অপ্রাপ্তি। 🙁

in hive-120823 •  19 hours ago 

"নমস্কার বন্ধুরা!"
আশা করি সবাই ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আমি আবারও নতুন একটি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন আর বেশি দেরি না করে শুরু করে দেই.......

1000007161.png

Edit by canva

গভীর রাতে হঠাৎ অনিকের ঘুম ভেঙ্গে গেল। অনিকের বেশ কিছুদিন ধরে এমনটা হচ্ছে। অনিকের রাতে এভাবে একবার ঘুম ভেঙে গেলে আর ঘুম আসেনা। প্রায়ই রাতে যখন অনিকের ঘুম ভেঙ্গে যায় তখন সে তার বাসার ছোট ছাদটায় গিয়ে বসে। একা একা সে আপন মনে বসে থাকে। যতক্ষণ না ভোরের আলো ফোটে ততক্ষণ সে ওই ছাদেই বসে থাকে।

কিন্তু আজ অনিকের কি যেন হলো, অনিক আজ আর ছাদে গিয়ে বসলো না। হঠাৎই অনিক তার বাসার গেট খুলে বাইরে বেরিয়ে সোজা রাস্তা দিয়ে হাঁটা শুরু করলো। অনিক যেন কিছুটা ঘোরের ভিতর ছিল। অনিক নিজেও জানে না সে কোথায় যাচ্ছে। তবুও অনিক তার হাঁটা থামালো না। অনিক হেঁটেই চলেছে গন্তব্যহীন পথে।

1000007165.jpg

অনিক সবদিনই একটু শান্ত স্বভাবের ছেলে। তবে ইদানিং তার যেন কিছু একটা হয়েছে। অনিকের বাবা নেই। তার মা এবং ছোট বোন গ্রামে থাকে। অনিক শহরে পড়াশোনা করে। অনিকের ইউনিভার্সিটিতে তার সাথেই আনিকা পড়তো। আনিকা এবং অনিক দুজন দুজনকে ভালোবাসতো। অনিকের অবস্থা সম্পর্কে আনিকা সবটাই জানতো। আনিকা সবকিছু জেনেশুনেই অনিককে ভালোবেসেছিল। আনিকা অনেক বোঝাতো অনিককে।

তবে আনিকা একটু চঞ্চল স্বভাব মেয়ে ছিল। আনিকা হুট করেই একদিন অনিককে বলল যে তাকে বিয়ে করতে। অনিক আনিকাকে বলেছিল সে শুধুই তাকে বিয়ে করবে, তবে আগে সে নিজে ভালো কিছু একটা করতে চেয়েছিল। কিন্তু আনিকা অনেক জেদ করেই সেদিন অনিককে বিয়ে করেছিল। তাদের বিয়ের ব্যাপারে তারা দুজন ছাড়া আর কেউ জানতো না।

1000007164.jpg

তাদের বিয়ের পরও তারা দুজন দুজনের মতোই থাকতো। অনিক হলে থাকতো এবং আনিকা তার বাড়িতেই থাকতো। তাদের বিয়ে হয়েছে প্রায় দু'বছর আগে। এই দুই বছরে অনেক কিছু ঘটে গেছে তাদের সম্পর্ক নিয়ে। আনিকা হুট করেই তিন মাস আগে অনিকের কাছে ডিভোর্স চেয়েছে। প্রথমে অনিক কথাটি শুনে কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি।

পরে অনিক জানতে পারে আনিকার মা তার জন্য একটি ছেলে পছন্দ করেছিল। সেই ছেলে আবার বিদেশে থাকে।
আনিকা হঠাৎ করে তার মতামত বদলে অনিককে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। এবং এর কিছুদিন পর সেই ছেলেটিকে বিয়ে করে বিদেশে চলে গিয়েছিল। কিন্তু আনিকা বিদেশে যাওয়ার পর বুঝতে পেরেছিলো সে যার সাথে বিয়ে করেছে সে একটি জঘন্য মানুষ।

1000007166.jpg

আনিকা কে অনেক টর্চার করতো। কয়েক মাস পর আনিকার মা আনিকা কে দেশে ফিরিয়ে এনেছে। আনিকার অবস্থা এখন খুবই খারাপ। দুদিন আগে আনিকার মা অনিককে তাদের বাসায় ডেকেছিল। অনিক গিয়েছিল কিন্তু আনিকার সামনে অনিক কোন কথাই বলতে পারিনি। সে আনিকার সাথে কথা বলতে ইতস্তত বোধ করতেছিল।

কিছুক্ষণ পর অনেকের ঘোর কেটে গেলে অনিক বুঝতে পারলো সে আর অন্য কোথাও নয় আনিকার বাসার দিকেই যাচ্ছে। হঠাৎ সে থেমে কিছু একটা ভেবেছিলো, তারপর সে আবার হাঁটা শুরু করলো। যখন সে আনিকার বাসার সামনে গিয়ে পৌঁছালো তখন সে খেয়াল করে দেখলো আনিকার বাসার সামনে অনেক মানুষের ভিড়। এত ভোরে ও এত মানুষের ভিড় দেখে অনেক কিছুটা সামনে গিয়ে দেখলো, একটি খাটিয়ায় সাদা কাপড়ে মোড়া আনিকা শুয়ে আছে........

সমাপ্ত

"ধন্যবাদ সবাইকে"

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

আপনার পোস্টটি খুবই দুঃখজনক এবং হৃদয়বিদারক ছিল। অনিক এবং আনিকার জীবনের এই যন্ত্রণা ও অপ্রাপ্তি যেন বাস্তব জীবনের অনেক অমীমাংসিত দুঃখের গল্পের মতো। আনিকার সংসারের অশান্তি এবং অনিকের অনুভূতি, সব কিছুই খুব গভীরভাবে মর্মাহত করে তোলে। দুঃখজনক হলেও, বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার পর মানুষ অনেক কিছু শেখে। আশা করি, সকলেই এই গল্প থেকে কিছু না কিছু শিক্ষা নেবে। আপনার শেয়ার করা গল্পটি সত্যিই মনে দাগ কাটে।