টাইমলাইট।

in hive-120823 •  2 days ago 

"নমস্কার বন্ধুরা!"
আশা করি সবাই ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আমি আবারও নতুন একটি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন আর বেশি দেরি না করে শুরু করে দেই.......

1000007138.png

Edit by canva

কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের সর্বদা অন্যের মনোযোগ আকর্ষন করার থাকে। তারা সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকতে চায়। প্রত্যেকটা পরিবারেও এমন একজন মানুষ থাকে আবার সব বন্ধুদের মাঝেও এমন একজন খুঁজে পাওয়া যায়। নিশি ঠিক এমনই একজন মেয়ে। সে চায় সবাই সর্বদা তার উপরই মনোযোগ থাকুক।

নিশি তার পরিবারের বড় মেয়ে। সেই জন্য পরিবারের সবাই তাকে একটু বেশিই গুরুত্ব দেয়। আর এই কারণেই বেশি সমস্যা হয়েছে। ছোটবেলা থাকেই তার পরিবারের সব সদস্যদের কাছ থেকেই গুরুত্ব পায় তো, এজন্যই সে চায় তাকেই যেন সবাই সর্বদা গুরুত্ব দেয়। এই স্বভাবটার কারণে নিশি অনেক সময় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে।

বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার সময় এমন অনেক ঘটনা ঘটে, যে সবাই এক সাথে কথা বলার কারণে কেউ কারোর কথাই ঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারে না। অনেক সময় নিশি কোনো একটি কথা বলছে কিন্তু তার কথা কেউ শুনছে না। এমত অবস্থায় নিশির হঠাৎ মাথা গরম হয়ে যেত, এবং বন্ধুদের পাশ থেকে উঠে চলে যেত। প্রথম কিছুদিন তার বন্ধুরা কিছু বুঝতে পারত না নিশির কি সমস্যা হয়েছে।

1000007139.jpg

তার কাছে কিছু শুনলে সে কাউকে কিছু না বলেই সেখান থেকে চলে যেত। এমন কিছু দিন হওয়ার পর তার বন্ধুরা নিশিকে খুব খেয়াল করে দেখতে লাগলো। তারা বুঝতে পারে নিশির কোনো একটি সমস্যার কারণে তাদের সাথে এমনটা করছে। কয়েকদিন পর তার বন্ধুরা খেয়াল করে ব্যপারটা, যে নিশি কি কারণে হঠাৎ আড্ডার মাঝ দিয়ে উঠে চলে যায়।

পরের দিন তার বন্ধুরা ইচ্ছা করেই নিশির সাথে ওই ব্যপারটা ঘটায়। তারা ইচ্ছে করেই নিশিকে এড়িয়ে চলে যায়। নিশির কথা তারা কেউই পাত্তা দেয় না। তারপর হঠাৎ যখন নিশি উঠে চলে যেতে চায় তখন তারা সবাই মিলে নিশিকে জোর করে আটকায়। তারা তাকে বলে যে, নিশি কেন এমনটা করে ওদের সাথে? কারণ নিশি যে বিষয়টা নিয়ে রাগ করে সেটা খুবই সামান্য একটা বিষয়।

পরে নিশি তার বন্ধুদের সবটা খুলে বলে। নিশি এই বিষয়টা নিয়ে অনেকবার ডাক্তারের কাছেও গিয়েছে, কিন্তু নিশির এই সমস্যার কোন সমাধান কেউ দিতে পারেনি। নিশির সমস্যাটা খুব সামান্য মনে হলেও এই ব্যাপারটা অতটা সামান্য নয়। কারণ নিশির সাথে যদি এমনটা হয় তবে সে তৎক্ষণাৎ কিছু না করলেও আড়ালে গিয়ে নিজেকে আঘাত করে। নিজেকে শাস্তি দেয়।

1000007140.jpg

সেভাবে তার সাথে খুবই জঘন্য কোন কিছু হয়েছে এবং সেটার জন্য নিশি নিজেকেই দোষারোপ করে। অনেকবার নিশি সুইসাইড করতেও চেষ্টা করেছে। এজন্যই সমস্যাটিকে অনেক বড় করে দেখতে সবাই বাধ্য হয়। নিশির সমস্যার কথা শুনে তার বন্ধু-বান্ধবরা সবাই খুব অবাক হয়। প্রথম দিন তো তারা কেউই নিশির কথা বিশ্বাস করতে চায় না।

তবে পরে নিশির মায়ের কাছ থেকে ব্যাপারটা শুনে বিশ্বাস করে যে, নিশির সমস্যাটা আসলেই অনেক গুরুতর। পরবর্তীতে তার বন্ধুরা সবাই নিশির এই সমস্যাটির দিকে খেয়াল রাখত এবং নিশিকে এই সমস্যাটি থেকে বের করার জন্য তার বন্ধুরা অনেক চেষ্টাও করেছে। নিশি এখন আগের তুলনায় অনেকটা ভালো আছে। এখন আর সে নিজেকে কষ্ট দেয় না।

আমি মনে করি, এই অসম্ভব শুধু মাত্র সম্ভব হয়েছে তার বন্ধু- বান্ধবদের জন্য। এমন কিছু বন্ধু বান্ধব থাকলে আমরা জীবনের সব প্রতিকূলতা এড়িয়ে ভালোভাবে এগিয়ে যেতে পারি।

সমাপ্ত

"ধন্যবাদ সবাইকে"

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

খুবই সাংঘাতিক সাইকো প্রবলেম, এরকম কিছু মানুষ থাকে যারা কেন্দ্রবিন্দু হতে চায় কিন্তু সেটা যদি ভয়ংকর রকম পর্যায়ে চলে যায় তাহলে সেটা মানসিক সমস্যার দিকে চলে যায়। নিশির সাথেও ঠিক তেমনটাই হয়েছে তার বন্ধুরা তাকে সঠিক সময়ে, সঠিক পর্যবেক্ষণ এবং ব্যবহারের মাধ্যমে আস্তে আস্তে রিকভার করার চেষ্টা করেছে, নিঃসন্দেহে তার বন্ধুরা চমৎকার কাজ করেছে।

বর্তমান সময়ে সাইকো প্রবলেম খুবই গুরুতর একটি সমস্যা। এর কারণে অনেক মানুষ সুইসাইড পর্যন্ত করতে যায়। তবে এই সমস্যার বর্তমানে ডাক্তারের কাছে পুরোপুরি কোনো সমাধান নেই। আমি মনে করি, এই সমস্যা থেকে বের হওয়ার জন্য আমাদের পরিবারের সদস্যদের অনেক সচেতন হতে হবে তাদের বাচ্চাদের উপর। তারা কখন কি করছে সেটা তাদের ভালো ভাবে খেয়াল রাখতে হবে।

দাদা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Loading...

এটি একটি খুবই হৃদয়স্পর্শী এবং শিক্ষণীয় গল্প। নিশির সমস্যা এবং তার বন্ধুদের সহানুভূতি ও সহায়তা সত্যিই অনুপ্রেরণামূলক। কখনও কখনও আমরা কারো সমস্যার গুরুত্ব বুঝতে পারি না, কিন্তু যখন সেই সমস্যার গভীরতা জানতে পারি, তখন তা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে। বন্ধুত্বের আসল মানে তো এই, একে অপরকে সাহায্য করা এবং বিপদে পাশে দাঁড়ানো। নিশির এই সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা শিখতে পারি যে, কখনও কখনও আমাদের সহানুভূতি এবং বুঝতে পারা অনেক বড় পার্থক্য সৃষ্টি করতে পারে।
ধন্যবাদ, এমন একটি গল্প শেয়ার করার জন্য!

বর্তমানে নিশি যে সমস্যার মধ্যে রয়েছে ঠিক একই সমস্যা আমাদের আশেপাশের অনেক মানুষের মধ্যে রয়েছে। তারা নিজেদেরকে সবসময় বড় দেখাতে ভালোবাসে। তারা এতেই নিজের সুখ খুঁজে পায়। এই রকম ব্যক্তি আমাদের সাথে থাকলে সবসময় খেয়াল রাখা উচিত তারা যেন আমাদের কোনো কথা বা কাজে কখনো কষ্ট না পায়। তারা কষ্ট পেলে আমাদেরকে কখনো কোনো ক্ষতি করবে এমনটা নয়, তারা নিজেদেরকেই ক্ষতবিক্ষত করে।

আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

এটা একেবারেই ঠিক অনেকেই চেষ্টা করে শুধুমাত্র আমার পরিবার আমাকেই গুরুত্ব দেবে আমার বন্ধুরা শুধুমাত্র আমার কথা শুনবে আমার যে প্রিয় মানুষ আছে সে শুধুমাত্র আমাকেই সময় দেবে এটা করতে করতে একটা সময় দেখা যায় আমাদের জীবনের সমস্যাগুলো অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়।

নিশির ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে নিশি নিজেকে সবার সামনে খুব পাওয়ারও একজন মানুষ হিসেবে প্রকাশ করতে চেয়েছিল কিন্তু প্রকাশ করতে চাইলেই হবে না এটা মানসিকভাবে আপনাকে অনেক বেশি কষ্ট দেবে নিশির বন্ধুরা যখন তাকে পাত্তা না দেয়া শুরু করল তখন কিন্তু সে বুঝতে পারল তার এটা সমস্যা।

যাইহোক পরবর্তীতে তার বন্ধুরা তাকে সাহায্য করেছে এখান থেকে বের হয়ে আসতে আসলে বন্ধুত্বের ঋণ কখনো শোধ করা যায় না কারণ তারা সর্বদাই চেষ্টা করে বন্ধুদেরকে সাহায্য করতে বর্তমান সময়ের নিশি ভালো আছে জানতে পেরে ভালো লাগলো আমাদের মধ্যে যাদের এই সমস্যাটা রয়েছে আমি অনুরোধ করব আপনারা এই সমস্যা থেকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন।