চোখের সংক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচাবেন যেভাবে

in banglanews •  21 hours ago 

10-1.webp

লিংক

শীত গিয়ে এসেছে বসন্ত। কিন্তু দেশের কোথাও কোথাও এখনও মাঝেমধ্যে শীতল বাতাসের সংস্পর্শে শিউরে ওঠে শরীর। হঠাৎ করে চোখে ঠাণ্ডা অনুভূত হতে থাকে। আর ঠাণ্ডার স্পর্শে চোখে শুরু হয়ে যায় জ্বালাপোড়া, এমনকি চোখ ফুলে লালও হয়ে যায় কখনও কখনও, অনবরত পানি ঝরতে থাকে। এমন অবস্থায় কেউ কেউ ভুগে থাকেন কনজাঙ্কটিভাইটিস সমস্যায়। এ সংক্রমণের কারণেও চোখ কড়কড় করে, চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। তাই এ সময়ে চোখের একটু বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।

যে কারণে হয়ে থাকে : বসন্তকালেও বাতাসে দূষিত কণার পরিমাণ কিছুটা থেকেই যায়। ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া, ক্ষতিকর ছত্রাকদের চোখ রাঙানিতেই চোখের মণির চারপাশে লাল হয়ে যায়। একইসঙ্গে অনবরত পানি পড়া, জ্বালা-যন্ত্রণা, পিচুটি, চুলকানিÑ সব মিলিয়ে বড় কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়! বাতাসের জলীয় কণায় ভর করে ভেসে বেড়ায় অনেক ভাইরাস। আর এসবের মধ্যে শক্তিশালী হলো অ্যাডিনো ভাইরাস, যা চোখে সংক্রমণ ঘটিয়ে থাকে। এতে চোখের কর্নিয়ায় ছোট ছোট দানা তৈরি হয়। এর ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়, চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়তে থাকে। তাছাড়া ড্রাই আইজের সমস্যাও এসময় মানুষকে খুব ভোগায়।

চিকিৎসা ও পরামর্শ : শীতল বাতাসের মধ্যে বাইরে বেরোলে সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। এমন রোদচশমা বেছে নিতে হবে, যাতে চোখের পাশ, বাইরের দিক ঢাকা থাকে। ধুলোবালি বাঁচিয়ে চলাচল করতে হবে। এসময় খুব বেশি ভিড়ে না যাওয়াই উত্তম। যদি মনে হয় চোখ কড়কড় করছে, চোখ থেকে আঠালো তরল পদার্থ বের হচ্ছে, তা হলে দেরি না করে চক্ষুরোগের চিকিৎসককে দেখাতে হবে। চোখ জ্বালাপোড়া করলেও বারবার হাত দিয়ে কচলানো যাবে না। এতে হাতের ময়লা চোখে গিয়ে ক্ষতি যেমন হয়, তেমনই চোখের রক্তজালিকা ছিঁড়ে গিয়ে বিপদ বাড়িয়ে তুলতে পারে। চোখ ফুলে গিয়ে ব্যথা হলে গরম সেঁক দিতে হবে। তাপ লাগলে সেখানকার রক্তনালির প্রসারণ হবে, রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে। যদি রক্ত জমাট বেঁধে থাকে, তা হলে তা ছেড়ে যাবে। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হলেই ফোলা ভাব কমে যাবে। যন্ত্রণাও অনেকখানি কমে আসবে।

ড্রাই আইসের সমস্যা হলে আই ড্রপ দিলে অনেকটা উপকার পাওয়া যাবে। তবে কী ধরনের আই ড্রপ চোখে দিতে হবে, তা জেনে নিতে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এক্ষেত্রে নিজে নিজে ওষুধের দোকান থেকে ড্রপ এনে ব্যবহার করবেন না। তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। চোখে নানা ধরনের রোগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপদান হলো- একটানা মোবাইল, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের পর্দায় চোখ রাখা। এ কাজটি মনের ভুলেও করবেন না। কারণ চোখেরও বিশ্রাম প্রয়োজন। একটানা চোখ দিয়ে দেখলে চোখের পরিশ্রম বেড়ে যায়, তাতে চোখের ক্ষতি হয়। এ কাজটি তাই করা যাবে না।

নানা সমস্যা থেকে চোখকে বাঁচাতে হলে মেনে চলতে পারেন ২০-২০-২০ নিয়মটি। এই নিয়মানুসারে ২০ মিনিট একটানা পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার পর অন্তত ২০ সেকেন্ড ২০ ফিট দূরত্বের কোনো বস্তুর দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। পাশাপাশি, বারবার চোখের পলক ফেলতে হবে। এ কাজের মাধ্যমে চোখ ভালো রাখতে পারেন।
News Link

এ ছাড়া পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। শরীর ডিহাইড্রেড হলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। পানি পানের পাশাপাশি গরম স্যুপ, ডিটক্স পানীয় খেতে হবে নিয়ম মেনে। একইসঙ্গে ভিটামিন এ, সি, ই, জিঙ্ক, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি, মৌসুমী ফল, টাটকা মাছ খেতে হবে। ছোট মাছ চোখের জন্য খুবই উপকারী। ভিটামিন-সি আছে- এমন ফল খাবেন বেশি করে। পেঁয়ারা, মুসম্বির রস খেতে পারেন। নিজের তোয়ালে, বালিশ বা প্রসাধনী অন্য কারও সঙ্গে ভাগ করবেন না। বিশেষ করে অন্যের ব্যবহার করা কাজল, মাস্কারা, আইলাইনার ইত্যাদি প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করবেন না। তাতে আপনার চোখ ভালো থাকবে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...