বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার গভীরে থাকা অনেক সম্পদ এখনো অধরাই রয়েছে। সমুদ্রসীমার ৬৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত মাছ ধরার আইনগত বৈধতা আছে বাংলাদেশের। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আমাদের জেলেদের মাছ ধরার ট্রলারগুলো যেতে পারে মাত্র ৬০ কিলোমিটার।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০১৬ সালে যেখানে ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলংকা এবং থাইল্যান্ড বঙ্গোপসাগর থেকে ৮০ লাখ টন মাছ শিকার করেছে, সেখানে বাংলাদেশ শিকার করতে পেরেছে মাত্র ৯৫ হাজার টন। মোট মাছ শিকারের মাত্র ১১ ভাগ পায় বাংলাদেশি ট্রলারগুলো।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমুদ্র বিষয়ক বিভাগের সচিব এম খুরশেদ আলম বলেন, সাগরে এখনো আমাদের প্রচুর সম্পদ অপ্রাপ্ত পড়ে রয়েছে। সমুদ্র অর্থনীতি বিষয়ে একটি দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের বার্ষিক সাধারণ সভায় এই তথ্য জানান তিনি।
খুরশেদ আরো জানান, উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্রের ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশের ছোট ও মাঝারি আকারের ৬৯ হাজার নৌকা এবং ২০০ বৃহৎ আকারের ট্রলার মাছ ধরে। তাদের শিকার করা সবচেয়ে মূল্যবান মাছ হচ্ছে ইলিশ।
বঙ্গোপসাগরের গড় গভীরতা ২৫০০ মিটার। কিন্তু এখনো সীমাবদ্ধতার কারণে ৫০ মিটারের নিচের সম্পদ আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না বাংলাদেশের পক্ষে।
সাবেক নৌবাহিনী কর্মকর্তা খুরশেদ বলেন, এক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি প্রয়োগের সময় এসেছে এবং সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারগুলোর জন্যও প্রণোদনা দেয়ার সময় এসেছে।
২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক জনসংখ্যা হবে ৯০০ কোটি। আর তাদের দরকার হবে অতিরিক্ত ১০০ মিলিয়ন টন মাছ। তিনি বলেন, ‘আমরা সাগর থেকে ৫ মিলিয়ন টন মাছ ধরতে পারলেই যথেষ্ট।’
শুধু মাছ নয়; সাগর থেকে আমরা জলজ সম্পদ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ পেতে পারি। নৌ-পরিবহণ এবং বন্দর ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো গেলে পর্যটন থেকেও আমরা লাভবান হতে পারি।
মাছের তেল ওষধ শিল্পে ব্যবহৃত হয়। মাছের চামড়া থেকে তৈরি হয় জ্যাকেট। ২০১৫ সালের বৈদেশিক বাণিজ্যের কথা উল্লেখ করে খুরশেদ আলম বলেন, ওই বছর বাংলাদেশ বৈদেশিক বাণিজ্য থেকে ৭৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যার ৯০ শতাংশই ছিল সমুদ্রপথে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এসআই
https://www.daily-bangladesh.com/media/PhotoGallery/2017November/46454_kaladan-project%20(1)20171210150227.jpg