১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি ডাকসু কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং ঐ সম্মেলনে ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন (মতিয়া ও মেনন) এবং ডাকসুর যৌথ উদ্যোগে ‘সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। এ সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগেই পূর্ব বাংলার আপামর জনসাধারণের দাবি সম্বলিত ঐতিহাসিক ১১ দফা দাবি প্রণীত হয়।
স্কর্চড আর্থ বা পোড়ামাটি নীতি এমন একটি সামরিক কৌশল যা দ্বারা সেনারা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের সামরিক বেসামরিক নির্বিশেষে সবাইকে হত্যার পাশাপাশি সবকিছু পুড়িয়ে দেয়। শত্রুর পক্ষে ব্যবহার করা সম্ভব - এমন স্থাপনা ও অবকাঠামো পুড়িয়ে দেয়। এ থেকে পরিত্রাণ পায় না খাদ্যের উৎস, পানি সরবরাহ, পরিবহন, যোগাযোগ, শিল্পকারখানা। অর্থাৎ প্রতিপক্ষের সবকিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে একেবারে নিঃচিহ্ন করে দেওয়ায় হল ‘স্কর্চড আর্থ’ বা পোড়ামাটি নীতি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান হানাদার বাহিনীও পোড়া মাটি নীতি গ্রহণ করেছিল । সেজন্যেই তো পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বলেছিল “পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ চাই না, মাটি চাই।”
কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর ছিল তখন পাকিস্তান হানাদারমুক্ত এবং মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে। মেহেরপুরের ভবেরপাড়া গ্রামের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে বহু দেশি-বিদেশি সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা এবং আইনসভার সদস্যদের উপস্থিতিতে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল স্বাধীন ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’ (মুজিবনগর সরকার) শপথ গ্রহণের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি গৃহীত হয়। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আইনসভার সদস্য ও প্রখ্যাত আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক মো: ইউসুফ আলী। মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অধ্যাপক মো: ইউসুফ আলী ও আব্দুল মান্নান। গার্ড অব অনার প্রদানকারী দলের নেতৃত্ব প্রদান করেন মাহবুব উদ্দিন আহমেদ (PSP)।
১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল তৎকালীন সিলেটের (বর্তমান হবিগঞ্জ জেলার) তেলিয়াপাড়ায় মুক্তিবাহিনী কর্তৃক গৃহীত ওয়ার স্ট্র্যাটেজি ‘তেলিয়াপাড়া স্ট্র্যাটেজি’ নামে পরিচিত। এ সভাতেই মুক্তিযুদ্ধের অংশগ্রহণকারী বাহিনী সম্পর্কিত সাংগঠনিক ধারণা এবং কমান্ড কাঠামোর রূপরেখা প্রণীত হয়।
‘ক্র্যাক প্লাটুন’ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ২ নং সেক্টরের অধীন একটি স্বতন্ত্র গেরিলা দল যারা মূলত গণবাহিনীর অংশ বলে পরিচিত। এই বাহিনীর সদস্যরা ভারতের মেলাঘর প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এই প্রশিক্ষণে গ্রেনেড ছোড়া, আত্মগোপন করা প্রভৃতি শেখানো হতো।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১ আগস্ট, ১৯৭১ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হয় ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ নামের সঙ্গীতানুষ্ঠান। ১৯৭১ সালের এই দিনে পণ্ডিত রবিশংকর মুক্তিযুদ্ধের প্রতি বিশ্বজনমত গড়ে তোলা এবং শরণার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য শিল্পী জর্জ হ্যারিসনকে নিয়ে এ অবিস্মরণীয় কনসার্টের আয়োজন করেছিলেন। এ কনসার্টের বাদক নাম ছিল বিটলস্। উল্লেখ্য, এ অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন ২০১৬ সালে সাহিত্যে নোবেলজয়ী কিংবদন্তি শিল্পী বব ডিলান।
৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণগুলোর একটি। এ ভাষণকে গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের ১৮৬৩ সালের বিখ্যাত গেটিসবার্গ বক্তৃতার সাথে তুলনা করা চলে। লিংকনের সে ভাষণও ছিল সংক্ষিপ্ত। মাত্র তিন মিনিটের । প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উভয়ই ইতিহাসের মূল্যবান দলিল।
নেদারল্যান্ডস বা হল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ডব্লিউ এ এস ওডারল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধকালে ২নং সেক্টরে গণবাহিনীর সদস্য ছিলেন। মি. ওডারল্যান্ড ১৯১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর আমস্টার্ডাম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭০ সালে বাটা সু কোম্পানির ম্যানেজার হিসেবে বাংলাদেশে আসেন।
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী দ্বিতীয় দেশ ভারত। প্রথম স্বীকৃতি দেয় ভুটান। বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে ভুটান ও ভারত ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ একই দিনে স্বীকৃতি দিলেও ভুটান ভারতের কয়েক ঘণ্টা আগে দিয়েছিল।