জাফরান(Saffron) ফুল। বেগুণী রঙের এ ফুলের মাঝে কমলা-হলুদ রঙের মিশেল পরাগ দন্ডগুলো মশলা হিসেবে সবচেয়ে দামি।
এ ফুল অত্যন্ত সুদৃশ্য ও দৃষ্টিনন্দন। জাফরান গাছ হয় প্রধানত শীতপ্রধান দেশে। আমাদের দেশে জাফরান গাছ হয় না। আমাদের কাছাকাছি বলতে ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পুঞ্চ অঞ্চলে এর চাষ হয়। এছাড়া পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক, স্পেন, ইতালিসহ ইউরোপ ও এশিয়ার প্রায় ২০ টি দেশে জাফরান ফুলের চাষ হয়। উন্নত জাতের জাফরান গাছের উচ্চতা হয় প্রায় ২ ফুট পর্যন্ত।
জাফরান ফুলের পাপড়িগুলো বেগুণী রঙের আর ফুলের ভিতরে থাকে লম্বা পরাগ দন্ড। এ দন্ডগুলোর রঙ হলুদ আর কমলা মিশানো অর্থাৎ জাফরানি। পরিণত ফুল শুকানোর পর এর দন্ডগুলো মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উজ্জল রঙ আর সুগন্ধের কারণে জাফরান পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মশলা হিসেবে সমাদৃত। যা পোলাও, জর্দাসহ বিভিন্ন মিস্টান্ন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া জাফরানের রয়েছে বহুবিধ ওষুধি গুণাগুণ।
জাফরানের বেশ কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে। প্রায় ২৭ বছর পূর্বে ফ্রান্সের রজধানী প্যারিসের উপকন্ঠে " ভার্সেলি প্যালেসে" এ ফুল আমার দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল।
২০১৪ খ্রিঃ সমগ্র পৃথিবীতে সর্বমোট ২৫০ মে.টন জাফরান উৎপাদিত হয়েছিল। এর ৯০% বা ২২৫ টন করেছিল ইরান, আর ২৫ টন করেছিল বিশ্বের অন্যান্য দেশ।
২য় স্থানে ছিলো গ্রীস, তারা করেছিল ৫৭০০ কেজি, ৩য় স্থানে ছিলো মরক্কো ও ভারত, তারা প্রত্যেকে ২৩০০ কেজি উৎপাদনে সক্ষম হয়েছিল।
এশিয়ার দক্ষিন-পশ্চিম অঞ্চল এবং ইউরোপ ছাড়াও আফ্রিকার উত্তরাঞ্চল, উত্তর আমেরিকা এবং ওশেনিয়ার কোথাও কোথাও অল্প স্বল্প জাফরান উৎপাদিত হয়।
পরিসংখ্যান অনুযায়ি বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বে প্রতি কেজি জাফরানের পাইকারি মূল্য সর্ব্বচ্চ US$ ১১,০০০.
তবে প্রাসঙ্গিক ভাবে একটি কথা বলতে হয় আর তা হলো- জাফরানের উচ্চ মূল্যের কারণে অনেক অসাধু ব্যক্তি এতে ভেজাল মিশ্রিত করে বাজারে বিক্রয় করে থাকে। ষোড়শ শতাব্দিতে এরূপ একজন ভেজাল কারিকে জার্মানিতে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হয়েছিল।
এছাড়া কিছু রয়েছে wild saffron বা বন্য প্রজাতির জাফরান। যা বাজারে অনেক কম দামে বিক্রয় হয়।
(সংগ্রহীত )