আসসালামু-আলাইকুম
আশা করি সবাই ভাল আছেন!
@Bestofbangladesh কে ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য।
আজ আমি আমার প্রিয় একটি বইয়ের বিবরণ সবার সাথে শেয়ার করবো। আশা করি সবাই এটি পছন্দ করবে।
আজ আপনি সেরা একটি বই সম্পর্কে জানতে যাচ্ছেন।
চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রনে🥰
আমার বইপড়া জীবনে অত্যাধিক বইয়ের লেখকের নাম হুমায়ূন আহমেদ।
তিনি আমার মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছেন, কথা বোঝাতে হবে সাবলীল ভাষায়। তুমি ঘৃণা করো বা ভালোবাসো..কঠিন করে না বলে বলো সহজ করে। এমনভাবে বলো যেন দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করতে না হয়।
আমি তার এই যুক্তি মুখস্থ করেছি। তিনিই একমাত্র লেখক, যিনি অতি সহজ কথা দিয়েও চোখ ঝাপসা করে ফেলতে পারেন... পারছেন, পারবেন অনন্তকাল!
আজকের যে বইটি নিয়ে কথা বলতে চলেছি সেটিও হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত এক উপন্যাস।
❤️বইঃ তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রণে
🌿লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ
✌️প্রকাশনাঃ কাকলী প্রকাশনী
👉মুদ্রিত মূল্যঃ ১৩০৳
🥰প্রথম প্রকাশঃ ১৯৯৩
😱পার্সোনাল রেটিংঃ ৯/১০।
উক্ত বইটি আমি আমার এক আপুকে জন্মদিনে উপহার দিয়েছিলাম। বইটি আমার পড়া হয়নি আগে। হঠাৎ একদিন মধ্যরাতে আপুর কাছ থেকে ফোন আসলো, তিনি বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। কেন কাঁদছেন এই প্রশ্ন করার আগেই তিনি বললেন, তুমি আমাকে এমন বই আরও দিবে। বই পড়ে কষ্ট পেতে আর কাঁদতে আমার ভালো লাগে।' তিনি হেচকি তুলছেন আর আমাকে অনুরোধের সুরে বই দেয়ার কথা বলছেন।আমিও তাকে বই দেব বলে আশ্বস্ত করেছিলাম।
হঠাৎ কি মনে হলো গতরাতেই এই বই পড়তে বসেছি। অতি শক্ত হৃদয়ের মানুষ হয়েও আমি শেষ পাতায় এসে সামলে থাকতে পারিনি। আবেগ সামলে রাখা যায় কিনা জানি না..কিন্তু চোখের পানি সামলে রাখা কষ্টের! মারাত্মক কষ্টের!
এবার একটু জেনে নেওয়া যাক বইটি আসলে কেমনঃ
একটি অদৃশ্য প্রেমের উপন্যাস এটি। আসলে যে প্রেম দেখা যায় না তা তো অদৃশ্যই..! ঠিক প্রেমের বলা চলে না.. বিরহের.. অসীম বিরহের উপন্যাস এই বই!
★ একজন অমায়িক, সুবোধ, আর রুপসী প্রেমিকার চোখের সামনে তাঁর দীর্ঘদিনের চুক্তিবন্দী প্রেমিকের হারিয়ে যাবার গল্প...
★ চোখের সামনে মানুষটাকে তার মনে হচ্ছে, অথচ সে অলক্ষে চলে যাচ্ছে অন্যকোথাও... অন্যকারো ঘ্রাণে হচ্ছে মাতোয়ারা...
★ প্রেমিকও জানে না সে দূরে যাচ্ছে। প্রেমিক চায়না সে এতদিনের ভালোবাসায় ঢিল ছুঁড়তে। অদৃষ্টচর কিছু যেন তাঁকে বাধ্য করাচ্ছে অন্যকারো কাছে যেতে.. তাই সে যাচ্ছে। একটু একটু করে প্রস্থানে নাম লেখাচ্ছে নিজের অজান্তেই! সে নিয়তির ফাঁদে আটকে গেছে। সে ফাঁদ কেউ ভাঙতে পারছেনা...
★ এই প্রস্থানোদ্যত ব্যথা সেই রূপবতী প্রেমিকা কীভাবে সহ্য করবে? অধিকার হারাবার চেয়ে যে 'হারিয়ে যাচ্ছে' সে ঘটনার পীড়া বেশী! সে কাকে বোঝাবে?
★ লেখক প্রেমিকার ব্যথা বোঝার জন্যে তাঁর ছোটবোনকে নিয়ে এসেছে..
নবনী এবং শ্রাবণী দুই বোন। নবনীর সমস্ত কষ্ট শ্রাবণী উপলব্ধি করে। শ্রাবণী মানুষের মন পড়তে পারে... সে মন পড়ার ক্ষমতা দিয়ে তাঁর মায়ের মাঝরাতের কান্নার কারণ বের করে ফেলেছে। তাঁর আরও অনেক কিছুর ক্ষমতা আছে! সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হিসেবে লেখক প্রকাশ করেছে মানুষকে ভালোবাসার ক্ষমতা শ্রাবণীর প্রবল।
নবনী সহজ সরল। সন্ধ্যারাতে মাঠের মাঝখানে এক বটগাছের নিচে জোৎস্ন্যা দেখতে আসা যুবককে ধমক দিয়েও সে বোঝেনি তাকে সে পছন্দ করে ফেলেছে... তারতো প্রেমিক আছেই! শাহেদ তাঁর প্রেমিক।
শাহেদকে নবনী পুরো বইয়ের কোথাও এক ফোঁটা অবহেলা করেনি...শাহেদও করেনি।
কিন্তু তবু তারা কেউ কারো সাথে থাকতে পারছে না... কেন পারছে না? অন্যকারো অনুপ্রবেশে সব ফিকে হয়ে গেছে? সেই অন্যকেউটা কে?
লেখক এত গুছিয়ে কীভাবে বিরহ রটাতে পারেন আমি জানি না। জানার চেষ্টা কখনো কাজেও লাগেনি.... সুপাঠকই এর সঠিক ব্যাপার ধরতে জানবেন আশা করছি।
শেষে,
প্রকৃতি সবকিছু নিজের মত করে গুছিয়ে নেয়। কাউকে জানতে দেয় না সে কখন কী করতে চলেছে... ভালোবাসার ব্যাপারেও সে কোনো তথ্য দেয় না।
তাই যুগযুগ ধরে নবনীরা ভালোবাসার মানুষ নিয়ে স্বপ্ন তৈরী করে যাবে। অথচ স্বপ্নে উঠবে ঘূর্ণিঝড়! স্বপ্নে রাখা হাতেরা বদলে গিয়ে চার থেকে দুই হয়ে যাবে। কারো কিছু করার নেই! কিছু করার থাকবে না!
নবনীরা কাঁদবে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে...
আকাশ থেকে জোছনা গলে গলে পড়বে বিরহের রাতের দিন। শীতের বাতাসে যেন সেই জোছনা ভাসতে ভাসতে ছড়িয়ে পড়বে চারদিকে। কষ্ট বুঝতে পারা কোনোএক শ্রাবণী বোনের কানের কাছে এসে ফিস ফিস করে বলবে 'কাঁদে না আপা। কাঁদে না!'
প্রতিটি বই পড়ে বইয়ের শেষ পাতায় আমি একটা লাইন লিখে রাখি। এটিতেও লিখেছি........
"বই পড়ার পরবর্তীকালের অনুভূতি আপনার কাছে আমি কীভাবে পৌঁছাবো স্যার?"
জাদুকর জবাব দেননি....
তবে একদিন দিবেন আশা করছি। হোক না স্বপ্নে!তবুও উত্তরের প্রতিক্ষায়....!!
ধন্যবাদ সবাইকে
@safi01
Cc:-
Twitter link.
https://twitter.com/safi0045/status/1407547698354417666?s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Found 19% plagiarism in this post. This is the last warning for you. If this happens in the future, action will be taken against you. Hope you works properly.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit