শব্দের খেলা

in hive-107931 •  2 years ago 

বিপরীত শব্দ: বিধি-নিষেধ, বৃহৎ- ক্ষুদ্র, অধিক- অল্প।‘উৎকর্ষ’ শব্দটির বিপরীত শব্দ অপকর্ষ। অন্যদিকে অবনতি-উন্নতি, উর্বর-অনুর্বর।‘অসি’ শব্দের অর্থ কৃপাণ, খড়গ, তরবারি, তলোয়ার।‘অপলাপ’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা থেকে আগত, যার শাব্দিক অর্থ সত্য অস্বীকার, গোপন বা মিথ্যা উক্তি।


Uploading image #2...

পবন শব্দের অর্থ বাতাস। বাতাসের আরও কয়েকটি সমার্থক শব্দ- অনিল, সমীরণ, সমীর, মরুৎ, মারুত, বায়ু, বাত, হাওয়া। আগুন শব্দের কয়েকটি সমার্থক শব্দ- অনল, বহ্নি, দহন, সর্বভুক, সর্বশুচি, বৈশ্বানর।
অর্থগত বিচারে বাংলা শব্দ ৩ ভাগে বিভক্ত। যথা- যৌগিক শব্দ, রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ ও যোগরূঢ় শব্দ।চীনা শব্দ- চা, চিনি, লিচু, সাম্পান ইত্যাদি। পাঞ্জাবি শব্দ- চাহিদা, শিখ ইত্যাদি।

‘বনিতা’ শব্দের সমার্থক শব্দ অঙ্গনা। বনিতা শব্দের আরো কয়েকটি সমার্থক শব্দ- রমণী, অবলা, স্ত্রী, বালা, বামা। ‘আমলা’ আরবি ভাষার শব্দ। আরবি ভাষার আরও কয়েকটি শব্দ হলো: অন্দর, আজগুবি, আদাব, আদালত, আমানত, আয়েশ, আসামি, ইজারা, ইঞ্জিন, ইমন, ইমারত, ইশারা, ইশ্‌তেহার, উকিল, উজির, হামলা, মামলা ইত্যাদি।
তাম্বুলিক অর্থ বারুই, পান-ব্যবসায়ী, পর্ণকার। তামসিক অর্থ মেঘাচ্ছন্ন, অজ্ঞতাপ্রসূত।
‘গড্ডল’, ‘গড্ডর’ শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ, যার মানে হচ্ছে ‘ভেড়া’ কিংবা ‘মেষ’। এই গড্ডল হয়েই বাংলায় ‘গাড়ল’ কথাটিও জন্মেছে।
কাজেই, ‘গড্ডলিকা’ বলতে বুঝায় একটা মেষ দলে সামনে থাকা
আগুয়ান মেষটিকে। এবং বাকি ভেড়ারা অন্ধভাবে তাকে অনুসরণ করে
আর দলটা একটি নদীর মতো বইতে বইতে এগোতে থাকে।
এরই অনুপ্রেরণায় যখন কেউ অন্ধভাবে, নিজে কোনও বিবেচনা না করে,
সবাই করছে দেখে কোনও কাজে নিয়েজিত হয়, তখন ‘গড্ডলিকা
প্রবাহ’, ‘মেষদল’, ‘ভেড়ার পাল’ এই সমস্ত কথাগুলো ব্যবহার হয়।

দশানন যোগরূঢ় শব্দ। আরো কয়েকটি যোগরূঢ় শব্দ- পঙ্কজ, আদিত্য, রাজপুত, মহাযাত্রা, জলদ, পীতাম্বর, বহুব্রীহি ইত্যাদি।
বিপরীতার্থক শব্দ: সন্ধি-বিগ্রহ, অনুগ্রহ-নিগ্রহ, দয়া-নির্দয়তা, বর্জন-গ্রহণ/প্রতিগ্রহ। ‘স্পষ্ট’ এর অর্থ পরিস্ফুট, প্রকাশিত; যার বিপরীত শব্দ গুহ্য। গুহ্য শব্দের অর্থ গোপনীয়।

আরবি ভাষার শব্দ রায়। আরও কয়েকটি আরবি ভাষার শব্দ- কলম, নগদ, বাকি, উকিল, কানুন, এজলাস, মহকুমা, জান্নাত, গোসল, কিতাব, আদালত, হাদিস। চাঁদ – তদ্ভব, কুলি – তুর্কি ও জামা – পারসি শব্দ। ‘হৃষ্ট-পুষ্ট’ দ্বারা বোঝায় বলিষ্ঠ ও প্রফুল্ল অর্থাৎ মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যযুক্ত।

‘টোকাই’ দেশি শব্দ। আরও কয়েকটি দেশি শব্দ- পেট, টোপর, টোকাই, ডাব। ‘খোকা’ তুর্কি শব্দ, ‘সম্রাট’ সংস্কৃত শব্দ ও ‘লুঙ্গি’ ফারসি শব্দ। উল্লেখ্য, ‘গঞ্জ’ বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান অনুযায়ী ফারসি ও নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ অনুযায়ী দেশি শব্দ।

‘ফলাহার’ রূঢ়ি শব্দ। আরও কয়েকটি রূঢ়ি শব্দ হলো: হস্তী, বাঁশি, তৈল, কুশল, হরিণ, ঝি, পাঞ্জাবি, মন্দির, সন্দেশ, কারচুপি, শুশ্রুষা, বৎস, রাখাল, কদর্য ইত্যাদি।অশুদ্ধ বিপরীত শব্দজোড় আবশ্যিক-আংশিক। এর শুদ্ধরূপ আবশ্যক-অনাবশ্যক।

‘অভিরাম’ শব্দটি সংস্কৃত উপসর্গ যোগে গঠিত। এর অর্থ মনোহর, সুন্দর, তৃপ্তিদায়ক। বিরামহীন শব্দের অর্থ বিরতিহীন। বালিশ শব্দের অর্থ উপাধান । চলন অর্থ গমন, ভ্রমণ, প্রথা, ধারা, রীতি, রেওয়াজ।‘নগদ’ আরবি শব্দ। এ ভাষা থেকে আগত আরও কয়েকটি শব্দ: তসবি, তওবা, বাকি, মহকুমা, রায়, কলম, দোয়াত, এজলাস, উকিল ইত্যাদি।

বাংলা ভাষার যে সকল শব্দ সংস্কৃত থেকে কোনোরূপ পরিবর্তন ছাড়াই শব্দ ভাণ্ডারে যুক্ত হয়েছে সেগুলোকে তৎসম শব্দ বলে। যেমন- চর্মকার, বিমান, চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র, ভবন, ধর্ম, পাত্র, মনুষ্য ইত্যাদি।

পাতক সংস্কৃত শব্দ- যার অর্থ- পাপ, ধর্মবিরুদ্ধ কাজ।
‘লবণ’ তৎসম শব্দ। আরও কয়েকটি তৎসম শব্দ হলো: কার্য, গৃহ, চক্র, চর্মকার, হস্ত, দধি ইত্যাদি।
‘জোছনা’ অর্ধ-তৎসম শব্দ। আরও কয়েকটি অর্ধ-তৎসম শব্দ হলো: গিন্নি, কুচ্ছিত, নেমন্তন্ন ইত্যাদি।‘জোছনা’ অর্ধ-তৎসম শব্দ। আরও কয়েকটি অর্ধ-তৎসম শব্দ হলো: গিন্নি, কুচ্ছিত, নেমন্তন্ন ইত্যাদি।

'বিরাগী' একটি পুরুষবাচক শব্দ, যার অর্থ বিরাগযুক্ত, উদাসীন, নিস্পৃহ বা বিরক্ত। 'বিরাগী' শব্দটির স্ত্রীবাচক রূপ হলো 'বিরাগিনী'।

নিরত শব্দের বিপরীত- বিরত। নিরত অর্থ- নিযুক্ত; অনুরক্ত; নিবিষ্ট, ব্যাপৃত কর্মনিরত। স্ত্রীলিঙ্গ- নিরতা।

কোনো কোনো সময় দেশি ও বিদেশি শব্দের মিলনে শব্দদ্বৈত সৃষ্টি হয়ে থাকে। যেমন: হাট-বাজার (বাংলা + ফারসি), রাজা-বাদশা (তৎসম + ফারসি), হেড-মৌলভি (ইংরেজি + ফারসি), হেড-পণ্ডিত (ইংরেজি + তৎসম) ইত্যাদি।

শশাঙ্ক এর সমার্থক শব্দ হবে বিধু। ‘শশাঙ্ক’ -এর আরও কয়েকটি সমার্থক শব্দ – চাঁদ, সুধাংশু, হিমকর, শীতাংশু, কলাভৃৎ, ইন্দু, হিমাংশু, শশী।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!