সম্মানিত দ্বীনদার মুসলমান মুত্তাকিন ভাইয়েরা সবার প্রতি আমার আন্তরিক সালাম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
আপনারা সবাই কেমন আছেন আশা করি সবাই আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে ভালো আছেন
এজন্য আমরা সবাই শুকরিয়া আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ
আমরা আজ এক গরিবের হজের ঘটনা নিয়ে আলোচনা করব আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সবাইকে জানা এবং মানা ও বুঝার তৌফিক দান করে আমিন।
এক গরীবের হজের ঘটনা ঃ
দেওবন্দ মাদ্রাসার কাছে এক গরীব লোক বাস করত। তার নাম ছিল ইসমাইল। সে খুব দ্বীনদার ছিল এবং হক-হালাল মেনে চলতো শরীয়তে পরিপূর্ণতা পাবন্দ এবং তাহাজ্জুদ গুজার ছিল। ঘাস বিক্রি করে সে জীবন ধারণ করত। তার ঘাসে খুব বরকত বলে সকল গৃহস্থের বিশ্বাস ছিল। এজন্য তার ঘাস কেনার অপেক্ষায় বাজারে সবাই বসে থাকতো। ঘাস মাথায় করে যখন সে বাজারে পৌঁছাতো তখন সবাই ঘাস কেনার জন্য তাকে ঘিরে ধরত। কেউ পেতো কেউ পেতো না। সে প্রতিদিন দুই আনার ঘাস বিক্রি করতো। দুই পয়সা গরিবদেরকে দান করে দিত। এক আনার বাজার করত, আর দুই পয়সা জমা করে রাখত।
যখন এক টাকা জমা হয়ে যেত তখন সে টাকা দিয়ে খাওয়ার আয়োজন করে দেওবন্দ মাদ্রাসার আলেমদেরকে দাওয়াত করত। তার দাওয়াত খাওয়ার জন্য আলেমগনও দিন গুণতেন এবং বলা-কওয়া করতেন। একদিন হযরত মাওলানা ইয়াকুব সাহেবকে বলতেও শোনা গেছে যে, ইসমাইলের দাওয়াতের আর কতদিন বাকি আছে? মোটকথা তার হালাল উপার্জনের মধ্য যে- যে নূর ছিল তা ' আলিমগঞ্জ বুঝতে পেরেছিলেন।
একদিন এই দ্বীনদার লোকটির হজে যাওয়ার ইচ্ছা হল। কিন্তু টাকা পাবে কোথায়? যা কিছু আয় হয় তার সবই খরচ হয়ে যায়। তবুও সেই স্থানকে একবার দেখতে হবে যেখানে ইবাদত করলে এক লক্ষ গুণ বেশি সাফ পাওয়া যায়, যেখানে কোরআন নাজিল হয়েছে, রাসূলুল্লাহ যেখানে পবিত্র পা ফেলে হেঁটেছেন, যে-ঘরের তাওয়াফ করেছেন আদম ( আঃ) থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত সকল নবী ও রাসুল যেখানে সাড়ে তিনশত নবী -রসুলের পবিত্র দেহের কবর বিদ্যমান,
এমন কোন নবী দুনিয়াতে আসেনি যিনি এই ঘরের তাওয়াফ না করেছেন।
তবে আর বিলম্ব কেন? সেই জায়গা দেখতেই হবে, সেই ঘরের তাওয়াফ করে হজের স্যার অর্জন করতেই হবে। ইসমাইল হজ করার জন্য দেওয়া না হয়ে গেল। তার কাছে যা- কিছু ছিল তাই নিয়ে রওনা হয়ে গেল। কোনরকমে করাচির সমুদ্র তীরে কিয়া মারি জেটিতে গিয়ে পৌঁছালো।
কিন্তু সঙ্গে জাহাজের ভাড়া নাই।
তাই জাহাজের পাশে দাঁড়িয়ে জাহাজের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো, কিভাবে জেদ্দা যাওয়া যায়। হঠাৎ দেখল, জাহাজ থেকে কুড়িরা মাথায় করে মাল নামাচ্ছে।
পাশেই দাঁড়িয়ে আছে জাহাজের ইংরেজি পাইলট। ছে পাইলট কে বলল, আমাকে আপনার জাহাজে কোন কাজ দেওয়া যায় না? পাইলট জিজ্ঞাসা করল, কি কাজ করতে পারো,? ইসমাইল বলল, কুলীরা যে কাজ করছে সেই কাজেই না - হয় দিন। '''
জাহাজে কোন কাজের লোকের দরকার ছিল না। তাই পাইলট ইসমাইলকে এড়ানোর জন্য একটি বিরাট বান্ডিল,দেখিয়ে বলল, এই বান্ডিল টি, যদি একা মাথায় উঠিয়ে নিয়ে জাহাজ থেকে নামাতে পারো তবে তোমাকে কাজ দেওয়া হবে।,,,,, কিন্তু বোঝার দিকে তাকিয়ে ইসমাইলের মাথায় ঘুরে গেল। এত বড় বান্ডিল তো জাহাজ থেকে চারজন কলি মাথায় করে নামাচ্ছে, আমি একা কি করে নামাতে পারব? ইসমাইল আল্লাহর কাছে মনে মনে বলতে লাগলো,,,
হে আল্লাহ! আমি সব কিছু ছেড়ে তোমার ঘরে হজ করার জন্য এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। বাকি পথটুকু অতিক্রম করার সাধ্য আমার নাই। তুমি আমাকে সাহায্য কর। আমাকে শক্তি দান করো।,,,,, এই বলে সে বোঝার কাছে গিয়ে বিসমিল্লাহ বলে বোঝাটি ধরল,আর কোথায় থেকে যে এত শক্তি আসলো সে বুঝতেই পারল না, এক ঝাঁকিতে এসে বান্ডিলটি মাথায় তুলে নিয়ে জাহাজ থেকে নেমে যেটিতে রেখে দিল। পাইলট এই দৃশ্য দেখে খুশি হয়ে তাকে জাহাজে কাজ দিয়ে দিল। জাহাজ ছেড়ে দিল। প্রতিদিন সে
কোরআন তেলাওয়াত করে কাটায়। পাইলট তার কোরআন তেলাওয়াত শুনে মুগ্ধ হয়ে শুনতে থাকে।
একদিন পাইলট জিজ্ঞাসা করল, প্রতিদিন তুমি এটা কি পড়ো।,,,, সে বলল,, এটা আল্লাহর কালাম,,,,। পাইলট আবার জিজ্ঞাসা করল,,, তুমি কোথায় পেয়েছো?
ইসমাইল বললো,,,এটা সাত আসমানের ওপর লাওহে মাহফুযে লেখা আল্লাহর নিজস্ব কথা ফেরেশতাদের মাধ্যমে আমাদের রাসূল মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লামের কাছে এসেছে। সেখান থেকে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে এই কোরআন ছড়িয়ে পড়েছে।,,,,পাইলট বললো,,, এটা যখন আল্লাহর নিজস্ব কথা তবে এটা আমিও শিখবো। আমাকে শেখাও। ইসমাইল পাইলটকে কুরআন শিখাতে লাগলো।
একদিন পাইলট ইসমাইল বললো যে তাকে তাকে কয়েকদিনের ছুটি দিতে হবে। সে জেদ্দা থেকে মক্কায় গিয়ে হজ করবে। মক্কায় কোরআন নাজিল হয়েছে এবং সেখানেই রসুলের জন্মস্থান। পাইলট বললো, আমিও কোরআন নাজিল হওয়ার স্থান দেখতে যাবো,আমিও হজ করব। ইসমাইল বলল, সেখানে মুসলমান না হলে প্রবেশ করা যাবে না। পাইলট বলল, আমি মুসলমান হব।,আমাকে মুসলমান বানাও।,,,,,ইসমাইল তাকে কালেমা শাহাদাত পরিয়ে মুসলমান বানালো এবং একসাথে হজ করে আবারো জাহাজে ফিরে আসলো। পাইলট টাকে করাচি বন্দরে নিয়ে এসে নামিয়ে দিল। সেখান থেকে সে নিরাপদে দেওবন তার বাড়ি ফিরে গেল।
এই ঘটনা দ্বারা বোঝা যায় আল্লাহ মহব্বতে যারা আশেক হয়ে যায় তাদের কোন কাজ পড়ে থাকে না। সব কাজেই সহজ হয়ে যায়,,,
এজন্য আসেন আমরা সবাই আল্লাহর উপর ভরসা করি সমস্ত কাজ আহসান হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ আপনি সবাইকে কোরআন হাদিস মেনে চলার তৌফিক দান করেন। আমিন
সবাই ভাল থাকবেন আল্লাহ হাফেজ
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
লেখক : @hafezabujafor11.
Thank you for publishing a post on the Hot News Community, make sure you :
Verified by : @fantvwiki
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit