সুস্থতার জন্য যেসব খনিজ উপাদান অপরিহার্য

in food •  3 years ago 

সুস্থতার জন্য যেসব খনিজ উপাদান অপরিহার্য

images (5).jpeg

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিভিন্ন মিনারেল বা খনিজ উপাদানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ যেমন- ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি। এগুলো ছাড়া আরও কতকগুলো উপাদান আছে যেগুলো সামান্য পরিমাণে হলেও সুস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। শরীরের ওজনের মাত্র ০.০১% মাত্রায় বিদ্যমান এই 'ট্রেস এলিমেন্টগুলো' শরীরের বিভিন্ন এনজাইম, হরমোন এবং কোষকলার অংশবিশেষ হওয়ায় এগুলোও শরীরের জন্য অপরিহার্য। স্বল্প মাত্রার অথচ পুষ্টিকর এসব উপাদানকেই 'এসেনশিয়াল ট্রেস এলিমেন্টস' বলা হয়।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক প্রফেসর ড. জাকিয়া বেগম।

বিভিন্ন কারণে মিনারেল ঘাটতি দেখা দেয়ার কারণ হচ্ছে খাদ্যে অথবা সম্পূরক খাদ্যে প্রয়োজনীয় মাত্রায় এসব উপাদানের অনুপস্থিতি। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস যেমন- বেশি পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত বা টিনজাত খাদ্য গ্রহণ, খাদ্য তালিকায় শাক-সবজি বা ফলমূলের পরিমাণ কম থাকা, কম-ক্যালরিযুক্ত বা নিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ, নিরামিষাশী, খাদ্য হজমজনিত কোনো রোগ, কোনো কারণে সঠিক পর্যায়ে খাদ্য শোষণে ব্যর্থতা, বিভিন্ন খাদ্যে অ্যালার্জি বা দুগ্ধশর্করায় (ল্যাকটোজ) অসহনীয়তা ইত্যাদি কারণেও এ ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে।

images (6).jpeg

লোহা : লোহা এরূপ একটি ক্ষুদ্র উপাদান যার পরিমাণ শরীরের ওজনের মাত্র ০.০০৪%। রক্তস্থ হিমোগ্লোবিন শরীরের কোষকলাগুলোতে শক্তি ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে। শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় কম লোহা থাকলে হিমোগ্লোবিন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। শরীরে লোহা অথবা হিমোগ্লোবিনের ঘাটতিকেই রক্তশূন্যতা বলা হয়। লোহার ঘাটতি থেকে শরীরে দুর্বলতা দেখা দেয় এবং শরীর সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এমনকি এ ধরনের রক্তশূন্যতার কারণে হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটতে পারে। স্বল্প মাত্রার লোহার ঘাটতি থেকে মস্তিষ্কের বুদ্ধিমত্তার ব্যাঘাতও সৃষ্টি হতে পারে। আমাদের দেশে রক্তশূন্যতা গর্ভকালীন মাতৃ মৃত্যুর প্রধান কারণ। পুরুষ ও বয়স্ক মহিলাদের জন্য প্রতিদিন ৮ মিলিগ্রাম এবং অল্প বয়স্ক মহিলাদের জন্য প্রতিদিন ১৮ মিলিগ্রাম লোহার প্রয়োজন হয়। মাংস, কলিজা, সীমজাতীয় সবজি, বাদাম, সম্পূর্ণ শস্যদানা যেমন; বাদামি চাল, ঝিনুক, কলা, আপেল, গাঢ় সবুজ শাক-সবজি ইত্যাদি খাদ্য থেকে আয়রন পাওয়া যায়।

জিঙ্ক বা দস্তা : এই উপাদানটি শরীরের বিভিন্ন বিপাকীয় পদ্ধতি যেমন আমিষ সংশ্লেষণ, রোগ-প্রতিরোধক কার্যাবলী, ক্ষত থেকে আরোগ্য লাভের প্রক্রিয়া, কোষ বিভাজন ও ডিএনএ সংশ্লেষণ, টেসটোসটেরন জাতীয় পুরুষ হরমোন তৈরি, মেলাটোনিন তৈরি ইত্যাদি প্রক্রিয়াগুলোকে প্রভাবিত করে থাকে। এছাড়া গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের সঠিক বিকাশ ও বৃদ্ধি লাভের ক্ষেত্রে এবং শিশু বয়সে এবং বয়োসন্ধিকালে শরীরের বৃদ্ধি ও পূর্ণতা প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উপাদানটির অভাবে স্মৃতিশক্তি হ্রাস, রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ার কারণে ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগা, ডায়রিয়া, ঘুমের সমস্যা, খাদ্যে অরুচি এবং খাদ্যের স্বাদ ও গন্ধ অনুভবের ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া, চুল পড়া, ত্বকের ক্ষতি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। উপাদানটির অতিমাত্রার ঘাটতি থেকে হতবুদ্ধিতা জাতীয় মানসিক প্রতিবন্ধকতা, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা এবং যৌন অক্ষমতা দেখা দেয়ার আশংকাও থাকে।

লাল মাংস, হাঁস-মুরগির মাংস, ঝিনুক ইত্যাদি প্রাণিজাতীয় ও দুগ্ধজাতীয় খাদ্য, ডার্ক চকলেট, বাদাম, শিম জাতীয় উদ্ভিদ ইত্যাদিতে এই উপাদানটি পাওয়া যায়। মিষ্টি কুমড়ার বিচি জিঙ্কের একটি ভালো উৎস।

আয়োডিন : থাইরয়েড থেকে নিঃসৃত এই হরমোনটি থাইরয়েড গ্রন্থির সঠিক পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয়। কোষকলার বিপাকীয় কার্যকলাপ পরিচালনা, খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তরিত করা, অতিরিক্ত চর্বির বিপাকীয় ব্যবহার, ইস্টোজেন জাতীয় হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করা, শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা, মানসিক ক্ষিপ্রতা এবং বোধশক্তির উন্নতি সাধন ইত্যাদি ক্ষেত্রে এই হরমোনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

images (7).jpeg

সাধারণত ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে মহিলাদের এবং গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এই হরমোনটির ঘাটতি হতে দেখা যায়। গলগণ্ড রোগটি আয়োডিন ঘাটতির প্রধান লক্ষণ। দীর্ঘদিন ধরে থাইরয়েড গ্রন্থি প্রয়োজনীয় মাত্রায় আয়োডিন উৎপাদনে ব্যর্থ হলে 'হাইপোথাইরয়েডিজম' রোগ দেখা দেয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘাটতি থেকে 'ক্রিটেনিজম নামক' বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, শিশু শারীরিক এবং মানসিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়ে পড়ে। ১-৮ বছরের শিশুর প্রতিদিনের চাহিদা ৯০ মাইক্রোগ্রাম, ৯-১৩ বছর পর্যন্ত ১২০ মাই

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!