বিশ্বদীপ ব্যানার্জী: দুর্গাপূজা বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব।
কে শুরু করলেন এই দুর্গাপূজা? এই প্রশ্নের উত্তরে ৯০ শতাংশ মানুষ বলবেন, শ্রীরামচন্দ্র। উত্তরটি একেবারেই ভুল। ত্রেতাযুগে রামচন্দ্র রাবণ বধের উদ্দেশ্যে শরৎকালে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন কিন্তু তা ছিল অকাল। সেটাই অসময়ের পূজা। দুর্গাপূজা চলে আসছে অনেক আগে থেকেই।
শ্রী রামচন্দ্র শরৎকালে অকালে দেবীর আরাধনা করেন।
তাই একে শারদীয় দুর্গোৎসব বলা হয়। আগে শুধু চৈত্র মাসে অর্থাৎ বসন্ত মাসেই মায়ের পূজা হতো। ফলে দেবীর অপর নাম বাসন্তী। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, রাজা সুরথ, সমাধি নামে এক বৈশ্যের সাথে বসন্তকালে ঋষি মেধসের আশ্রমে একটি মূর্তি স্থাপন করে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন। রাজা তার রাজ্য হারালেন। তিনি তার রাজ্য ফিরে পেতে তার মায়ের উপাসনা করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। ধীরে ধীরে এই পুজো বাসন্তীপুজো নামে পরিচিতি পায়। এছাড়া এই পূজার ঐতিহাসিক গুরুত্বও রয়েছে। বসন্তকাল প্লেগের সময়। প্রাচীন মানুষ বসন্তের অসাধ্য রোগ থেকে মুক্তি পেতে বাসন্তী পূজা করত।
দুর্ভাগ্যবশত, বাঙালি সেই বাসন্তী পুজো ভুলে গেছে। শারদীয়া দুর্গাপূজা বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব।
পুরনো পুজোকে কাটিয়ে এখন থিমের ছড়াছড়ি। তবে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বাসন্তী পুজো এখনও বারোয়ারির স্তরে পৌঁছায়নি। দু-একটা ক্লাব বা পাড়া এটা করতে পারে কিন্তু যতই পুজো হয়, বেশির ভাগই বনেদি বাড়িতে।