ছোট বেলার সকালের নাস্তা ।। জাউ-ভাত

in breakfast •  last year 

গ্রাম অঞ্চলের প্রায় হারিয়ে যাওয়া একটি সকালের নাস্তা হলো জাউ-ভাত। আমরা যখন অনেক ছোট ছিলাম তখন নানী-দাদী কিংবা মা-জেঠিরা প্রায়দিন সকালবেলা এই নাস্তাটা তৈরি করতো। আমিও ওনাদের মতো মাঝে মধ্যে সকালে এই নাস্তাটা তৈরি করি। আজও আমি এই নাস্তাটা তৈরি করেছি।

আগে গ্রাম-অঞ্চলে এই রান্নাটা করা হতো অভাবের জন্য। আর বর্তমানে কেউ যদি এই রান্নাটা করে তাহলে শখে বা ইচ্ছে থেকে করে।

জাউ-ভাত.JPG

ছোট বেলায় না জানলেও এখন জানি, বাংলাদেশী বাঙ্গালীদের জীবনের শেষ খাবার হচ্ছে এই জাউ-ভাত। কোন বাঙ্গালী স্বাভাবিক ভাবে যদি বার্ধ্যকে চলে যান কিংবা মৃত্যুর জন্য আপেক্ষা করেন তখন তার শেষ খাবার হয় এই জাউ-ভাত। এই ধারাবাহিকতায় কেউ রোগে পড়লেও এই ঝাউ-ভাত খেয়ে থাকেন। এর প্রধান কারন হলো জাউ-ভাত সহজে হজম করা যায় এবং শরীরেও পুষ্টি যোগায়।

উপকরনঃ (সকালের নাস্তায় ৫ জনের জন্য, অনুমানিক)
–আতপ চাল, ২৫০ গ্রাম
– পিয়াজকুচি, ১ টা
– কাঁচা মরিচ, ৪ টা
– লবন, স্বাদ মত
– তেজপাতা, ২/৩ টা
– পানি, কম বেশি দুই লিটার (হাড়ির আকার বুঝে)

প্রথমে আতপ চাল পরিস্কার করে ধুয়ে নিতে হবে।

ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে.JPG

পাতিলের পানির সাথে ২/৩ টা তেজপাতা দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিতে হবে।

চাল ধুয়ে নিতে হবে.JPG

এর মধ্যে একটি পিয়াজ কুচি ও সাথে সুন্দর সুগ্রানের জন্য ৪ টা কাঁচা মরিচ দিয়ে দিতে হবে। তারপর পরিমান মত লবন দিয়ে নেড়ে দিতে হবে। যাতে করে চাউলগুলো জমাট বেঁধে না যায়। যেহেতু আপত চাউল তাই জমাট বেঁধে যেতে পারে। জাউ-ভাতে মাড় ফেলা হবে না তাই ভাত খুব ভালো করে সেদ্ধ করতে হবে। ভাত ভালো করে সিদ্ধ হলে ও পানি কমে গেলে নামিয়ে নিতে হবে।

জাউ.JPG

জাউ-ভাত মরিচ ভর্তা দিয়ে গরম গরম খেতে সব থেকে মজা। একদিক দিয়ে ধোঁয়া উঠতে থাকবে অন্য দিক দিয়ে খেতে হবে। তাতে একটু জিভ পুড়লেও ক্ষতি নেই।

কাঁচা মরিচ ভর্তা রেসিপিঃ

উপকরনঃ
কাঁচা মরিচ – ১৫ টি
পিঁয়াজ কুচি – হাফ কাপ
রসুন – ৩ কোয়া
লবণ – স্বাদমতো
সরিষার তেল – ১ টেবিল চামচ

কাঁচা মরিচগুলো ভালো করে ধুয়ে একটি লোহার শিকে গেথে আগুনে জ্বলসে নিতে হবে। যাতে করে একটু পোড়া পোড়া হয়। মরিচ এমন করে পুড়িয়ে ভর্তা করা হলে ভর্তার স্বাদ অনেকটাই বেড়ে যায়। মরিচগুলো পুড়া হয়ে গেলে এগুলো শিক থেকে খুলে একটা বাটিতে নিয়ে পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। যাতে করে উপরের কালি ভাবটা চলে যায়।

এবার ধুয়ে রাখা মরিচগুলো শীল-পাটায় মিহি করে বেটে নিতে হবে। এর সাথে কুচি করে রাখা পিঁয়াজ ও ৩ কোয়া রসুন দিয়ে আবারও ভালো করে বেটে নিতে হবে। পিঁয়াজ ও রসুন কাঁচা নিবেন। কারন মরিচ বাটায় কাঁচা পেয়াজ, রসুন দিলে বেশি ভালো লাগে।সব উপকরন ভালো করে বাটা হয়ে গেলে স্বাদ মত লবন ও সরিষার তেল মিশিয়ে একটি পাত্রে উঠিয়ে রাখতে হবে।

কাঁচা মরিচ ভর্তা.jpg

শুকনা মরিচ ভর্তা রেসিপিঃ

উপকরণঃ
শুকনা মরিচ – ৮ টি
পেঁয়াজ কুচি – হাফ কাপ
রসুন – ৩ কোয়া
লবণ – স্বাদমতো
সরিষার তেল – ১ টেবিল চামচ

প্রথমে শুকনো মরিচ সাথে কিছুটা লবন দিয়ে মিহি করে বেটে নিতে হবে। এবার কুচি করে রাখা পিঁয়াজ ও ৩ কোয়া রসুন দিয়ে আবারও ভালো করে বেটে নিতে হবে। শুকনো মরিচের ক্ষেত্রেও পিঁয়াজ, রসুন কাঁচা নিবেন। সব উপকরনগুলো ভালো করে বাটা হয়ে গেলে সরিষার তেল মিশিয়ে একটি পাত্রে উঠিয়ে রাখতে হবে।

শুকনা মরিচ ভর্তা.jpg

#Traditional-Food #Bangaliyana #Bangladesh #Food

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!