Vegetable photography

in hive-109690 •  last year 

IMG20231113233402.jpg

IMG20231113233350.jpg

IMG20231113233344.jpg
সব মেয়ে আংটি পরতে পছন্দ করবে এটা কি কোনো নিয়মের মধ্যে পড়ে? তবুও এনগেজমেন্ট রিং বলে আমি চেষ্টা করেছি, কিন্তু চেষ্টা করলেই সব মানুষ সবকিছু পারেনা। আমি সদ্য ইন্টার্ন শেষ করা একজন এমবিবিএস ডাক্তার। একটা প্রাইভেট হসপিটালে চাকরি করি, চাকরিটা একেবারেই নতুন, যখন তখন ওটি অ্যাসিস্ট এর জন্য ডাক পড়ে। আর আংটি খুলে বারবার ওয়াস নেয়া সত্যি কষ্টকর। একদিন ভুল করে প্রায় আংটিটা রেখেই চলে এসেছিলাম। সেই দিন এসে বাসায় আংটি খুলে রাখলাম।
বিয়ে আরো ছয় মাস পরে, আর আংটি খুলে রাখলেই এনগেজমেন্ট ভেঙ্গে যায় না। আমার বাসায় এসব নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যথা নেই, থাকবেই বা কেন কারন এটার কোনো লজিক নেই।
কিন্তু হঠাৎ একদিন না জানিয়ে আমার হবু ননদ আর ভাসুরের বউ আমাদের বাসায় এলেন, আংটি টা হাতে নেই এটা দেখেও এই বিষয়ে কিছু বললেন না।
কিন্তু রাতে শাহেদের ফোন কলে আমি বুঝে গেলাম এটা নিয়ে ওদের বাসায় তুলকালাম কাণ্ড হয়ে গেছে।
-তুমি নাকি আংটি খুলে রেখেছো, কি এনগেজমেন্ট টা ভেঙে দিচ্ছ নাকি, শাহেদ এর কন্ঠে উত্তাপ।
-এসব কি বলছেন, আপনি নিজেও ডাক্তার আপনি জানেন কোন কারণের জন্য আমি আংটি খুলে রাখতে পারি।
-আমার সাথে ডাক্তারি ঝেড়ো না আমি তোমার আট বছর এর সিনিয়র কাজেই আমার সাথে এইসব টপিক নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করো না, ভালোই ভালোই হাতে আংটি পড়ে রাখবে।

শাহেদ লাইন কেটে দিল, আমি অবাক হয়ে গেলাম এতো ছোট্ট একটা বিষয় আর এত বড় একটা কান্ড।
এরপর থেকে কষ্ট হলেও উনার কথা মেনে চলার চেষ্টা করছি।
পরের সপ্তাহে এক বিকেলে রেস্টুরেন্টে বসে শাহেদ এর সাথে কফি খাচ্ছিলাম,
-শোনো ইরা নাচনেওয়ালি দের মতো নুপুর পড়বে না, আমার বাবা-মা কেউ পছন্দ করেনা।
-নুপুর আমার খুব পছন্দের ,এটা গত বার্থডেতে বাবা আমাকে উপহার দিয়েছেন।
-এখন তোমার মা-বাবার কথা ভাবতে হবে না এখন থেকে আমার বাবা-মার কথা ভাববে।
চুপচাপ মাথা নিচু করে শুনলাম।

কলিগের বার্থডে ছিল, সবাই মিলে খুব ছোট্ট করে হসপিটালে একটা কেক কাটলাম। আমার আরেকজন কলিগ ছবি তুলে সবাইকে ট্যাগ করে দিল, সেই ছবির নিচে আমার হবু ননদ কমেন্ট করলো, শোনো ইরা আপু এখন তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে এসব ঢলাঢলি ছাড়তে হবে, আমাদের ফ্যামিলিতে এসব চলবে না। আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম ও আমাকে ইনবক্সে বলতে পারতো, সবার সামনে যেতেই তো এখন আমার লজ্জা লাগবে। এতোটা কমনসেন্সহীন মানুষ হয় কিভাবে?
বিয়ের আর কিছুদিন মাত্র বাকি, আমার হবু শাশুড়ি ফোন দিয়েছেন
-হ্যালো
-জ্বী, আসসালামু আলাইকুম
-কেমন আছো?
-জ্বী ভালো আছি, আপনি ভালো আছেন?
-হ্যাঁ ভালো শোনো বিয়ের তো আর বেশি দিন বাকি নেই, তো তোমার ব্লাউজের মাপ টা দিলে সুবিধা হয় কাল আমার ছোট মেয়েকে পাঠিয়ে দেবো ওর কাছে যা যা দেয়ার দরকার দিয়ে দিবে।
রাতে আমি শাহেদ কে ফোন করে বললাম, মা ফোন করেছিল আর বাকি যা যা কথা হয়েছে সবই বললাম,
-হ্যাঁ তো সমস্যা কোথায়?
-না, না সমস্যা না আমি বলতে চাচ্ছি যে আমি আসলে বিয়েতে শাড়ি না লেহেঙ্গা পড়তে চাই আমার অনেক দিনের ইচ্ছা।
-তুমি বলিউডের নায়িকা না, এটা মাথায় রাখো।
-এতে নায়িকা হওয়ার কি আছে? এখন তো অনেক মেয়ে পড়ছে, আর আপনার বাজেটের মধ্যেই হবে। মানুষ তো একবারই বিয়ে করে , সেখানে আমি আমার পছন্দের পোশাক পরতে চাই এই প্রথম আমি একটু উচ্চস্বরে কথা বললাম।
-তুমি আমার সাথে চিৎকার করো, এত বড় সাহস তোমার
-আমি চিৎকার করিনি, আমি শুধু আমার পছন্দটা আপনাকে জানিয়েছি
-চুপ, একদম চুপ। আমার মা যেটা পছন্দ করে দেবে সেটাই পরবে আর আমার ফ্যামিলি যেটা বলবে শুধুমাত্র সেটাই করবে এর বাইরে পা বাড়ানোর চেষ্টা করবে না। আমি পছন্দ করিনা।
আমার খুব কান্না পাচ্ছিল, খাবার টেবিলে বাবা-মা ভাই সবাই ছিলো, বাবা জানতে চাইলেন আমার কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা কেননা এই সময়টাতে তো মেয়েরা বেশ উৎফুল্ল থাকে। আমি এতদিন কোনো কিছু না জানালেও আজ আর পারলাম না ঝর ঝর করে কেঁদে ফেললাম আর সব কিছু খুলে বললাম।
মা আমার মাথায় হাত রাখলেন, বাবা জিজ্ঞেস করলেন আম্মু কালকে তোমার কোন ডিউটি আছে?
আমি জানালাম মর্নিং ডিউটি।
ঠিক আছে তাড়াতাড়ি ফিরে এসো পরে এসব নিয়ে কথা হবে আর একদম কান্নাকাটি করবে না , মা-বাবা পাশে আছে তো নাকি। এখন জলদি খেয়ে নাও তো আম্মু।
পরদিন ডিউটি থেকে ফিরে আমি অবাক হয়ে গেলাম, দুপুরের খাওয়া-দাওয়া চলছে, ওদের বাড়ির সকলকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে।
খাওয়া শেষে আমার হবু শাশুড়ি বললেন, হঠাৎ কি ব্যাপার ভাই সাহেব সকাল বেলা ফোন দিয়ে বললেন , আজকেই দাওয়াত অবশ্যই যেন আসি। আপনার কথা তো আর ফেলতে পারি না হাজার হোক আত্মীয় হতে যাচ্ছেন।
-না আসলে আপা আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা আপনাদের আত্মীয় হতে পারছিনা
হবু শাশুড়ি চমকে উঠলেন সাথে ঘরভর্তি সবাই আমি নিজেও
-মানে বিয়ের আর কয়েকদিন বাকি ,আপনি এসব কি বলছেন?
-সত্যি বলতে কি আপা, আমার মেয়েটাকে আমি খুব যত্ন করে বড় করেছি, এখন বিয়েটাও আমিই ঠিক করেছি। নিজের মেয়ের কাছে মুখ দেখাতে কেমন যেন লজ্জা লাগছে।
-আপনি বলতে কি চাচ্ছেন?
বাবা মুখ গম্ভীর করে বললেন, আমার মেয়ে আংটি পছন্দ করেনা, তবুও সে পড়েছে আপনাদের মন রক্ষার জন্য। আর নুপুর পড়লেই কেউ নাচনেওয়ালী হয়ে যায় না এটা তার শখের ব্যাপার।ছেলেবন্ধু কলিগ থাকবেই যেহেতু আমার মেয়ে একজন শিক্ষিত কর্মজীবী মেয়ে সেটা নিয়ে আপনার ইন্টারমিডিয়েট ফেল করা মেয়ে কথা শোনাতে পারে না। আর এখনকার বিয়ে গুলোতে বর কনে মিলে তাদের বিয়ের ড্রেস আপ গেটাপ কেমন হবে তা ঠিক করে, আমাদের মত বুড়ো-হাবড়ারা ঠিক করে না, আর আপনার ছেলে তো বলেই দিয়েছে সবকিছু আপনার কথায় চলবে ,আপনার ফ্যামিলির বাইরে যাওয়া যাবে না, নিজের বাবা-মা চুলোয় যাক কিন্তু তার বাবা-মা ঠিক রাখতে হবে । এতকিছু শুনে আমি আমার মেয়েটাকে কি করে নরকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে পারি বলুন তো?
-না, না শুনুন আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে
-জ্বী আপা ভুল হয়েছিল, বয়সে আট বছরের বড় একটা ছেলের সাথে শুধুমাত্র তার ডিগ্রী দেখে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলাম এটা আমার জন্য লজ্জা। আমি ছেলের সংস্কার দেখিনি, ছেলের মনে আমার মেয়ের জন্য কোন কোমলতা আছে কিনা সেটাও দেখিনি। আমি এটা ভেবে দেখিনি আট বছর পর আমার মেয়েও হয়তো আপনার ছেলের চেয়ে বড় কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছবে, আপনার ছেলের কোন দোষ নেই, আসলে ব্যাপারটা জেনারেশন গ্যাপ হয়ে গেছে যেটা আমি বুঝতে পারিনি আট বছর অনেক লম্বা একটা সময়।
ইরা ,আম্মু আংটিটা খুলে দিয়ে দাও।
আমি আব্বুর কথা মতো কাজ করলাম, মনে মনে বলছিলাম এরা কখন যাবে আমি আমার আব্বুকে জড়িয়ে ধরবো।
আব্বু আংটিটা শাহেদের হাতে দিয়ে বলল, বাবা শোনো তুমি বরং তোমার মেন্টালিটির সাথে ম্যাচ করে এমন কোন মেয়ে বিয়ে করো, যে তোমার কথায় উঠবে বসবে ,তোমার মায়ের কথায় বাথরুমে যাবে আসবে , তোমার বোনের পারমিশন নিয়ে ফেসবুক মেসেঞ্জার চালাবে। এবার তোমরা আসো বাবা মেয়েটা ডিউটি থেকে অনেক কষ্ট করে এসেছে, সকালে ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করেনি, রাতেও না ।
সবাই বের হয়ে গেল, আমি আব্বুকে জড়িয়ে ধরলাম, অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ুয়া ছোট ভাই এসে বললো, কিরে আপু লেহেঙ্গার কি খুব বেশি দাম নাকি?
আমি চোখ পাকিয়ে বললাম ,কেন তোর কেউ আছে নাকি?
-আরে না না কি যে বলিস, আমি তো এমনি জিজ্ঞেস করছিলাম, বেচারা কোনমতে পালিয়ে গেলো।
আমি সহ আব্বু-আম্মু সবাই হেসে উঠলাম, অনেকদিন পর স্বস্তির হাস

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

HI @shourovsarker

hope you doing well. We have some restrictive rules on our Steemit platform. You must follow those rules. Copying this post of yours from somewhere else is a violation of our Steemit platform rules. To be a real blogger you must use your creativity. Your content is totally copied from another source. You have to mention or give the link from where you copied content. Otherwise, it will be considered as plagiarism. Also you only can 25% (of course have to mention the source ) of the rewritten article from somewhere else and the remaining 75% have to write on your own. Hope you will try to follow our Steemits rules from now on.

Thank you.

Your post is written from this source link .