ধপাস করে পড়েছিলাম !
হাহাহাহা !
প্রেমে পড়ার যদি সত্যিই কোন শব্দ হতো তাহলে দু'বার শব্দ পাওয়া যেতো। একটা প্রেমে যে কীভাবে পড়েছিলাম সেটা সেই মানুষটি দূরে চলে যাওয়ার পরে বুঝেছিলাম যে ওটা প্রেম ছিল। তবে হ্যাঁ, আমরা খুব ভালো বন্ধু ছিলাম। সেই অর্থে আমার এই প্রেমটি প্রগাঢ় বন্ধুত্বের হাত ধরে এসেছিলো।
পরের প্রেমে পড়াটি বেশ অদ্ভুত। আমার জন্য পারিবারিকভাবে পাত্র খোঁজা হচ্ছে। আমার কাছে মাঝেমধ্যেই নানান বায়োডাটা আসছে। আমারটাও যাচ্ছে। এমন একটা সময় একজনকে আমি এবং আমার পরিবার বেশ পছন্দ করলাম। ওনাদের জানানো হল। ঠিক হল আমাদের একটা রেস্টুরেন্টে দেখা হবে। নির্ধারিত সময়ের কিছু আগে আমি আমার চাচা চাচি সহ ওই রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসেছি। আমরা বসেছিলাম দরজার দিকে মুখ করে। আমি দূর থেকে ওনাদের আসতে দেখলাম। কাঁচের দরজা ঠেলে প্রথমে একটি ছেলে ঢুকল তারপর ওনার সাথের সবার ঢোকা পর্যন্ত দরজা খুলে ধরে রাখল। দৃশ্যটা এতো মোহময় ছিল যে আমি মনে মনে ছেলেটিকে পছন্দ করে ফেললাম। আমি দেখছি ওনারা আমাদের খুঁজতে আশেপাশে তাকাচ্ছেন। আমার চাচা ওনাদের এগিয়ে নিয়ে আসলেন। এবারো ওই ছেলেটি প্রথমে তার মায়ের এবং বড় বোনের চেয়ার পেছনে টেনে বসতে সাহায্য করলো, তারপর নিজে বসলো। শেষের ব্যাপারটা আমার চাচিও খেয়াল করলেন এবং আমাকে ইশারায় বোঝালেন যে জিনিসটা তারও পছন্দ হয়েছে। কথা বলতে যেয়ে দেখলাম তিনি খুবই স্বল্পভাষী কিন্তু খুব গুছিয়ে কথা বলেন যা আমার বিপরীত। ওই অল্প সময়ের আলাপনে এরকম আরও অনেক বৈপরীত্য খুঁজে পেলাম তার আর আমার মধ্যে। আমরা বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। কিন্তু ওনার ওই দরজা খুলে রাখা আর মাকে আদর করে চেয়ারে বসতে সাহায্য করার মধ্যে যে মায়া আর আন্তরিকতার ছায়া আমি দেখেছিলাম সেটা কিছুতেই মাথা থেকে যাচ্ছিলো না। আমার কাছে কেবলই মনে হচ্ছিলো যেই মানুষ নিজের পরিবারকে এতো মায়া করতে পারে তার কাছে আমি অবশ্যই সম্মানে থাকবো। জানি না কীভাবে বা কী বোধ থেকে এই উপলব্ধি আসছিলো!
তবে আমার ধারণা একদমই ভুল ছিল না। তিনি এখন আমার শাশুড়ি, ননাস এবং আমার জন্য একই আন্তরিকতার সাথে দরজা খুলে ধরেন এবং আমাদের নিরাপদে বসিয়ে তিনি বসেন।