আশা করছি সবাই ভালো আছেন,আলহামদুলিল্লাহ আমিও আজকে অত্যন্ত ভালো আছি।দীর্ঘদিন পর আবারও আপনাদের সামনে উপস্থিত হলাম নতুন একটা ডায়েরি নিয়ে,আশা করছি শেষ পর্যন্ত সাথেই থাকবেন।
আমার ডায়েরির শুরুতেই ও-ই সমস্ত দেশ প্রেমিক ভাই ও বোনদের অন্তরের অন্তস্তল থেকে সহস্রাধিক সালাম জানায় যারা দেশকে দ্বিতীয়বারের মত জালেম সরকার থেকে স্বাধীন করার উদ্দেশ্যে,নিজেদের জীবন কে বিলিয়ে দিয়েছে,এবং যারা শত শত নির্যাতনের শিকার হয়েও পিছপা হোননি।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ আদায় করে ক্লাসে বসে ছাত্রদের পড়া শুনতেছিলাম,তবে আমার মন পড়েই ছিলো আন্দোলনরত ভাইবোনদের দিকে,মোবাইলে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে,কোন খবরও নিতে পারছিনা কারো থেকে,সুখ পাচ্ছিলাম না একটুখানিও,তবে আল্লাহর কাছে সর্বদাই আমাদের বীর ভাইবোনদের জন্য নিজেও দোয়া করছিলাম,আমার ছাত্রদেরকেও দোয়ার জন্য বলছিলাম।
সকাল আটটায় যখন নাস্তার ছুটি হলো খুব দ্রুত নাস্তা সেড়ে নিচে অফিসে গেলাম,কারণ অফিসে ওয়াইফাই ছিলো,নিচে গিয়ে খবর দেখার পর মনে কিছুটা প্রশান্তি পেলাম,যে ছাত্রজনতারা সকালেই "লং মার্চ টু ঢাকা" এর উদ্দেশ্যে বের হয়েছে,দীর্ঘক্ষণ নিউজ দেখে রুমে এসে এলাম ঘুমানোর জন্য,একটুপরেই চলে গেলো কারেন্ট,আমিও ঘুমে গেলাম তবে ঘুম থেকে উঠেও দেখি কারেন্ট নাই, খুব বেশি চিন্তিত হয়ে পড়লাম,কারেন্ট নাই,ইন্টারনেট নাই,কোন অঘটন ঘটছে নাকি আমার ছাত্র ভাইদের উপর,ঢাকায় থাকা বন্ধুর কাছে কল করে জানলাম ঢাকায় কারেন্ট আছে,কোন সমস্যা নাই,অন্তরে স্বস্তি ফিরলো,কল কাটার পরেই দেখলাম ইন্টারনেট এসেছে,তখন থেকে খবর দেখা শুরু হলো,একটার পর একটা খবর।
একটুপরেই শুনতে পেলাম,খুনি ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়েছে,অনেক বিশ্বস্ত সূত্র থেকেই খবর পাচ্ছিলাম,তবে পূর্ণ বিশ্বাস করতে পারছিলাম না,হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার অনেক ভিডিও দেখলাম,তবুও অশান্ত মন কে যেন শান্তই করতে পারছিনা,ভিতরে কেমন যেনো লাগছিলো,কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না,কিছুক্ষণ পর পুরোপুরি শিওর হয়ে গেলাম যে আসলেই হাসিনার পতন হয়েছে,আর বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মত স্বাধীন হয়েছে,ছাত্রদের যখন জানালাম ওরাও খুব খুশি হয়ে গেলো,ওরা সবাই সেজদাতুশ শুকর আদায় করলো।
আমরা একটুপরেই ছাত্রদের নিয়ে সালাতুশ শুকর আদায় করলাম দুই রাকা'ত,তার একটুপরেই আছরের সময় হলে আছরের নামাজ আদায় করে বিজয় উল্লাসে মেতে উঠতে বাহিরে বের হলাম,বাহিরে গিয়ে দেখি বগুড়া শহর লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে,সবাই খুব আনন্দ উপভোগ করছে,ও মিছিল করছে।
বাংলাদেশের মানুষ গুলো আজ যে কত বেশি আনন্দিত তা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব না,আপনারা গতকালের বিজয় উৎসব দেখলেই সেটা বুঝতে পারবেন।
একটু সামনে অগ্রসর হতেই দেখলাম সেনাবাহিনীর ভাইয়া'রা দাঁড়িয়ে আছেন,তখন উনাদের সাথে একটা সেলফি নিলাম,শুরুর দিকে সেনাবাহিনী যদিও সরকারের পক্ষেই ছিলো তবে পরবর্তীতে তারা ছাত্র জনতার পক্ষে এসেছে।
সেনাবাহিনীর সাথে সেলফি উঠানো শেষ করে আরও সামনে রওনা দিলাম,রাস্তায় মানুষ আর মানুষ সবার চোখে মুখে আজ যেন বিজয়ের হাসি,গতকাল ১৩/১৪ বছর পর মনেহয় বাঙ্গালী মানুষ এমন সুখময় হাসি হেসেছে।
একটুপর আমরা বগুড়া সাত মাথায় চলে আসলাম,এখানে আওয়ামিলীগ এর যত ক্লাব আছে,কার্যালয় আছে,সব পুড়ে শেষ করে দিয়েছে ক্ষুব্ধ জনতা।
এরপর সাতমাথায় আমরা কিছুক্ষণ তাকবীর দিলাম সমস্বরে উঁচু আওয়াজে নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার।
আমরা সবাই খুবই আনন্দিত,কারণ খুনী, ফ্যাসিস্ট,চোর সরকার হাসিনার পতন হয়েছে,যে বহুবছর ধরে আমরা আমাদের মোনাজাতে দোয়া করে এসেছি,আর আল্লাহ আমাদের দোয়া, মাজলুমদের দোয়া কবুল করেছেন।
কিছুক্ষণ এখানে থাকতেই পুলিশ থানা থেকে গুলি করে সামনে আসতে শুরু করেছে,সব মানুষ তখন পালিয়ে যেতে শুরু করেছে,আমিও হাটতে হাটতে মাদ্রাসায় ফিরতে লাগলাম,হেটে হেটে মাদ্রসার কাছে আসতেই দেখতে পেলাম বগুড়ার একটা ছাত্রলীগের ক্লাব,যেটার নাম দেওয়া হয়েছিলো জব্বার ক্লাব,এই ক্লাব ছাত্রলীগের কুত্তারা টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করতো,এখানে অনেক অসহায় মানুষকে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে নিয়ে এসে নির্যাতন করতো,এই ক্লাব এখন মসজিদ হবে জেনে খুব ভালো লাগলো।
লোকগুলো আমাদের দেখে ডাক দিলেন,কাছে গেলে বললেন সব বিস্তারিত, তারপর আমাকে বললেন হুজুর আমরা এই ক্লাব মসজিদ বানাবো একটা সুন্দর নাম বলে দিন,আমি বললাম আপনারা যে নিয়্যাত করেছেন তা অত্যন্ত উত্তম একটা নিয়্যাত, তাই এত তারাহুরো না করে জামিল মাদ্রাসায় গিয়ে ওখানে অনেক বড় বড় আল্লাহওয়ালা হুজুর আছেন উনাদের থেকে পরামর্শ করে নাম দিন এটা ভালো হবে।এরপর আমরা মাদ্রাসায় চলে আসলাম,আমার ছাত্রদের সে কি আনন্দ,বলার বাহিরে।
আমার আজকের এই ডায়েরি আমি উৎসর্গ করলাম,আমার ও-ই সমস্ত শহীদ ভাইদের জন্য,যাতের রক্তের বিনিময়ে আজকে আমরা আমাদের এই সোনার বাংলাকে স্বৈরাচার মুক্ত করতে পেরেছি।
এই ছিলো আমার ডায়েরি যা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম,আশা করছি আমার ডায়েরি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে
@habib35
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
@tipu curate 2
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted 👌 (Mana: 1/7) Get profit votes with @tipU :)
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Congratulations, your post has been curated by @dsc-r2cornell. You can use the tag #R2cornell. Also, find us on Discord
Felicitaciones, su publicación ha sido votada por @ dsc-r2cornell. Puedes usar el tag #R2cornell. También, nos puedes encontrar en Discord
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit