ফোটোগ্রাফি পোস্ট : "বাংলাদেশের পুজো -১৩"

in cn •  last year 

ফোটোগ্রাফি পোস্ট : "বাংলাদেশের পুজো -১৩"

FUkUE5bzkAZSUQtscsBsFx5imG6WU3gSfePkK5Gond6i72K4mUMfisYSBtqLQhajQGC4VJ6Y6MJM8rk3zE79aDVWz1opF5XKNubXnueFLx9qBsL2cnQzx8QeX6byeu1qXfZDaVwLM2PhCVtWX1sjYaGLYTBXAocU2Wez.jpeg

কুম্ভকর্ণের নিদ্রাভঙ্গ । রাবণের ভাই কুম্ভকর্ণ । একদা রাবণ তার অপর দুই ভাই বিভীষণ ও কুম্ভকর্ণের সাথে মিলে এক ভীষণ তপস্যা শুরু করে ব্রহ্মার নিকট । সেই ভীষণ তপস্যার জেরে ব্রহ্মা প্রমাদ গণলেন । রাবণ ছিল ভয়ানক অত্যাচারী আর দুস্টু রাক্ষস । কুম্ভকর্ণ ছিল অমিত শক্তিশালী আর ভীষণ পেটুক । তপস্যা শুরু আগে সে মাত্র এক কয়েকটি দিনের মধ্যে একটি বনের সমস্ত পশু পাখি মায় মুনি ঋষিদের পেটে পুরে ফেলেছিলো । তবে, বিভীষণ ছিল যথার্থই ধার্মিক । তাই তিন ভাইই যখন অমরত্বের জন্য ব্রহ্মার নিকট কঠোর তপস্যা শুরু করেন তখন ব্রহ্মা সহ সকল দেবগণ ভয় পেয়ে যান । শেষমেশ উপায়ন্তর না দেখে ব্রহ্মা দেবী সরস্বতীকে আদেশ করেন কুম্ভকর্ণের জিহ্বাগ্রে বসার জন্য । যাতে নিজে থেকে কুম্ভকর্ণ অমরত্বের বর চাইতে না পারে । সেই রূপ কাজ হয়ে গেলো । প্রথমে ব্রহ্মা রাবণকে বর দিতে এলেন । রাবণ অমরত্বের বর প্রত্যাশা করলেন । ব্রহ্মা তখন কৌশলে বর দিলেন - দেবতা, যক্ষ ও রাক্ষসদের মধ্যে কারো হস্তেই তার মৃত্যু হবে না । ব্রহ্মা শুধু মানুষের কথা তুললেন না, রাবণ ভেবে দেখলো যেখানে দেবতা, যক্ষ ও রাক্ষস তাকে মারতে পারবে না সেখানে তুচ্ছ মানুষ কি করে তাকে মারবে ? মানুষ তো তার খাদ্য । তাই সে এই বরেই রাজি হয়ে গেলো । আর পরবর্তীতে সেই তুচ্ছ মানুষই হলো তার মৃত্যুর কারণ । মানুষ রামের হাতেই রাবণের মৃত্য হয়েছিল । যাই হোক যে কথা বলছিলাম - কুম্ভকর্ণের পালা এলে সে যতই অমর হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করতে যায় ঠিক তখনি তার জিভে বসা দেবী সরস্বতী অন্য কথা বলেন । শেষমেশ কুম্ভকর্ণের জিভে ভর করা সরস্বতী ব্রহ্মার কাছে এই বর প্রার্থণা করলো যাতে সে ৬ মাস ঘুমিয়ে মাত্র ১ দিন জেগে থাকে । আর প্রত্যেক ৬ মাস পরপরই মাত্র একটি দিনে আহার করে । সেই একটি দিন সে অমর থাকবে এবং কেউ তাকে সেই দিনটিতে পরাজিত করতে পারবে না । সেই মতো কুম্ভকর্ণ টানা ৬ মাস ঘুমিয়ে ১ মাস জেগে থাকতো । কিন্তু, রাম-রাবণের যুদ্ধের সময় যখন এক এক করে রাবণের সব সেনাপতি মারা পড়লো তখন কোনো উপায়ন্তর না দেখে রাবণ কুম্ভকর্ণকে জাগাতে বললো । তখনও কিন্তু ৬ মাস পূর্ণ হয়নি । ফলে, তাকে জাগানো ভীষণ কষ্টসাধ্য ছিল । ৫০০ রাক্ষস মিলে ঢাক, ঢোল, করতাল, বাঁশি, সানাই, কড়া-নাকাড়া বাজিয়ে তারপরে তার সেই ভীষণ ঘুম ভাঙিয়ে তাকে জাগায় ।অসময়ে ঘুম ভেঙে শেষমেষ কুম্ভকর্ণ রামের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে মারা পড়ে ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ৫০ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।

Screenshot_20231110234229.jpg

Screenshot_20231110234233.jpg

Screenshot_20231110234238.jpg

Screenshot_20231110234244.jpg

পঞ্চতত্ত্ব । পঞ্চতত্ত্বটা আসলে বৈষ্ণব ধর্মে বর্ণিত বিশেষ পাঁচটি অবতারের সম্মিলিত রূপকে ব্যাখ্যা । পঞ্চতত্ত্ব অনুসারে পঞ্চদশ শতকে পৃথিবীতে কৃষ্ণের পাঁচটি অবতার ধরাধামে অবতীর্ণ হন । এই পাঁচটি অবতার হলেন - শ্রী শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু, প্রভু নিত্যানন্দ, অদ্বৈত আচার্য, ঠাকুর গদাধর এবং শ্রীনিবাস ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ৫০ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।

Screenshot_20231110234302.jpg

Screenshot_20231110234253.jpg

শ্রীকৃষ্ণের গিরি গোবর্দ্ধন ধারণ । মথুরা ও বৃন্দাবনবাসীরা সবাই নন্দ ঘোষের তত্ত্বাবধানে ফসলের ভালো ফলনের জন্য বৃষ্টির দেবতা ইন্দ্রের পুজো করতেন । কৃষ্ণ যখন বালক তখন তাঁর পালক পিতা মহারাজ নন্দ ঘোষও পালক মাতা নন্দরানীকে ইন্দ্রের আরাধনা করতে দেখে কৃষ্ণ তাতে বাধা প্রদান করেন । সেবছর আর তাই ইন্দ্র পুজো হলো না । এতে দেবরাজ ইন্দ্র যারপরনাই রাগান্বিত হয়ে বৃন্দাবনবাসীদেরকে একটা উচিত শিক্ষা দিতে মনস্থ করলেন । তিনি হঠাৎ, অসময়ে ভীষণ বৃষ্টিপাত আরম্ভ করলেন । বৃন্দাবনে এক ভয়ানক দুর্যোগ এলো । অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে তো হচ্ছেই, থামার কোনো বিরাম নেই । সেই সাথে ঘন ঘন বজ্রপাত । বৃন্দাবনের সবাই খুব শঙ্কিত হয়ে পড়লেন । তখন শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনবাসীদের রক্ষার্থে গোবর্ধন গিরি নিজের কনিষ্ঠ আঙুলের পরে রেখে তাকে উঁচু করে রাখলেন । আরো সমগ্র বৃন্দাবনবাসী তাদের সকল গরুর পাল ও অস্থাবর সম্পত্তি নিয়ে সেই বিশাল পাহাড়ের নিচে অবস্থান করলো । ফলে বৃষ্টি বা বজ্রপাতে তাদের আর কোনো ক্ষতি হলো না । আর বালক কৃষ্ণের আঙুলের ওপর ভর করে বিশাল এই পাহাড় স্থাপন দেখে ইন্দ্রের আর বুঝতে বাকি রইলো না যে কৃষ্ণ নিতান্তই কোনো সাধারণ বালক নন । তিনি স্বয়ং বিষ্ণুর অবতার । তাই ইন্দ্র ক্ষমা চেয়ে নিলেন কৃষ্ণের কাছ থেকে ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ৫০ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।

Screenshot_20231110234312.jpg

Screenshot_20231110234307.jpg

কৃষ্ণ যখন দেখলেন গৃহযুদ্ধে যদু বংশ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, তার সকল পুত্র ও পৌত্রগণ যুদ্ধে মৃত্যু বরণ করেছেন তখন বুঝতে পারলেন পৃথিবীতে তাঁর শেষ দিন সমাগত । এই কথাটি বলার জন্য তিনি তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বলরামকে খুঁজতে বের হলেন । খুঁজতে খুঁজতে যমুনা নদীর তীরে তাঁকে খুঁজে পেলেন । তখন গোধূলী বেলা । কৃষ্ণ দেখতে পেলেন বলরাম যোগাসনে বসে প্রাণ ত্যাগ করছেন । তাঁর মুখ দিয়ে সহস্র ফণাযুক্ত একটি মহাসর্প বের হয়ে ধীরে ধীরে যমুনার কালো জলে গিয়ে মিশছে । প্রিয় অগ্রজের এই ভাবে দেহত্যাগ করতে দেখে কৃষ্ণ ভারী দুঃখ পেলেন । তিনি যমুনার তীরে বনের মধ্যে একটি গাছের তলে বিশ্রাম নিতে বসলেন । তখন জরা নামক এক ব্যাধ দূর থেকে কৃষ্ণের শ্যামল পদযুগল দেখে হরিণ ভেবে তীর নিক্ষেপ করে বসে । আর সেই তীর বেঁধে শ্রীকৃষ্ণের পায়ের পাতায় । তিনি জরাকে আশীর্বাদ করে দেহত্যাগ করেন ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ৫০ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!