আমার কাছে ছটপুজোর গুরুত্ব

in hive-120823 •  2 years ago  (edited)

outdoor-6615900_640.jpg

pixabay

প্রিয়,
পাঠকগণ,

লেখার শুরুতেই আপনাদের সকলকে জানাই সুপ্রভাত।আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং আজকের দিনটা সকলের খুব ভালো কাটুক এই প্রার্থনা নিয়ে আমি আজকে লেখা শুরু করছি।

গতকাল ছিলো ছট পুজো। তাই আপনাদের সকলকে ছট পুজোর অনেক শুভেচ্ছা জানাই।ছট পুজো সম্পর্কে আমি আগে সত্যিই বেশি কিছু জানতাম না।তবে আমি অফিসে যাওয়ার পর থেকে এই পুজো সম্পর্কে জানতে পারি।

আমাদের অফিসের একটি মেয়েদের বাড়িতে ছট পুজো হয়। কয়েক বছর আগে ও পুজোর পরে একদিন, ওদের বাড়ি থেকে প্রসাদ (ঠেকুয়া) এনে আমাদের খাওয়ায়। জিনিসটা খেতে একবারেই অন্যরকম লাগে। তারপর ওর কাছ থেকে জানতে পারি যে ছট পুজোর প্রধান প্রসাদই হলো এই ঠেকুয়া।

ঠেকুয়ার স্বাদ সত্যিই অন্যান্য অনেক মিষ্টির থেকে আলাদা। বেশ অন্যরকম লাগে খেতে। আশাকরি আপনারাও ঠেকুয়া খেয়েছেন। আপনাদের কেমন লাগলো নিশ্চয়ই জানাবেন।সবথেকে যেটা ভালো লাগে, এটি বহুদিন পর্যন্ত ঘরে রেখে খেলেও নষ্ট হয় না।

ছট পুজোর নিয়ম অনুযায়ী এই পুজোয় কোনো মূর্তিকে পুজো করা হয় না। শুধুমাত্র মা ষষ্ঠী ও সূর্য দেবতাকে পুজো করা হয়। প্রধানত সন্তানের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও সাফল্য কামনা করে পিতা ও মাতা দুইজনেই এই পুজো করে থাকেন।

আমাদের বাড়ির আশেপাশে কারোর বাড়িতে যদিও এই পুজো হয়না। কারন এই পুজো প্রধানত বিহার, ঝাড়খণ্ড উত্তর প্রদেশেই বেশিরভাগ অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিমবঙ্গের কিছু কিছু জায়গায় অবশ্য এখন এই ব্রত পালিত হয়।এই ব্রত চারদিন ধরে পালিত হয়। আর এই পুজোতে উপোসের নিয়মও বেশ কঠিন।

শেষ দিন সুর্যোদয়ের সময় সূর্যদেবের পুজো দিয়ে শুরু করে, সারাদিন নির্জলা উপোস করে আবার সূর্যাস্তের সময় কাছের কোনো নদী বা পুকুরে গিয়ে সূর্যদেবের উদ্দেশ্যে পুজো দিয়ে তারপর উপোস ভাঙতে হয়। একসাথে যখন সকলে মিলে নদীর পাড়ে এই পুজো করে দেখতে ভীষন সুন্দর লাগে।

ছটপুজোর একটি বিশেষ বিশেষত্ব হলো, এই পুজোর জন্য শুধুমাত্র প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা হয়। আমাদের বাড়িতে বিভিন্ন পুজোর সময় আপনারা দেখে থাকবেন, যে আমরা পুজোর জন্য আলাদা করে কাঁসার, স্টিলের পাত্র রেখে দেই। সব পুজোর সময় আমরা সেগুলো ব্যবহার করি।

outdoor-6615903_640.jpg

pixabay

কিন্তু ছট পুজোয় জন্য কোনো কাঁসা, পিতল বা স্টিলের পাত্র ব্যবহার করার নিয়ম নেই। এই পুজোর জন্য শুধুমাত্র বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পাত্র, ঝুড়ি এই সব ব্যবহার করা হয়।আর প্রসাদ অর্থাৎ ঠেকুয়া তৈরি করা হয় ঘাটি ঘি দিয়ে।প্রসাদ তৈরি করা হয়ে গেলে সেগুলো শুধুমাত্র বাঁশের ঝুড়িতেই রাখার নিয়ম আছে। তখন অন্য কোনো পাত্র ব্যবহার করা যায় না।

আসলে, ঠাকুর বা ঈশ্বর যাই বলুন না কেন তিনি একজনই, শুধু ভিন্নরূপে আমরা তার পুজো করি। কথাটা একদমই সত্যি। বিভিন্ন ধর্মের মানুষের ভগবানকে ডাকার পদ্ধতি আলাদা, কিন্তু সকলের উদ্দেশ্য কিন্তু এক। শুধু ভিন্ন রূপের পুজো ভিন্ন পদ্ধতিতে করা হয়, আর এটাই স্বাভাবিক।

আর এই সবকিছু মিলিয়েই নানা ধর্ম-বর্নের দেশ হয়ে উঠেছে আমাদের এই ভারতবর্ষ। যেখানে দূর্গাপূজা, কালীপুজো, ভাইফোঁটা যেমন পালিত হয়, তেমনি ঈদ পালিত হয়। অন্যদিকে করবাচৌথের ব্রত থেকে শুরু করে ধনতেরাস, দশেরা, ছটপুজো সবকিছু পালিত, আবার পাশাপাশি আমরা বড়দের অর্থাৎ ২৫ শে ডিসেম্বরে মজা করে কেক ও খাই।আর এই প্রত্যেকটি উৎসব আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

যাইহোক, আশাকরি আপনারাও আমার সাথে একমত হবেন। ছটপুজো সম্পর্কে আপনাদের মতামত আমার সাথে নিশ্চয়ই ভাগ করে নেবেন। সকলে খুব ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

শিলিগুড়িতে থাকা কলিন্ এই পুজোর গুরুত্বের পাশাপশি প্রচুর ঠেকুয়া খাবার সুযোগ হয়েছিল। সঠিক উপাদান দিয়ে তৈরি করলে ভীষণ ভালো লাগে খেতে।

একদমই ঠিক বলেছেন দিদি সঠিক ভাবে তৈরি করলে তবে সঠিক স্বাদটা পাওয়া যায়। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

বিহারী খাবারের মধ্যে লিটটি, চোখা আসে এই
ঠেকুয়া বিখ্যাত, তবে সঠিক উপাদান দিয়ে বানাতে পারলে তবেই ভালো লাগে দেখতে।
আমি দুটোই খাবার সুযোগ পেয়েছি এবং খুবই সুস্বাদু খাবার মনে হয়েছে আমার।

হ্যাঁ স্যার উপাদান সঠিক হওয়া চাই, তবেই সুস্বাদু হয়। লিট্টিচোখা খাওয়ার সৌভাগ্য এখনও হয়নি তবে ঠেকুয়া আমারও বেশ ভালো লাগে। অনেক ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

@baishakhi88 আমিও গিয়েছিলাম আমার বান্ধবীর বাড়ির ছটপূজোতে। দেখছি দিদি আপনিও অনেক কিছু জানেন ছটপূজোর সম্বন্ধে।

ভালো থাকবেন।

হ্যাঁ তোমার পোস্ট পড়ে জানলাম তুমি বান্ধবীর বাড়িতে সচক্ষু দেখেছো এবারের ছটপুজো। তুমিও ভালো থেকো।

Loading...