ
এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
আজ আমি আপনাদের সাথে পানখিলি পিঠার রেসিপি শেয়ার করব।
1000004722.jpg
কেমন আছেন সকালে? আশা করি ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে এসেছি নতুন ধরনের একটি পিঠা রেসিপি শেয়ার করতে।
শীতের পিঠা মানে অন্যরকম একটা মজা। সারা বছর ধরে কোন পিঠা না খেলেও এই শীতের সময় পিঠা না খেলে যেন শীতকাল বলে মনে হয় না। শীতকাল মানে নানা ধরনের পিঠা। পিঠা ছাড়া শীতকাল কল্পনা করা প্রায় অসম্ভব আমার পক্ষে। তাই তো ভালোভাবে শীত পড়তে না পড়তেই ইতিমধ্যেই কয়েক বার বিভিন্ন ধরনের পিঠা খাওয়া হয়ে গিয়েছে আমার।
যাইহোক, আজ যে পিঠার রেসিপিটি নিয়ে হাজির হয়েছি সেই পিঠাটিকে আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় বলে, পানখিলি পিঠা। আর এই পিঠার এরকম একটা নাম দেওয়ার কারণ হচ্ছে - এই পিঠাটি যেহেতু পাতা দিয়ে তৈরি করা হয় এবং এটি দেখতে কিছুটা পানের খিলির মত করে বানানো হয়। তাই পিঠার এরকম একটি নাম দেয়া হয়েছে ।
যাই হোক, এই পিঠাটি আমার খুবই পছন্দের। তবে এই পিঠা তৈরির পেছনে প্রচুর খাটনি রয়েছে। বিশেষ করে যারা শহরে রয়েছে তারা চাইলে চাইলে এটি তৈরি করতে পারে না। কেননা এই পিঠার মেইন যে দুইটির উপকরণ অর্থাৎ পাতা এবং শুকনো ঘাস বা খড়, এই দুইটি জিনিস জোগাড় করা খুব একটা সহজ নয়। আর আমার ক্ষেত্রেও পিঠা তৈরি এই এই উপকরণগুলো জোগাড় করতে অনেকটাই ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। আর পিঠা তৈরির জন্য পাতা এবং ঘাস জোগাড় করার নিয়ে লম্বা এক কাহিনী রয়েছে, সে কাহিনীটি দিয়ে একটা ব্লগ তৈরি করা যাবে চাইলে। যাইহোক এসব কাহিনীর দিকে আর যাচ্ছি না। পিঠের স্বাদ এর বিচারে এইসব ঝামেলা কিছুই না।
যাই হোক, কথা না বলে চলুন কিভাবে এই পিঠাটি তৈরি করেছি সেটা আপনার সাথে শেয়ার করি-
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
চালের গুঁড়া।
লবণ।
খেজুরের গুড়।
নারিকেল ।
কাঁঠাল পাতা ।
খাবার সোডা ।
ঘাস।
প্রস্তুত প্রণালীঃ
ধাপ-১ঃ
প্রথমে দুই কাপ এর মত চালের গুড়া নিয়ে নেব। এরপর খেজুরের গুড়ের সাথে অল্প পানি দিয়ে জ্বাল করে নিব। খেজুরের গুড় গুলোকে কিছুক্ষণ জ্বাল করার পর নামিয়ে কিছুক্ষণ ঠান্ডা করে চালের গুড়া গুলো এর মধ্যে দিয়ে দিব।
ধাপ-২ঃ
এরপর চালের গুড়া, খেজুরের গুড়, খাবার সোডা, এবং লবণ দিয়ে খুব ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পাতলা বেটার তৈরি করে নিব। এরপর তিন ঘণ্টার জন্য বেটারটিকে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দিব।
ধাপ-৩ঃ
একবার কাঁঠাল পাতা গুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে কোন এর মত করে তৈরি করে নিব।
ধাপ-৪ঃ
এবার কুচি কুচি করে নারকেল কেটে নিব।
IMG_20221213_181459.jpg
ধাপ-৫ঃ
এবার কুচিয়ে রাখে নাকের গুলো পূর্বে তৈরি করে রাখা বেটার এর মধ্যে দিয়ে দিব।
IMG_20221213_181659.jpg
ধাপ-৬ঃ
এরপর একটি বড় পাত্র নিয়ে নেবে এবং পাত্রের মধ্যে কিছু শুকনো ঘাস ও অল্প পরিমাণের পানি চুলাতে বসিয়ে দিব ।
IMG_20221213_181510.jpg
ধাপ-৭ঃ
এরপর ঘাসগুলোর মধ্যে পূর্বের কাঁঠাল পাতা দিয়ে তৈরি করে রাখা কোনগুলো বসিয়ে দিব।
IMG_20221213_182057.jpg
IMG_20221213_182049.jpg
ধাপ-৮ঃ
এবং একে একে করে প্রতিটি পাতায় পূর্বে তৈরি করে রাখার ব্যাটার গুলো দিয়ে দিব।
IMG_20221213_182217.jpg
ধাপ-৯ঃ
এরপর পাত্রের ঢাকনাটি খুব ভালোভাবে চাপা দিয়ে দিব যাতে একটুও ভাব সরে না যায়।
IMG_20221213_182254.jpg
ধাপ-১০ঃ
১৫ মিনিট পর ঢাকনা সরিয়ে, যখন দেখবে পিঠাগুলো অনেকটাই ফুলে উঠেছে এবং পাতার রং পরিবর্তন হয়ে এসেছে তখন বুঝে নিতে হবে পিঠাগুলো সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গেছে। তবে ভালোভাবে শিওর হওয়ার জন্য একটি টুথপিক সাহায্যে চেক করে নাওয়া যেতে পারে।
IMG_20221213_184133.jpg
ধাপ-১১ঃ
1000004723.jpg
সকলকে ধন্যবাদ।