কখনো ভোরবেলা ঘুম ভেঙে উঠে জানলার পর্দা সরিয়ে সাদা কাঞ্চনজঙ্ঘায় সূর্যের প্রথম আলো পড়তে দেখেছেন? এক কাপ গরম চা হাতে নিয়ে চোখের সামনে পাহাড়কে রং বদলাতে দেখেছেন? দুপুরের খাবারের পর প্রিয় মানুষের হাতে হাত রেখে পাইন গাছে হেলান দিয়ে বসেছেন? তারা ঝলমলে আকাশের নিচে বসে দু হাতে কফির নাম ধরে একটা লম্বা চুমুক দিয়ে বলে উঠেছেন "এই তো জীবন !! এখান থেকে ফিরতে চাই না"?
যদি উত্তর গুলো "না" হয়, কোভিড মহামারী শেষ হলেই চলে আসুন চটকপুর গ্রামে।
চটকপুর আসতে হলে আপনাদের প্রথমে শিলিগুড়ি আসতে হবে। নিকটবর্তী রেল স্টেশন নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) এবং শিলিগুড়ি জংশন, নিকটতম বিমানবন্দর বাগডোগরা। শিলিগুড়ি থেকে কার্শিয়াং হয়ে দার্জিলিং গামী বাস বা গাড়িতে সোনাদা নামতে হবে। ভাড়া বাসে মাথাপিছু ১০০ টাকা, শেয়ার গাড়িতে মাথাপিছু ১৫০ টাকা। পুরো গাড়ি রিজার্ভ করে নিলে ছোটো গাড়ি ২৫০০ এবং এসইউভি ৩৫০০।
সোনাদা থেকে চটকপুর ৭ কিলোমিটার। ফোর-হুইল ড্রাইভ আছে এরকম স্থানীয় গাড়ি তে এই ৭ কিলোমিটার যেতে হবে। পুরো গাড়ি রিজার্ভ করতে হয়। পুরো গাড়ির ভাড়া ১০০০-১২০০ টাকা। হাতে সময় থাকলে এই ৭ কিলোমিটার ট্রেক করে যেতে পারেন - স্থানীয় কাউকে গাইড হিসেবে সঙ্গে নিতে হবে যদি ট্রেক করে যেতে চান। ট্রেক করার রাস্তা ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে। ৭ কিলোমিটার যেতে ২-৩ ঘন্টা সময় লাগবে।
চটকপুর একটি অফবিট ডেস্টিনেশন। এখানে কোনও হোটেল নেই। পর্যটকদের থাকার জন্য কিছু হোম-স্টে রয়েছে। খরচ মাথাপিছু দৈনিক ১৫০০ টাকা থাকা-খাওয়া সমেত। সকালে লুচি-তরকারি, দুপুরে ভাত-ডাল-সব্জি-ডিমের কারি, বিকেলে চা-ভেজ পকোড়া, রাতে ভাত/রুটি-ভাজা-চিকেন কারি। এছাড়াও আলাদা করে অর্ডার করলে চিকেন ফ্রাই, মোমো পাওয়া যাবে। তবে চটকপুর গ্রামটি সিঞ্চল ফরেস্টের মধ্যে হওয়ায় বনফায়ার করা নিষিদ্ধ।
চটকপুরের সব হোম-স্টে থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘার দর্শন পাওয়া যায়। তাছাড়া গ্রাম থেকে ৫০০ মিটার ওপরে উঠলে ভিউ পয়েন্ট আছে - সেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখার স্মৃতি সারা জীবন মনে থাকবে। গ্রামের বাইরে একটি পাইন জঙ্গল আছে এবং একটি পোখরি বা পবিত্র পুকুর আছে। হোম-স্টে থেকে কাউকে সঙ্গে নিয়ে হেঁটেই এই দুটি জায়গা থেকে ঘুরে আসা যায়।
চটকপুর থেকে গাইড নিয়ে টাইগার হিল যাওয়া যায় - ৪ কিলোমিটার ট্রেক। টাইগার হিল থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ও অন্যান্য শৃঙ্গের দুর্দান্ত ভিউ পাওয়া যাবে।
চটকপুর থেকে ফেরার সময় দার্জিলিং গিয়ে কেভেন্টার্স / গ্লিনারিস / সাংগ্রিলাতে লাঞ্চ করে ফিরতে পারেন। ফেরার সময় সীমানাদাড়া ভিউ-পয়েন্ট, পশুপতি মার্কেট, মিরিক লেক দেখতে পারেন।
লেখার সাথে থাকা ছবি আমার নিজের তোলা
আমি যামু দাদো🚩❣️🙏
কতো সুন্দর প্রকৃতি 💚
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit