Travel for food 😎 a place for freshment and having desi quality food as well

in hilshafish •  7 years ago 

এইটা একখান টুইন+ওয়ান পোষ্ট! যা শুধু মাত্র- ভ্রমন পিপাসু, প্রকৃতি, ইলিশ মাছ এবং আইসক্রিম প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য।

নিত্যদিনের যান্ত্রিকতা আর ধুলাবালি খেতে খেতে যারা পেরেসান হয়ে গেছেন, সময় স্বল্পতার জন্য যারা ঘুরতে যেতে পারছেন না, ১দিনের মধ্যে একখান মিনি ট্যুর দিতে ইচ্ছুক, এবং যারা চাচ্ছেন এই শীতে একবার লঞ্চভ্রমন করতে- তাঁরা স্ক্রল করে পরে ফেলুন এই পোষ্টটি।

এই ট্যুরটি শেষ করতে সর্বোচ্চ ৯ঘন্টা সময় লাগবে আপনার। ৭জন নিয়ে লঞ্চভ্রমনে আমরা গিয়েছিলাম চাঁদপুর, ঘুরতে এবং খেতে আমাদের খরচ হয়েছিল ৩৫০০/- টাকার কাছাকাছি।

ইলিশের স্বাদগুন আর ইতিহাস নিয়ে কোন গল্প বুনবো না। কারন আমরা বাঙ্গালী, ইলিশের স্বাদ থেকে শুরু করে এর ইতিহাস-পাতিহাস সবই আমাদের জানা। সামান্য তেল আর নুন ছিটিয়ে ভেঁজে ফেললে- কবজি ডুবিয়ে ভাত খাওয়া যায় এক টুকরো ইলিশ দিয়ে। ইলিশ ভাঁজা আর ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ সময়কার মিষ্টির দোকান “ওয়ান মিনিট” এর আইসক্রিম খেতে আমি গিয়েছিলাম “চাঁদপুর”। ঢাকা ইউনিভার্সিটি শ্যাডো ক্যাম্পাস এর আইসক্রিম এর মতই এটি, তবে এর স্বাদ তার থেকে আলাদা। ভ্যানিলার মধ্যে কিছুটা বানানা ফ্লেভার যোগ করলে যা হয় আরকি, একবার খেলে সারাদিন এর স্বাদ আপনার জিভে লেগে থাকবে। যদি কখনো চাঁদপুর যাওয়া হয়- তাহলে এই জিনিস ভুলেও মিস করবেন না। কিভাবে গেলাম তা খুব সহজভাবে নিচে তুলে ধরলাম।

লঞ্চভ্রমন ঢাকা টু চাঁদপুরঃ

ঢাকা থেকে চাঁদপুর যেতে সময় লাগে ৩ঘন্টা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতি ঘন্টায় আপনি লঞ্চ পাবেন।

ঢাকার যেকোন জায়গা থেকে চলে আসুন সদরঘাট টার্মিনালে। এরপর কাউন্টার থেকে এন্ট্রি পাশের জন্য টিকেট কাটুন (জন প্রতি ৫টাকা)। ১০ নম্বর গেট দিয়ে টার্মিনালের ভেতরে প্রবেশ করুন। এবার চাঁদপুরের লঞ্চে উঠে পরুন। স্বল্প খরচে এবং দিনের আলো শেষ হওয়ার পূর্বে যদি ভ্রমন শেষ করতে এবং ঢাকা ফিরতে চান, তাহলে সকাল ৬/৭টার লঞ্চ ধরুন। যদি দাড়িয়ে এবং লঞ্চের ছাদে ঘুরে ৩ঘন্টা সময় পার করতে পারেন, তাহলে চাঁদপুর পৌঁছানোর পর টিকেট কাটুন (জন প্রতি ১০০/-টাকা)।

নোটঃ যদি বাসের মত সিটে বসে যেতে চান, তাহলে লঞ্চে উঠার সাথে সাথে টিকেট কাটুন (জনপ্রতি ১৫০/-) টাকা। এর বাইরে বিজনেস ক্লাস এবং ভিআইপি সিট/কেবিন এর ব্যবস্থা আছে, ভ্রমনটা বিলাসবহুল করতে চাইলে তা ব্যাবহার করতে পারেন। নাশতা বাইরে থেকে করে নেওয়া ভাল, নইলে চাঁদপুর নেমে আপনি নাশতা করতে পারবেন। লঞ্চের ভেতর সব জিনিসেরই দাম বেশি, চাইলে ভেতর থেকে ১০/-টাকা চা এবং ৫/-টাকার রুটি দিয়ে নাশতা সেরে নিতে পারেন। খিচুড়ি খেতে চাইলে আপনাকে ১৩০/-টাকা খরচ করতে হবে।

চাঁদপুর পৌঁছানোর পরঃ

চাঁদপুর পৌছে গেলে লঞ্চের ভেতর থেকেই মুখ হাত ধুয়ে নিন, এরপর বেরিয়ে পরুন। বের হওয়ার সাথে সাথে কাউন্টার থেকে জেনে নিন লঞ্চ এর সিডিউল। বাহিরে অটোগাড়ি পাবেন, উঠে সোজা চলে যান “বড় ষ্টেশন” - ভাড়া পরবে ১০/- টাকা (জনপ্রতি, আসার পথে এই অটো রিজার্ভ করেছিলাম ৪০/- টাকায়)। বড় ষ্টেশন পৌছে গেলে- আরাম করে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য পাবেন অসাধারণ একটা জায়গা, যেখানে বসার জন্য সুন্দর ব্যবস্থা আছে। চাইলে এখান থেকে ট্রলার ভাড়া করে আসেপাশের চরে ঘুরতে পারেন। এইটা একখান পর্যটন স্পট, খাওয়ার জন্য এখানে ঝালমুড়ি, ভুনা বুট এবং চানাচুর পাবেন। ট্রাষ্ট মি, এখানের ঝালমুড়ি আপনাকে পাগল করে দিবে। না খাইলে মিস টাইপের আইটেম এটি। এখান থেকে ৫/১০মিনিট হাটলেই ইলিশের আড়ৎ, আমরা ইলিশে আড়ৎে পরে ঢুকি- আগে আইসক্রিম খেয়ে আসি ;)

এরপর এখান থেকে বের হয়ে অটোতে উঠে চলে যান সোজা “কালীবাড়ি”, ভাড়া পরবে ০৫/-টাকা (জনপ্রতি)। কালীবাড়ি নেমে যে কাউকে জিগ্যেস করলে দেখায় দিবে “ওয়ান মিনিট” মিষ্টির দোকান। এদের সেই বিখ্যাত আইসক্রিম খাওয়ার জন্য আপনার গুনতে হবে ৪০/- টাকা। চাইলে এর সাথে মিষ্টি খেতে পারেন, সাবধান- ভুলেও ছানা খাবেন না, তাহলে আপনার সকল আনন্দ ওখানেই শেষ :D

এরপর আবার বড় ষ্টেশন ফিরে আসুন অটোতে করে। যে কাউকে জিগ্যেস করলেই দেখিয়ে দিবে ইলিশের আরৎ। আড়ৎে ঢুকার পর দেখতে পাবেন কি ভাবে ইলিশ মাছ নিলামে বিক্রি হয়। এখানে ৬৫০-৯৫০/- অথবা ১১৫০/- পর্যন্ত কেজি দরে ইলিশ মাছ কিনতে পারবেন। আমাদের দুটি মাছের দাম পরেছিল ৮৭২/- টাকা। মাছ কেনা হয়ে গেলে এর পাশেই, ঘাটের পাশ দিয়ে একটু হাটলেই পাবেন মনা মিয়ার হোটেল। কাটাকুটি এবং ভাঁজার জন্য এরা ১০০/- করে নেয় প্রতি মাছ। দুটি মাছ কাটাকুটি+ভাঁজা+১১টাভাত+৭টিআলুভর্তা+৪টা_লেজভর্তা+ডাল= ৪৬৫/- টাকা। খাওয়া শেষ হয়ে গেলে, পর্যটন স্পটে চলে যান এবং আরাম করে কিছুক্ষন বসুন নদীর পারে। কিছু মুহূর্ত পার হয়ে গেলে বের হয়ে অটোতে উঠে চলে আসুন লঞ্চঘাটে। এন্ট্রি পাস এর টিকেট কেটে উঠে পরুন লঞ্চে। ব্যাস এরপর ঢাকা এবং যে যার যার বাড়িতে।

জায়গাঃ ঢাকা-চাঁদপুর+বড়ষ্টেশন+কালীবাড়ি
প্রধান খরচ সমূহঃ
লঞ্চ ভাড়া (আসতে-যেতে)= ১৪০০/- টাকা (৭জনের)
নাশতাঃ ১০৫/- টাকা (৭টা চা= ৭০/-, ৭টা পিচ্চি রুটি= ৩৫/-)
দুপুরের খাবারঃ দুটি মাছ কাটাকুটি+ভাঁজা+১১টা
ভাত+৭টিআলুভর্তা+৪টালেজভর্তা+ডাল= ১৩৩৭/- টাকা
অটোভাড়া বাবদঃ ৭০+৩৫+৩৫+৪০= ১৮০/- টাকা।
image
image
image

বি/দ্রঃ আপনি চাঁদপুর নেমে আগে কালীবাড়ি তারপর বড় ষ্টেশন যেতে পারেন। চাঁদপুর শহরটি বেশ পূরানো, একটু ঘুরলে অনেক পূরানো বাড়ি-ঘর পাবেন- যা দেখতে হয়ত আপনার কাছে ভাল লাগবে। চাঁদপুরের ইতিহাস নিয়ে অন্যকোনদিন লিখবো। ডিটেইল এর জন্য পোষ্টটা অনেক দীর্ঘ হল বলে ক্ষমা চাচ্ছি, কোথাও কোন ভুল থাকলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। যদি কোন প্রশ্ন থাকে, নিঃসংকোচে জিগ্যেস করবেন <3

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!