আসসালামু-আলাইকুম!!
পৃথিবীর এই ক্লান্তি লগ্নে আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আজ আমি আমার বিয়ের দিনের গল্প শোনাবো সবাইকে। যে মহেন্দ্র ক্ষনের অপেক্ষায় ছিলাম আমরা দু'জন। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।
ধন্যবাদ @Best-Of-Bangladesh কে, আমাকে গল্প বলার সুযোগ করে দেওয়া জন্য।
স্মৃতির পাতায়!! ভালোবাসার পূর্ণতার গল্প!
মানুষের জীবনের বিয়ে একটি বিশেষ মুহূর্ত।সাধারণত বিয়ের স্মৃতি সবাই নিজেদের মতো করে ধরে রাখেন, বিয়ের ছবি, ভিডিও বা আত্মীয়-বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে পুরনো গল্পের মাধ্যমে। কোনও ব্যক্তির জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং স্মরণীয় দিন হ'ল তার বিয়ের দিন যা সাধারণত কখনোই ভুলবার নয়। গতানুগতিক ধারায় সবার বিয়ের দিনটি একরকম কাটে না। ঠিক যেমনটি আমাদের ও ছিলো না। নানান প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে এসেছে আমাদের সেই সন্ধিক্ষণ। বলছি ১৮ ই অক্টোবর ২০২০, রোজ রবিবার, সেই ঐতিহাসিক দিনের কথা। যেদিন ধর্মীয় এবং সামাজিক ভাবে দুইটি হৃদয় একি বন্ধনে আবব্ধ হই আ-মৃত্যু একসাথে পথচলার প্রত্যয়ে।
অন্য সবার মতো আমাদের বিয়ের টা ধুমধামে হওয়ার সৌভাগ্য আমাদের হয়নি। আমাদের বিয়ে করতে হয় নানান প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে। যেহেতু আমরা আমাদের পছন্দে বিয়ে করছি। তবে আলহামদুলিল্লাহ এতেই আমরা অনেক খুশি। যেহেতু আমরা দু'জন দু'জনকে আজীবনের জন্য পেয়েছি। আমি আর আমার প্রিয়তমা দুজনেই দীর্ঘ দিনের পরিচিতা। সেই সুত্রে প্রেম আর সেখান থেকেই একসাথে জীবনের শেষ সূর্য অস্ত দেখার প্রতিজ্ঞা।
আমি প্রথমেই বলেছি, গতানুগতিক ধারার বাহিরে আমাদের বিয়ে টা হয়, তাই সবার মতো ধুমধামে বিয়ে আমাদের হয়নি। ফ্যামিলির সবাইকে বহুকষ্টে রাজি করিয়ে বিয়ের আসনে বসা যে কত কষ্টের তা বলে বুঝানো যাবে না। এই অভিজ্ঞতা বড়ই তিক্ততার, তাই এই অভিজ্ঞতা বাহিরে রেখে শুধু বিয়ে দিনের গল্প বলছি।
সকল জল্পনা কল্পনার অবসন ঘটিয়ে ২০২০ সালের ১৮ই অক্টোবর, রোজ রবিবার আমাদের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। আমাদের বিয়ে একদমি সাদামাটা। কথা ছিলো এনগেজমেন্ট করা হবে, সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি। হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত হয় এনগেজমেন্ট এর সাথেই বিয়ে পড়ানো হবে। তাই কোন হলুদ বা আদার কিছুই করা হয়নি। আরো পুরো প্রোগ্রাম টি হয় ফ্যামিলি মেম্বারদের মধ্যে সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে।
আমাদের বাড়ি থেকে আমার প্রিয়তমার বাড়ি অনেক দূরত্বের। আর আমরা যেহেতু ছেলে পক্ষ, অনুষ্ঠান হবে আমার প্রিয়তমার বাসায়, তাই আমাদের মোটামুটি অনেক আগেই বের হতে হয়। সব প্রসেডিওর সম্পন্ন করে আমরা ১২ টার দিকে রওনা হই। আমার প্রিয়তমার বাসায় আমরা পৌছাই প্রায় দুপুর ২ টার দিকে। যথাযথ সংবর্ধনার সহিত আমাদের নিয়ে যাওয়া হয় আমার প্রিয়তমার বাসায়। যেহেতু অনুষ্ঠান ফ্যামিলি গত ভাবে হচ্ছে তাই, রুমের মধ্যেই সব আয়োজন আর ছিলো ক্ষুদ্র পরিসরে।
