বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্থা

in hive-107931 •  2 years ago 

১৯৬৪ সালে জাতিসংঘের উদ্যোগে জেনেভায় আঙ্কটাড গঠিত হয়। আঙ্কটাড গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিলে উন্নত ও উন্নয়শীল বিশ্বের জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান পার্থক্য হ্রাসে পদক্ষেপ গ্রহণ। এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিল ৭৭টি এজন্য এর নামকরণ করা হয়েছে Group of-77.

ASEAN দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট। ASEAN এর পূর্ণরূপ Association of South East Asian Nations. এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ৮ আগস্ট, ১৯৬৭ সালে ব্যাংককে ৫টি দেশের সমন্বয়ে। এর সদর দপ্তর জাকার্তায়। বর্তমানে এর সদস্য দেশ ১০টি, যথাঃ ১. মিয়ানমার, ২. থাইল্যান্ড, ৩. লাওস, ৪. ভিয়েতনাম, ৫. সিঙ্গাপুর, ৬. ব্রুনাই, ৭. মালয়েশিয়া, ৮. ইন্দোনেশিয়া, ৯. ফিলিপাইন, ১০ .কম্বোডিয়া।


image.png

ACU এর পূর্ণরূপ Asian Clearing Union. এশিয়ার কিছু দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা লেনদেন নিষ্পন্নকারী সংস্থা। সদস্যদেশগুলোর মধ্যে মুদ্রা বাজার, বাণিজ্য সহযোগিতা ও সহজে লেনদেন নিষ্পন্ন করার তাগিদ থেকে ৯ ডিসেম্বর ১৯৭৪ এ সংস্থা গড়ে তোলা হয়। প্রতিষ্ঠাকালে এর সদস্য সংখ্যা ছিল ৬। এর সদর দপ্তর তেহরান, ইরান। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ‘আকু’র চেয়ারম্যান ছিলেন।

CIRDAP এর পূর্ণরূপ Centre on Integrated Rural Development for the Asia & Pacific. এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৯ সালে। এর সদর দপ্তর ঢাকায় (চামেলী হাউজ) অবস্থিত। CIRDAP এর সদস্য সংখ্যা ১৫টি দেশ ও একটি সংস্থা। যথা: বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ইরান, আফগানিস্তান, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ভারত, ফিজি (সর্বশেষ ২০১০) এবং FAO।

দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা SAARC (South Asian Association for Regional Co-operation) ৮ ডিসেম্বর, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। যার উদ্দেশ্য ছিল অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও উন্নয়নের একটি যৌথ আত্মনির্ভরশীলতা। এর পর্যবেক্ষক দেশ ৯টি (চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মিয়ানমার, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, মরিশাস ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন)। এ পর্যন্ত তিন বার (১৯৮৫, ১৯৯৩ ও ২০০৫) ঢাকায় সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সার্কের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্কের অভাব ও অন্তর্দ্বন্দ্ব। সার্কের প্রধান, সমস্যা দ্বিপাক্ষিক সমস্যা শীর্ষ সম্মেলনে আলোচিত হয় না।

CIS (Commonwealth of Independent States) প্রতিষ্ঠিত হয় ৮ ডিসেম্বর ১৯৯১ সালে। এটি সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রসমূহের সংস্থা। এর সদর দপ্তর মিনস্ক (বেলারুশ)। এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ৯টি এবং সহযোগী সদস্য ২টি মোট ১১টি। এর প্রধান নির্বাহী ‘সার্গেই লাভরভ’ (২০০৭ – বর্তমান)। এর বর্তমান মহাসচিব ‘আলেক্সি সারজিভ’। ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে কাজাখস্তানের রাজধানী আলমাআতায় সোভিয়েত ইউনিয়নের স্বাধীনতা প্রাপ্ত ১১টি দেশের প্রেসিডেন্টদের এক শীর্ষ বৈঠকে CIS – এর গোড়াপত্তন করা হয়।

বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উন্মুক্তকরণের জন্য এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে মুক্ত বাণিজ্য এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা APEC এর আরেকটি প্রধান লক্ষ্য। এই জন্য ১৯৯৪ সালে ইন্দোনেশিয়ার বোগারে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে APEC এর নেতৃবৃন্দ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উন্মুক্ত বাজার তৈরি করার "Bogor Goals" গ্রহণ করেন।

বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক জোট BIMSTEC ১৯৯৭ সালের ৬ জুন থাইল্যান্ডের ব্যাংককে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন নাম BISTEC. প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ৪টি। এর বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৭টি (বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভুটান)।

আরব বিশ্বে মুক্ত বাণিজ্য সনদ GAFTA (Greater Arab Free Trade Area). ১৯৯৭ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে আরব লীগ কর্তৃক GAFTA গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। ২০০৮ সালে বাস্তবায়িত হয়। এর সদস্য সংখ্যা ১৭টি।

১৯৯৮ সালের Kunming Initiative এর উদ্যেগে BCIM গঠনের চেষ্টা করা হয়। BCIM এর অন্তর্ভুক্ত হলো বাংলাদেশ, চীন, ভারত এবং মিয়ানমার।

২০০১ সালে ADB এর সহায়তায় দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের যোগাযোগ কানেক্টিভিটি তৈরির উদ্দেশ্যে South Asian Subregional Economic Cooperation বা SASEC গঠিত হয়। এর বর্তমান সদস্য ৭টি।

BCIM হলো Bangladesh, China, India, Myanmar Forum for Regional Co-operation. ২০০৩ সালে চীন এ ধরনের একটি অর্থনৈতিক জোটের প্রস্তাব করে। চীনের উদ্দেশ্য ছিল চীনের ইউনান প্রদেশকে সামনে রেখে মিয়ানমার, ভারতের উত্তর – পূর্বাঞ্চল, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডকে নিয়ে একটি জোট গঠন করা। এর আওতায় সড়ক হবে ভারতের কলকাতা-চীনের কুনমিং-বাংলাদেশের চট্টগ্রাম-মিয়ানমারের মান্দালয় পর্যন্ত। এটি একটি অর্থনৈতিক করিডর।

SAFTA এর পূর্ণরূপ South Asian Free Trade Area, এটি দক্ষিণ এশিয়ায় অবাধ বাণিজ্য এলাকা প্রতিষ্ঠা করার জন্য স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা চুক্তি। ৪-৬ জানুয়ারি, ২০০৪ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে পারস্পরিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে SAFTA চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং সদস্য দেশসমূহের অনুমোদনের পর চুক্তিটি ১ জানুয়ারি, ২০০৬ সাল থেকে সার্ক সচিবালয়ের নোটিফিকেশনের মাধ্যমে কার্যকর হয়। সাফটা চুক্তি বাস্তবায়নের পর জোটের উন্নয়নশীল সদস্য দেশসমূহ স্বল্পোন্নত সদস্য দেশসমূহের পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক হার ৩ বছরে এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলো ১০ বছরে তাদের শুল্ক হার ০-৫% এ হ্রাস করে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!