বাংলা ২য় পত্র সহজে এ+ পাবার উপায়:
বাংলা ২য় পত্র এমন একটা সাবজেক্ট যেটাকে গনিতের সাথে তুলনা করা যায়। ভয় পাবার কিছু নেই, এটা গনিতের মত কঠিন না।গনিতের সাথে এজন্যই তুলনা করা হয়,কেননা গনিতে যেমন ফুল নাম্বার পাওয়া যায় এই বাংলা ২য় পত্রতেও ফুল নাম্বার পাওয়া যায়। বাংলা ১ম পত্রতে প্রতি বছরই মচক কঠিন হয়। তাই এই মচকের নাম্বারটা কভার করে দেয় এই বাংলা ২য় পত্র। একজন স্টুডেন্ট ইচ্ছে করলেই বাংলা ২য় পত্রতে খুব সহজে ৯০+ মার্ক ক্যারি করতে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে সেটা কীভাবে? হ্যাঁ,সেটা বলার জন্যই বাংলা ১ম পত্রের পর ২য় পত্র রিভিও নিয়ে আমি এসেছি তোমাদের কাছে। রিভিও দেওয়ার আগে বাংলা ১ম নিয়ে কিছু কথা! তোমাদেরকে ইতিমধ্যেই বলেছি বাংলা ১ম পত্র নিয়ে এখন আর ভাবার দরকার নেই! যারা রিটেনে আমি যেই নিয়ম বলে দিয়েছিলাম সেই নিয়ম অনুযায়ী লিখছো চোখ বন্ধ করে ৬০+ নাম্বার ধরে রাখো! মচক নিয়ে টেনশন? ১৫ তো পাবা? এনাফ! ৬০+১৫=৭৫! মোর দেন এনাফ! কেউ আজকে ওভারঅল ৭২+ পেলেই ধরে রাখো বাংলাতে তুমি এ+ পাচ্ছোই! কেনোনা এখনো কভার করে নেওয়ার জন্য সেকেন্ড পেপার আছে। আর যারা মচকের উত্তর নিয়ে ব্যাস্ত! তাদের বলি বোর্ডের দেওয়া উত্তর ছাড়া বাংলাদেশে এমন কেউ জন্ম নেয়নি যে তোমাদের প্রশ্নের ১০০% উত্তর দিবে। সুতরাং এসব আজগুবি উত্তর দিয়ে শুধু শুধু মাথা খারাপ করো না। আমাদের সময় বাংলা মচক অনেক বেশি কঠিন ছিল।এক্সাম দিয়ে এসে মন খারাপ ছিল। যেই সলিউশনের সাথেই মিলিয়ে দেখি ২৫/২৬ টার বেশি হয় না! কিন্তু যখন রেজাল্ট দিলো দেখলাম মচকেই আমার ৩৪ ছিল! সুতরাং এসব আজগুবি উত্তর খোঁজা বাদ দাও। বাংলা সব সময় কনফিউজড টাইপ হয়। টেনশন করো না। এক্সাম যা দিয়েছো আলহামদুলিল্লাহ্ বলো। সামনের এক্সাম নিয়ে ভাবো। এবার আসি ২য় পত্র রিভিও নিয়ে।
বাংলা ২য় পত্রে ফুল নাম্বার পাওয়ার জন্য তুমি কি পড়েছো সেটা ফেক্ট না! তুমি কতটা নিয়ম জানো সেটা ফেক্ট! বাংলা ১ম পত্রের মত এখানেও কিছু স্পেশাল নিয়ম আছে।সেই নিয়ম ফলো করে সুন্দর মত লিখে দিতে পারলেই চোখ বন্ধ করে ৯০+ নাম্বার পাবে। স্যার তোমার লেখা খুব কম দেখবে। স্যার দেখবে তোমার খাতার প্রেজেন্টেশন কেমন!বাংলা ২য় পত্র মানেই খাতার সৌন্দর্য্য। যার খাতার সৌন্দর্য্য যত বেশি সে তত বেশি নাম্বার পাবে।
ব্যাকরণ : ব্যাকরণে খুব সহজে ৩০ এ ৩০ পাওয়া যায়। কেনোনা এখানে গনিতের মত নাম্বার থাকে। ৫ টা পয়েন্ট দিবা! ৫ এ ৫ দিতে বাধ্য! আর ব্যাকরণ কোনগুলা আসবে সেগুলা একটু দেখলেই বুঝা যায়! তাও কিছু ইম্পরট্যান্ট গুলা ভাইয়া দিয়ে দিচ্ছি।
১ নং: এখানে মূলত উচ্চারণ লিখতে বলে! এ/ব/ম ফলার উচ্চারনটা বেশি ইম্পরট্যান্ট!
২ নং: এখানে মূলত বানানের নিয়ম আসে। এখানে চার-পাঁচটা নিয়ম পড়লেই এনাফ! বাংলা একাডেমি প্রমিত,বাংলা বানানের আধুনিক,অতৎসম, ষ-ত্ব বিধানের ৫ টি নিয়ম। এই চারটা পড়লেই ৫ মার্ক খুব সহজভাবে ক্যারি করা যাবে।
৩ নং: এখানে মূলত পদ রিলেটেড প্রশ্ন থাকে। বিশেষ্য, বিশেষণ,ক্রিয়া,সর্বনাম,যোজক এই চার/পাঁচটার শ্রেণিবিন্যাস,শব্দের উৎস্যগত,অর্থগত শ্রেণীবিন্যাস পড়লেই এখানে খুব সহজে ৫ নং ক্যারি করা যাবে।
৪নং: এখানে সমাস,প্রতেয় বা উপসর্গ থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি। উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই কিন্তু অর্থনোতকতা আছে এটা খুবই ইম্পরট্যান্ট।
৫ নং: এখানে মূলত বাক্য নিয়ে প্রশ্ন আসে। এখানে দুইটা জিনিষ পড়লেই খুব সহজে ৫ নাম্বার পাওয়া যাবে।
*বাক্য কাকে বলে? অর্থ/গঠন অনুসারে বাক্যের শ্রেণীবিন্যাস আলোচনা করো।
*সার্থক বাক্যের গুনাবালি আলোচনা করো।
৬ নং: এখানে শুদ্ধ বানান লিখতে হবে। এটা মূলত বিভিন্ন বোর্ডে আসাগুলা,আর কিছু টপ কলেজের আসাগুলা দেখে নিলেই এনাফ। কেউ ইচ্ছে এই ছয় আইটেমগুলার অথবাগুলাও দিতে পার। যার যার ইচ্ছা।
ব্যাকরণ সাইটে এগুলা পড়লেই আশা করা যায় ৩০ এ ৩০ পাবে। তবে তোমরা এত্তদিন ব্যাকরন সাইড যা পড়ছো সেগুলা পড়ে নিও। বিশেষ করে যেগুলা বোর্ডে বহুবার এসেছে সেগুলাই ইইম্পরট্যান্ট। আর এগুলা একটু বেশি জোড় দিয়ে পড়ে যাবা। ইনশাআল্লাহ ৩০ এ ৩০ পাবাই।
এবার আসি রিটেন পার্ট নিয়ে:
রিটেন পার্ট এমন একটা বিষয় যেখানে কতটুকু পড়াশুনা করেছো সেটা বিষয় না। কতটুকু সাজিয়ে লিখেছো সেটাই মেইন! একটু সুন্দরভাবে লিখলেই এখানে ৭০ এর মধ্যে খুব সহজে ৬০+ মার্ক ক্যারি করা যায়।
*অনুবাদ/পারিভাষিক শব্দ: এখানে মূলত যার যেটা কমন আসে সেটা লিখবে। কারো অনুবাদ কমন আসলে সেটা দিয়ে দিবে। পারিভাষিক শব্দ কমন আসলে সেটা দিবে। এখানে খুব ভালোভাবে লিখলেই অনুবাদে স্যার ৯ দিতে বাধ্যে।
*অভিজ্ঞতা/দিনলিপি: দুটোই খুব সহজ আর মজার। এটা আসলে পড়তে হয় না। নিজের মত যা চাইবে খুব সুন্দরমত লিখা যায়। দিনলিপির আরেক মিনিং ডায়েরী। এটা প্রথমে উপরে তারিখ দিয়ে দুই পাতার মত লিখবা। এনাফ!বইতে নিয়ম দেওয়া আছে। দেখে নিও।দিনলিপিতে কোন টাইমে কি করেছো সেটা উল্লেখ করে দিবা।স্যারে ফুল নাম্বার দিতে বাধ্যে।
এটার বিপরীতে ভাষনন/প্রতিবেদন দেওয়া যায়! সেগুলা ইগ্নোর করাই ভালো। কজ ঝামেলার অনেক। এগুলা থেকে দিনলিপি আর অভিজ্ঞতা বর্ননাই সহজ।
*ক্ষুদে বার্তা/ইমেইল: এই দুইটা সব থেকে মজার। কিছুই পড়ত্র হবে না। জাস্ট নিয়ম অনুযায়ী কতটা সুন্দরভাবে লিখতে পারো সেটাই মেইন! এই দুইটা বক্স আকারে লিখলে স্যার ১০ এ ১০ দিতে বাধ্যে হবে। এই দুইটার সিম্পল তৈরি করে আমি কমেন্টে দিবো। দেখে নিও। জাস্ট ওই নিয়ম অনুযায়ী লিখলেই ১০ এ ১০ দিবে। এখানে গনিতের মত ফুল নাম্বার পাওয়া যায়।
*সারমর্ম /ভাবসম্প্রসারন: সারমর্ম কমন আসলে আর কিছু চিন্তা না করে সেটা লিখে দিবা। অনেক টাইম বেঁচে যাবে। আর যদি কমন না আসে ভাব-সম্প্রসারন লিখবা। সারমর্ম পাঁচ লাইনের মধ্যে লেখার চেষ্টা করবা।
*সংলাপ/ক্ষুদে গল্প : এটাও অনেক মজার। সংলাপ মানেই ইংরেজির ডায়লোগ,ক্ষুদে গল্প মানে ইংরেজির স্টোরি! যে যেটা ভালো পারে দিবা। তবে সংলাপ দেওয়াই ব্যাটার। মিনিমাম দুই থেকে আড়াই পাতা লিখবে।
*রচনা: এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রচনা দুইভাবে লিখা যায়। পয়েন্ট দিয়ে আর প্যারা দিয়ে। যে যেইভাবে লিখে অভ্যাস্ত সেভাবে লিখবে
তবে পয়েন্ট আকারে দিলে প্রথম পেজে অবশ্যই মিনিমাম ১৮-২০ টা পয়েন্ট বক্স করে দিবা। দেন পরবর্তীতে পয়েন্টগুলা লেখার দরকার নেই। পয়েন্ট বাই পয়েন্ট প্যারা দিয়ে লিখে যাবা। অন্তত ১৮-২০ পাতা লিখবা মানে ৯-১০ পেজ। তাহলে স্যার মিনিমাম ১৭-১৮ নাম্বার দিবে। স্যার রচনা দেখবে না। শুধু দেখবে কতটুকু ভালো গুছিয়ে লিখছো। পয়েন্টগুলা খুবই ইম্পরট্যান্ট। যত বেশি পারো পয়েন্ট বানাবা। এক্ষেত্রে যেই রচনায় বেশি পয়েন্ট বানানো যায় সেগুলা লিখবা।
প্রশ্ন থাকতে পারে এত কিছুর টাইম কই এখন? শুনো,এখন তোমরা বেশি বেশি ব্যাকরন সাইড+সারমর্ম+অনুবাদ/পারিভাষিক এই তিনটা বেশি বেশি পড়ো। বাকিগুলা খুব একটা পড়তে হয় না। জাস্ট নিয়ম জানা থাকলেই চোখ বুঝে ইচ্ছেমত লিখা যায়। নিয়মটা ইম্পরট্যান্ট। আর ব্যাসিক তৈরি করার জন্য বই থেকে জাস্ট আইটেমগুলার রুলস আর দুই তিনটা জিনিষ রিডিং দিয়ে দেখে যাবা। রচনার জন্য পয়েন্টগুলা গুছিয়ে নাও! ইমেইল/ক্ষুদে বার্তা/সংলাপ এগুলা পড়ার কিছু নাই। পুরোটাই নিয়ম জানলে ফুল নাম্বার পাওয়া যায়।
ব্যাকরণ+অনুবাদ/পারিভাষিক শব্দ এই দুই আইটেমের জন্য ৫০ মিনিট ধরে নিবা। রচনার জন্য পাক্কা ১ ঘন্টা হাতে রাখবা। অন্তত-৫০ মিনিট। আর বাকি সময়টুকু ওগুলার পিছনে।
টেনশন করো না। আগে কি হয়েছে সেটা ভুলে যাও। সামনের এক্সামের কথা ভাবতে হবে। আজকে রাতটা একটু কষ্ট করে বেশি পড়ার চেষ্টা করো। আগামীকালের প্রশ্ন দেখবা খুব সহজ আসছে। একটু ভালোভাবে আজকে প্রিপ নিলেই দেখবা কাল খুব ভালো এক্সাম দিয়ে বের হবে। আজকের যার যত মার্কস কম থাকবে কাল এক্সাম দিয়ে সেটা কভার করে নিবা। আর মচকের সলিউশন খুঁজা বাদ দাও প্লিজ! এখন এসব আজগুবি উত্তর দেখে মনে হবে আল্লাহ! আমিতো ফেইল করবো! কিন্তু না কিছুই হবে না। বরং দেখবা ভালো করছো! ট্রাস্ট মি। শুধু শুধু টেনশন করো না এগুলা ইগ্নোর করো।যেটা চলে গেছে সেটা নিয়ে ভাবার টাইম নাই। এখন পরেরগুলা ভালোভাবে দিতে হবে। আল্লাহ আছে তোমাদের সাথে।
এক্সাম ভালো হবেই। ইনশাআল্লাহ।
দেখা হবে ইংলিশ,আইসিটি&সায়েন্সের রিভিওতে।
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!