আমাকে স্পেশালি ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং বসতে বলা হয় সবার মাঝে। যদিও এই বিষয়টি তখন আমার জন্য অনেকটা অস্বস্তির আর ভীষণ টেনশনের, এই শুভ সময়ের জন্য। এর কিছু সময়ের পর আমাদের বিয়ে পড়ানো শুরু হয়। এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিয়ে পড়ানো হয়ে যায়। এই মহেন্দ্র ক্ষনের অপেক্ষায় আমরা অনেক দিন থেকে অপেক্ষার প্রহর গুনেছিলাম। নিজের কাছে তখন অনেক ভালো লাগছিলো। অনেক শুকরিয়া মহান আল্লাহর প্রতি।
এর পর সবাই মিলে খাওয়াদাওয়া করি। আমি আমার প্রিয়তমা দুজনেই একসাথে খাওয়াদাওয়া করি। খাওয়াদাওয়া শেষে আমাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি করা হয়। যেহেতু হঠাৎ করে আমাদের বিয়ের সিদ্ধান্ত হয় আর প্রিয়তমাকে এখন তুলে নেওয়া হবে না, সেই জন্য সিদ্ধান্ত হয় আমাকে আমার শশুর বাড়ি থাকতে হবে।
এটি ছিলো মূলত এনগেজমেন্ট প্রোগ্রাম তাই আমার প্রিয়তমাকে সাজিয়ে নিয়ে আসা হয়, আমার বাবা আমার প্রিয়তমার হাতে আংটি পরিয়ে দেন। এবং কিছুক্ষণ সবাই মিলে কথাবার্তা বলে আমাদের রেখে একে একে সবাই ফিরে যান।
সব কিছু শেষ হতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায়। আর যেহেতু সব কিছু হঠাৎ করে তাই কোন কিছুই গোছালো ছিলো না, ছিলোনা কোন চাকচিক্যময়। আমাদের তেমন কোন ছবি ও তোলা হয়নি। যেহেতু সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে তাই আমি আর আমার প্রিয়তমা মিলে অল্প কিছু পিকচার তুলি। যা আমাদের এই বিশেষ দিনের স্মৃতি বহন করবে। আর এই ভাবেই আমাদের জীবনের মহেন্দ্র ক্ষনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
বিয়ে নিয়ে আমাদের অনেক ইচ্ছে বা আকাঙ্ক্ষা ছিলো। ইচ্ছে ছিলো অনেক জাঁকজমক পূর্ণ বিয়ে হবে আমাদের। সেই ইচ্ছে গুলো আমাদের অধরাই থেকে গেলো। তবুও আমরা খুশি এই জন্য যে আমি আমার প্রিয়তমাকে আমার করে পেয়েছি, যা ছিলো আমার প্রত্যাশার পূর্ণতা। যার কাছে সব জাকজমক পূর্ণতাই অতি ক্ষুদ্র। একজীবনে এর বেশি আর কি বা ই পাওয়ার থাকে। প্রিয় মানুষটি আমার। আমার ভালোবাসার মানুষটি আমার। আমার প্রিয়তমা আমার। নেই কোন বাধা আর আমাদের মাঝে। এর চেয়ে বড় স্বস্তি আর কি হতে পারে। জীবন যেন এখানেই পূর্ণ। ভালোবাসার প্রিয় মানুষটিকে নিজের করে পাওয়া মতো আনন্দ হয়তো আর কিছুই হতে পারে না। আমাদের ভালোবাসা হয়তো এখানেই সার্থক। আলহামদুলিল্লাহ!
সাবধানে থাকবেন!!
সুস্থ থাকবেন!!
শুভকামনা রইলো সবার জন্য!!
CC:
@steemitblog
@md-raju
My Twitter post : https://twitter.com/msi_shishir/status/1397032377055023107?s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit