source
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
আসছালামুআলায়কুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু।
প্রিয় সাথী বৃন্দ,
আজকে আমি আমাদের একটি রুহের রোগ- রিয়া অর্থাৎ লোক দেখানো মনোভাব। এই রুহের রোগ নিয়ে কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব ইনশাআল্লাহ।
আমরা মানুষ, আমাদেরকে মহান আল্লাহ তা'আলা চঞ্চল করে সৃষ্টি করা হয়েছে। আমরা সবাই খুব চঞ্চল, কখনো স্থির থাকতে পারিনা। আমরা সবাই অস্থির। আমরা আমাদের শিশুকাল থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত এক এক সময়ে, এক এক জিনিস, আমাদের পছন্দের তালিকায় থাকে। শিশুকালে যেমন আমরা খেলাধুলা বেশি পছন্দ করি। যৌবন বয়সে আমরা নেতৃত্ব, নারী এরপর আমরা পথপদবী, মুরুব্বীগিরি, নামধাম ইত্যাদি প্রতি লোভ থাকে বৃদ্ধ পর্যন্ত।
source
আর আমাদের জীবনে সবচেয়ে একটা বড় রোগ হলো লোক দেখানো মনোভাব। এই রোগটা আত্মার রোগ হিসেবে অভিহিত। এই রোগটা এতই জঘন্যতম নিকৃষ্টতম যা আমাদের ঈমান, আমল দুইটাই একেবারে ধ্বংস করে দেয়। আমরা যা আমল করি তাহার কোন নেকি আমাদের আমলনামায় জমা হয় না। যাকে দেখানোর উদ্দেশ্যে আমরা আমলগুলো করি, মহান আল্লাহতালা সেই সমস্ত আমলের নেকি তাদের থেকেই নিতে বলবেন অর্থাৎ মহান আল্লাহতালা সে সমস্ত আমলের কোনো নেকি দিবেন না।
source
এ বিষয়টি বোধগম্য হওয়ার জন্য আমরা একটি হাদিস উল্লেখ করবো এখন। মহান আল্লাহ তাআলা হাশরের ময়দানে অথ্যাৎ বিচার দিবসে তিনজন ব্যক্তিকে দেখে নিবেন। তার মধ্যে এক দানশীল ব্যক্তি থাকবে, তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তুমি দুনিয়ার জীবনে তোমাকে এত সম্পদ দেওয়া হয়েছিল, তা তুমি কিভাবে ব্যয় করেছ। তখন দানশীল ব্যক্তি বলবে, হে আল্লাহ আমি দুনিয়াতে মসজিদ, মাদ্রাসা, দুঃস্থ ব্যক্তি নেই যে, তাদেরকে আমি টাকা পয়সা দিয়ে দান করি নাই। তখন মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে বলবে, তুমি মিথ্যুক অর্থাৎ মিথ্যা কথা বলিতেছ। লোকে তোমাকে বাহবা দিবে, দানশীল বলবে এই জন্য তুমি দান করেছো। এখন তুমি যাকে দেখানোর জন্য দান করেছ, তাদের থেকে তোমার বদলা বা নেকির নিয়ে নাও। আমার কাছে কোন বদলা নেই।
source
এরপর মহান আল্লাহতালা ঐ শহীদকে ডেকে বলবেন, তুমি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়েছ, তখন শহীদ ব্যক্তি বলবে জ্বী মাবুদ, আমি তোমার দ্বীনকে জিন্দা করার জন্য শরীরের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত যুদ্ধ করতে করতে শাহাদাত বরণ করেছি আর এটা একমাত্র তোমার জন্যই করেছি। তখন মহান আল্লাহ তা'আলা তাকে বলবে, তুমি মিথ্যুক অথ্যাৎ তুমি মিথ্যা কথা বলিতেছ। লোকে তোমাকে শহীদ বলবে, এই জন্য তুমি যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছ। তোমার কোন বদলা আমার কাছে নেই। যাদের জন্য করেছ, তাদের থেকে তোমার বদলা নিয়ে নাও।
source
এরপর মহান আল্লাহতালা এক হাজীকে ডেকে বলবেন, তোমাকে সম্পদ দেয়া হয়েছিল। তুমি তো হজ্ব করেছ, তখন হাজী বলবে, আমি তোমার উদ্দেশ্যেই হজ করেছি। তোমাকে রাজি এবং খুশি করার জন্য হজ করেছি। তখন মহান আল্লাহতায়ালা তাকে বলবেন, তুমি মিথ্যুক অর্থাৎ মিথ্যা কথা বলিতেছ। লোকে তোমাকে হাজী বলবে, এজন্য তুমি হজ করেছ। অতএব যাদেরকে দেখানোর জন্য তুমি হজ করেছ, তাদের থেকে তুমি বদলা অথ্যাৎ নেকি নিয়ে নাও। আমার কাছে কোন বদলা নেই।
লোক দেখানো অর্থাৎ রিয়া যে কত বড় জঘন্যতম অপরাধ তা আমরা এই হাদিস থেকে উপলব্ধি করতে পারলাম। আসলে আমাদের ইবাদত বন্দেগী অথ্যাৎ যে আমল বা কাজই করি না কেন, একমাত্র, শুধুমাত্র, কেবলমাত্র, মহান আল্লাহ তায়ালাকে রাজি এবং খুশি করার জন্যই করতে হবে। তাহলে মহান আল্লাহ তা'আলা সেই আমলের নেকি আমাদেরকে দান করবেন। আমাদের প্রতি খুশি হবেন এবং চিরস্থায়ী শান্তিময় জায়গা জান্নাত দান করবেন। আসুন আমরা রিয়া মুক্ত আমল করি। নাজাত পেয়ে যায়।
আমাদের সমাজে এখন ইসলামের দিকগুলো কে আমরা লোক দেখানোর জন্য করে থাকি।আর তার বিশেষ কারণ হলো অনেক মানুষ এটা ভাবে যে আমি যদি এখন নামাজ আদায় না করি তাহলে সবাই আমাকে বলবে নামাজ আদায় করলে না যে।আর তাই অনেক মানুষ নামাজ আদায় করে মানুষের ভয়ে কিন্তু সৃষ্টিকর্তা কে ভয় করে না আর আমরা যদি লোক দেখানো নামাজ পড়ি তাহলে সেটা সৃষ্টিকর্তার কাছে গিয়ে পৌঁছায় না। আমাদের সাথে এতো সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সর্বপ্রথম আপনাকে ধন্যবাদ কারন আপনি আমার পোস্টটি সুন্দরভাবে ও কষ্ট করে পড়ার জন্য। আপনি একটি সুন্দর মন্তব্য করেছেন। আপনার প্রতি শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই এই হাদিসটি আমরা মুসলিমরা কম বেশি সবাই জানি। তারপরো কেন জানি আমল করি না। আমরা যাই করিনা কেন শুধু মানুষের কাছ থেকে বাহাবা শোনার জন্য করি। আল্লাহকে খুশি করার জন্য করি না।। যদিও বা দেখাই যে আল্লাহর জন্য করছি কিন্তু অন্তরে থাকে তার উল্টোটা।
যাইহোক আল্লাহ আমাদের সকলকে এই ফেতনা থেকে মুক্ত করুক আমিন। ভালো থাকবেন প্রিয় ভাই দোয়া করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জানি মানি না এটা এখন আমাদের সমাজের ব্যাধি আকারে প্রকাশ পেয়েছে। তাই আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ কারন আপনি আমার পোস্টটি পড়ার জন্য। আপনার প্রতি শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মন থেকে কোন কিছু না করে লোক দেখানো কোন কাজই করা ঠিক না। সেটা নামাজই, দান বা পড়াশোনা যাই হোক না কেন।মন থেকে যে কাজটা করা হয় সেটা সবচেয়ে বেশি ভালো হয়।
চমৎকার এই বিষয় নিয়ে লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপা, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ কারন আপনি আমার পোস্টটি সুন্দরভাবে পড়েছেন। আপনার প্রতি শুভকামনা রইল আল্লাহ হাফেজ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন ভাই আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় রোগ হলো লোক দেখানো মনোভাব ৷ আর এই মনোভাব অনেক মানুষের কাছেই রয়েছে আমার মনে করি আমাদেরও আছে কিন্তু আমরা জানা সত্তেও এগুলো পরিহার করতে পারি না কারন এগুলো আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে আমরা পরকালের কথা কখনও চিন্তাও করতে জানি না ৷ তবে আমাদের উচিত লোক দেখানো মনোভাব খুব দ্রুত আমাদের মন থেকে ঝেরে ফেলতে হবে তাহলেই দেখবেন জীবন অনেক সুন্দর ৷
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
লোক দেখানো কোনো কিছুই ভালো নয়।। আমাদের সমাজে এখন এই ধরনের মানুষের অভাব নেই,,তারা অন্যের মুখে নিজের সুনাম শোনার জন্য এই ধরনের লোক দেখানো কাজ করে থাকেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
লোক দেখানো মনোভাব খুবই খারাপ মনোভাবের পরিচয়। আর দান সব সময় কাউকে না জানিয়ে করা উচিত। নাহলে দানের পুণ্যলাভ করা সম্ভব নয়। আর শুধু পুন্যলাভের জন্যই দান করবেন না। যারা সত্যই অর্থকষ্টে ভুগছে, তাদের আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী দান করা উচিত বলে আমি মনে করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit