মামা। 💛

in hive-120823 •  5 days ago 

"নমস্কার বন্ধুরা!"
আশা করি সবাই ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আমি এক ভিন্ন ধরনের গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন আর বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক.......

1000007098.png

Edit by canva

মামা শব্দটির মধ্যে খেয়াল করলে দেখা যাবে দুইবার "মা" আছে। এজন্যই হয়তো মামারা মায়ের সমান ভালোবাসে এবং মায়ের থেকেও বেশি আগলে রাখে। কথিত আছে, "মায়ের থেকে মাসির দরদ বেশি"। তবে আমার মনে হয় মাসির থেকেও মামার কাছে আমাদের আবদার বেশি। প্রত্যেকটি বাচ্চার তার ছেলে বেলা কেটে যায় কখন স্কুল বন্ধ দিবে আর বন্ধের সময় তারা তাদের মামা বাড়ি বেড়াতে যাবে।।

প্রত্যেকের তার মামার কাছই সব আবদার থাকে। মামারাও কেন জানি না তার প্রিয় বোনের সন্তানদের সকল আবদার মুখ বন্ধ করে সহ্য করে যায়। হোক না কেন তা অন্যায় আবদার। একটি ছোট কাহিনী বলি আপনাদের, অলির মামা বাড়ি তখনও বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছায় পারি নি৷ তার মামা বাড়ি থেকে প্রায় ঘন্টা খানেক দূরে একটি ছোট বাজার আছে। অলিরা গরমের ছুটিতে এবার তার মামা বাড়িতে গিয়েছিলো।

1000007093.jpgSource

অলি তখন অনেক ছোট। হঠাৎ অলি একদিন রাতে ঘুম থেকে উঠে আইসক্রিম খাওয়ার বায়না শুরু করে। রাত তখন প্রায় এগারোটা বাজে। গ্রামের বাড়িতে রাত এগারোটা মানে অনেক রাত। সেই রাতে বাড়ির আশেপাশে কোথাও আইসক্রিম পাওয়া যাবে না, এ কথা তার মা তাকে অনেক ভাবে বুঝিয়েছে। কিন্তু অলি তার কোনো কথাই শোনে না। তার একটাই কথা সে আইসক্রিমই খাবে।

অলির কান্নাকাটি দেখে তার মামা সহ্য না করতে পেরে সেই রাতেই পায়ে হেঁটে বাজারে গিয়ে পৌঁছায়। রাত তখন বারোটা বাজে, এতো রাতে বাজরের কোনো দোকান খোলা ছিল না। পরে অলির মামার পরিচিত এক দোকানদার থাকায় সে সেই রাতে তার বাড়িতে গিয়ে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে অনেক অনুরোধ করে, দোকান খুলে তার ভাগ্নীর জন্য একটা আইসক্রিম দিতে।

অবশেষে দোকানদার তার দোকান খুলে তাকে আইসক্রিম দিতে রাজি হয়। কিন্তু এতোটা রাস্তা সে আইসক্রিম নিয়ে কেমন করে যাবে? পরে অনেক ভাবার পরে সেই দোকান থেকে সে কিছু পরিমাণ বরফ নিয়ে সেই বরফের ভিতর আইসক্রিম দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায়। সে বাড়ি গিয়ে দেখে তার ভাগ্নী এখনো ঘুমাইনি। সেই রাতে অলি আইসক্রিম খেয়েই ঘুমায়।

1000007092.jpgSource

মামারা কি এমনই হয়? হ্যা, মামারা এমনই হয়। তাদের প্রিয় ভাগ্নে বা ভাগ্নীদের জন্য তারা সব কিছুই করতে পারে। ছোট বেলায় যেমন ছুটির জন্য অপেক্ষা করা হতো মামার বাড়িতে যওয়ার জন্য কিন্তু আস্তে আস্তে ছোট বেলার মতো সেই অনুভূতি এখন আর হয় না। বড় হলে সেই ছোটবেলার কথা গুলো শুধু স্মৃতি হয়ে থেকে যায়।

আগের মতো আর মামা বাড়ি যাওয়া হয় না। এখন হাতে সময় থাকলেও এখন আর আগের মতো মামার বাড়ি যাওয়ার কথা মনে পড়ে না। তবে আমাদের মামাদের যত্ন ও ভালোবাসা এখনো আগের মতো আছে। কখনো কমে যায় নি। মামারা আমাদের কাছে মায়ের থেকেও বেশি আবদারের জায়গা। ভালো থাকুক সকল মামারা।

সমাপ্ত

"ধন্যবাদ সবাইকে"

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Loading...

আপনার গল্পটি খুবই হৃদয়গ্রাহী এবং সুন্দর! মামাদের ভালোবাসা এবং তাদের কাছে কীভাবে আমরা সব কিছুতেই স্নেহ আর যত্ন পাই, তা অসাধারণভাবে ফুটে উঠেছে। বিশেষ করে অলির মামার সেই ভালোবাসার কাহিনী সত্যিই হৃদয়স্পর্শী। ছোটবেলায় এমন আবদার ও ভালোবাসা আমাদের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। সত্যিই, মামারা আমাদের জীবনে মায়ের মতোই গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের যত্ন কখনো কমে না। এমন সুন্দর গল্পটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

মামা হলো আমাদের জীবনের একটি অংশ। মামারা আমাদের জীবনে মায়ের মতোনই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মামার ভালোবাসা কোনোদিন ও কমে না। তাদের ভালোবাসা আজীবন একই রকম থেকে যায়।

এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন আপু।