আম বয়ানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনের ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। তুরাগ তীরে আজ অনুষ্ঠিত হবে বৃহত্তম জুমার নামাজের জামাত।
বাদ ফজর বাংলাদেশের মাওলানা ফারুক হোসেন আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু করেন ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর বাদ জুমা বয়ান করবেন বাংলাদেশের মাওলানা হাফেজ মোহাম্মদ জুবায়ের।
দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় রাজধানী ঢাকাসহ ১৬টি জেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশ নিবেন। ইজতেমার এই পর্বে ঢাকা-১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, জামালপুর ১, ২, ফরিদপুর, কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ, ঝিনাইদহ, ফেনী, কুমিল্লা ১, ২, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী ১, ২, খুলনা ১, ২, পিরোজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন। এসব মুসল্লিরা ২৮টি ভিত্তায় অবস্থান করবেন।
খিত্তা অনুযায়ী এসব জেলাগুলো হচ্ছে, ১নং খিত্তায় ঢাকা-০১, ২ নং খিত্তায় ঢাকা-০২, ০৩ নং খিত্তায় ঢাকা-০৪, ৪ নং খিত্তায় ঢাকা-১৯, ৫ নং খিত্তায় ঢাকা-২০, ৬ নং খিত্তায় ঢাকা-২১, ৭নং খিত্তায় ঢাকা-০৩, ৮নং খিত্তায় ঢাকা-২৩, ৯ নং খিত্তায় ঢাকা-২২, ১০ নং খিত্তায় ঢাকা-০৬, ১১নং খিত্তায় জামালপুর-০১, ১২নং খিত্তায় জামালপুর-০২, ১৩নং খিত্তায় ফরিদপুর, ১৪নং খিত্তায় কুড়িগ্রাম, ১৫নং খিত্তায় ঝিনাইদহ, ১৬নং খিত্তায় ফেনী, ১৭নং খিত্তায় সুনামগঞ্জ, ১৮নং খিত্তায় ঢাকা-০৭, ১৯নং খিত্তায় ঢাকা-০৫, ২০নং খিত্তায় চুয়াডাঙ্গা, ২১ নং খিত্তায় কুমিল্লা-০১, ২২নং খিত্তায় কুমিল্লা-০২, ২৩নং খিত্তায় রাজশাহী-০১, ২৪নং খিত্তায় রাজশাহী-০২, ২৫নং খিত্তায় খুলনা-০১, ২৬নং খিত্তায় ঠাকুরগাঁও, ২৭নং খিত্তায় খুলনা-০২ ও ২৮ নং খিত্তায় পিরোজপুর জেলার মুসল্লিগণ অবস্থান নেবেন।
ভোর থেকে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করে দুই দিন আগে থেকেই। ইতোমধ্যে ইজতেমা মাঠ অনেকটা ভরে গেছে। জুমার নামাজের আগেই মাঠ ভরে আশপাশের সড়কগুলোতে মুসল্লিদের জমায়েত হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। প্রথম পর্বের ন্যায় দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমাও সফল করতে সরকারি ৭৫টি সংস্থা একযোগে কাজ করছে।
ইজতেমা আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ জানুয়ারি প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতের পর দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমার ময়দান প্রস্তুতের জন্য ইজতেমায় আগত তাবলিগ জামাতের কর্মীরা কাজ করেছেন। তারা ইজতেমার প্রথম পর্বের ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে পুরো ময়দানকে উপযোগী করে তুলছেন। এজন্য ময়দানে তাবলিগের কর্মীরা বেশ কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও সহায়তা করা হয় বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান। দ্বিতীয় পর্বেও সুষ্ঠুভাবে ইজতেমা সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশাবাদ করেন।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরব্বি মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, প্রথম পর্বে তীব্র শীতের কারণে অনেক মুসল্লি ইজতেমায় যোগ দিতে পারেননি। মুসল্লিরা দ্বিতীয় পর্বে যোগ দিতে ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় আগত মুসল্লিরা ২৬টি খিত্তায় অবস্থান করবেন।
এদিকে প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও পুরো ইজতেমা এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে। গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, প্রথম পর্বের ন্যায় দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেয়া মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইজতেমা ময়দান ও তার আশপাশ এলাকায় আট স্তরের নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করা হয়েছে।
সাড়ে সাত হাজার পুলিশ সদস্য ইজতেমা ময়দান ও এর আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। সিসি টিভি ও ওয়াচ টাওয়ার এর মাধ্যমে পুরো ময়দান মনিটরিং করা হচ্ছে। ইজতেমা ময়দানে প্রতিটি খিত্তায় সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ইজতেমা ময়দানের আশপাশে প্রতিটি মোড়ে, প্রবেশ পথে ও গলিতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। আগত বিদেশি মুসল্লিদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ মোতায়েন আছে।
আগামী ২১ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। আর এ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমা।
(ঢাকাটাইমস/১৯জানুয়ারি/এমআর