প্রিয়
পাঠকগণ,
আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন,সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।
গত কয়েকদিন ভীষণ ঠান্ডা পড়ছে। এত পরিমাণে ঠান্ডা গত কয়েক বছরের মধ্যে পড়েছে বলে আমার মনে হয় না। অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছরের শীত একটু বেশি অনুভূত হচ্ছে।
শীতকালে ঠান্ডায় কষ্ট পাওয়া ছাড়া, বাকি সব কিছুই কিন্তু আমাদের বেশ ভালো লাগে। যেমন ধরুন বিভিন্ন ধরনের ফুল ফোটে।
বাজারে গেলেই নানান রকমের সবজি পাওয়া যায়। এছাড়াও রয়েছে খেজুরের রস,খেজুরের গুড়ের সাথে বিভিন্ন ধরনের পিঠে-পুলি খাওয়ার আনন্দ।
তার পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। নিজের কাজের মানুষ, বন্ধুদের সাথে পিকনিক করা। মোটামুটি বলা যায় সবদিক থেকেই শীতকাল বেশ ভালো লাগে।
শীতকালীন অনেক সবজি আমার বেশ প্রিয়। আমি যখন বাজারে যাই তখন আমি ঠিক করতে পারি না কোন সবজি রেখে কোন সবজি কিনব।
কারণ সব সবজি এত টাটকা এত সুন্দর লাগে দেখতে,যে মন চায় সবগুলোই কিনে নিয়ে আসি। যাইহোক আজকে তাদের মধ্যে থেকেই একটি বিশেষ শাকের কথা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
সেটি হল পালং শাক। হয়তো অনেকেই ভাবছেন, আমি আজকে রান্নার রেসিপি শেয়ার করব কিন্তু দুঃখিত আজকে বাড়িতে পালং শাক রান্না হলেও রান্নার রেসিপি শেয়ার করার মতন পর্যাপ্ত ছবি আমি তুলতে পারিনি।কারন অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম।
ফলে আমি আপনাদেরকে রান্নার প্রতিটি ধাপ বর্ণনা করতে পারবো না। আজকে আপনাদেরকে দেখাবো আমাদের বাড়িতে আমার বাবা রীতিমতো পালং শাকের চাষ করেছে তার ছবি। আর তার সাথে আলোচনা করব পালং শাক আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা উপকারী সেই সম্পর্কে কিছু তথ্য।
পালং শাক আমাদের বাড়িতে প্রধানত বিভিন্ন রকম সবজি দিয়ে শাকের মতো করে রান্না করা হয়। কিন্তু পালং শাকের যে রেসিপিটি প্রায় সকলেই পছন্দ করেন সেটি হল পালং পনির। কিন্তু আমি নিজে পনির খেতে পছন্দ করি না। তাই আমি পালং পনির খাই না কিন্তু হ্যাঁ আমার ছেলে পনির খেতে খুব ভালোবাসে।
তাই শীতকালে ওর জন্য রান্না করা হয় ও ভাতের থেকেও বেশি পরোটা কিংবা রুটি দিয়ে ওই পদটি খেতে পছন্দ করে।
পালংশাকের উপকারীতা:-
এবার আপনাদের সাথে শেয়ার করবো পালং শাকের উপকারীতা -
আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন কমাতে পালং শাক একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ এই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার।এছাড়াও আইরন,ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়ামের মতো নানাবিধ খনিজ ও ভিটামিন। যেগুলো আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। আর এই খনিজটি আমাদের শরীরের সোডিয়াম বা লবণের হারিয়ে যাওয়া ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে পালং শাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।পালং শাকে থাকা পটাশিয়াম আমাদের শরীরের রক্ত চলাচল যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়,সেটিকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে সাহায্য করে। স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের শরীরে রক্তচাপ বৃদ্ধির আশঙ্কা অনেকাংশে কমে আসে।
পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং বিটাক্যারোটিন রয়েছে এবং এই দুটি উপাদানই আমাদের শরীরের কোলন কোষগুলোকে রক্ষা করে।
যাদের মাইগ্রেনের ব্যথা আছে তারা জানেন যে, এই মাইগ্রেনের ব্যথা কতটা সাংঘাতিক হতে পারে। কিন্তু আমাদের খাদ্য তালিকায় যদি পালং শাক থাকে এবং তার খাদ্যগুণ আমাদের শরীরের প্রবেশ করে মাইগ্রেনের ব্যথায় খুবই ভালো কাজ করে।
আর্থারাইটিস সম্পর্কে আমরা সকলেই মোটামুটি অবগত। শরীরের বিভিন্ন গাটে বা জয়েন্টে ব্যথা নিরাময়ের ক্ষেত্রে পালং শাক খুবই উপকারী।
পালং শাকে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ভিটামিন।যেগুলো রক্তাল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।কারণ শরীরে উপস্থিত আয়রন হিমোগ্লোবিন তৈরি করে,আর ভিটামিন সি রক্তের শ্বেত কণিকার প্রয়োজনীয় মাত্রা বজায় রাখে। ফলে পালং শাক খেলে আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়।
আমরা সকলেই জানি কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে শাকের ভূমিকা অনন্য। সেক্ষেত্রে পালং শাক ও পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।এটি আমাদের শরীরে হজম ক্ষমতা বাড়ায় ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
বিভিন্ন চিকিৎসকের মতে প্রতিদিন আমাদের খাদ্য তালিকায় পালং শাক থাকলে,পালং শাকের খাদ্যগুণের কারণে কিডনিতে পাথর হলে তা গুড়ো হয়ে সহজেই বেরিয়ে যায়।
জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য পালং শাক অনেক উপকারী।
এছাড়াও আমাদের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির জন্য পালং শাকের জুড়ে মেলা ভার। কারণ পালং শাকে বিটাক্যারোটিন,জ্যান্থিন ও লুটেইন আছে যেগুলো আমাদের রেটিনার কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
এছাড়াও এই লুটেইন আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। ফলে হৃদরোগের মতো মারাত্মক রোগের হাত থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে।
এই সবকিছু ছাড়াও আর বিভিন্ন ক্ষেত্রে পালং শাক আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
আপনাদের মধ্যে কার কার পালং শাক খেতে ভালো লাগে জানাবেন।পাশাপাশি আমার আজকের লেখা সম্পর্কে আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না।
সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভ রাত্রি।