কামরাঙ্গা গাছের হাত ধরে স্মৃতিচারণ

in hive-120823 •  2 years ago 

IMG_20221217_004101.jpg

(কামরাঙা গাছে কামরাঙার ফুল)

প্রিয়,
পাঠকগণ,

আশাকরি আপনারা সকলে খুব ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটা খুব ভালো কেটেছে।

আমার দিনটাও মোটামুটি ভালোই কাটলো। আজকে আমি আমার লেখার মধ্যে দিয়ে আপনাদের সকলকে নিয়ে যাবো ছোটো বেলার কিছু ভালো মুহুর্তের কাছে।

স্কুল জীবনে আমরা বিশেষ করে মেয়েরা স্কুলে গিয়ে স্কুলের বাইরে দাড়িয়ে থাকা ফুচকা, আলুকাবলী, আচার এই সব কিছু খাওয়ার স্মৃতি কখনো ভুলতে পারবো না।

আজকাল শহরের অলিতে-গলিতে অগনিত ছোটো ছোটো রেস্টুরেন্ট আছে। আর নামী রেস্টুরেন্টের তো অভাব নেই। আর খাদ্য তালিকা যে কতো রকমারি খাবারের নাম আছে, সেই সম্পর্কে আলাদা করে নাই বা বললাম।

IMG_20221217_004143.jpg

(বিশাল আকারের কামরাঙ্গা গাছ)

কারন সে বিষয়ে আপনারা সকলেই কমবেশি জানেন। তবে কি বলুন তো যতো নামিদামি রেস্টুরেন্টে খাই না কেন, যতো সুস্বাদু পদ আমাদের দেওয়া হোক না কেন, কিন্তু স্কুলের বাইরে দাড়িয়ে থাকা ঐ ফুচকা, আচারের মতো স্বাদ অন্য কোনো কিছুতেই নেই।

আজকে আমি অফিসের কাজে একটু বাইরে বেড়িয়ে ছিলাম। সেখানেই রাস্তার পাশে একটি বাড়িতে হঠাৎ কামরাঙ্গা ফলের গাছ চোখে পড়লো। প্রথমে চিনতে না পারলেও, গাছে কামরাঙ্গা ঝুলছে দেখে আমি বুঝলাম ওটা কামরাঙ্গা গাছ।

IMG_20221217_004125.jpg

(কামরাঙা গাছে ফল ও ফুল একসাথে)

কামরাঙ্গা গুলো দেখেই এক মুহুর্তে আমার স্কুলের বাইরে দাড়িয়ে থাকা স্বপন কাকুর কথা মনে পড়ে গেলো। কি যে সুন্দর করে উনি কামরাঙ্গা মাখা বিক্রি করতেন, সেটা না খেলে তার স্বাদ বলে বোঝানো যাবে না।

সেই স্বাদ আর কখনো কোথাও পাইনি। বহুদিন আগে একবার হাবড়া গিয়ে পেয়ারা মাখা আর কামরাঙ্গা মাখা খেয়ে ছিলাম। কিন্তু স্বপন কাকুর মতো অতো ভালো করে মাখতে পারেননি তিনি। সেই স্বাদ যেন এখনো লেগে আছে মুখে।

আজকাল ছেলেমেয়েরা কতো রকমারি টিফিন নিয়ে স্কুলে যায়, অথচ আমাদের সময়ে খুব কম দিন বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে যেতাম। এক টাকা-দুটাকা নিয়ে আমরা স্কুলে চলে যেতাম। তখন অবশ্য অনেক কিছু পাওয়া যেতো ঐ টাকায়।

আপনারা যারা আমাদের মতো স্কুলের বাইরে দাড়িয়ে থাকা দোকান থেকে খাবার কিনে খেয়েছেন, একমাত্র তারাই জানেন সেই খাবারের কি স্বাদ।

আমার কাছে আমাদের সময়কার মাছ লজেন্স, কুলের গুড়ো, রকমারি আচার এই সবকিছুর সামনে আজকালকার ক্যাডবেরী, চিপস্ , চাউমিন, কিছুই না। আজও যদি আমি ঐসব খাবার ফিরে পাই তবে, ক্যাডবেরী, চিপস্ ছাড়তে আমি দুবার ভাববো না।

IMG_20221217_004208.jpg

(এমন ভাবে কামরাঙ্গা ঝুলছে যে দেখে লোভ লাগছিলো)

সত্যিই যদি পুরোনো দিন ফিরে পাওয়া যেতো, তাহলে নতুন করে আবার কিছু সঞ্চিত হতো মনে। সত্যিই জানি না আজকে স্বপন কাকু কোথায় আছেন, কেমন আছেন। যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক, এই প্রার্থনা করি।

আপনাদের স্কুল জীবনের এমন কোনো স্মৃতি থাকলে অবশ্যই জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভ রাত্রি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আমি এই প্রথম কামরাঙা ফুল দেখলাম।দিদি আপনি একদম ঠিক বলেছেন এখনকার দিনের রেস্টুরেন্টে এই স্বাদ নেই,যা আমরা স্কুল জীবনের খাওয়ায় পেতাম।

একদমই তাই, স্কুল জীবনে একসাথে বসে সবাই মিলে শুকনো রুটি খাওয়ার মধ্যে যে মজা ছিলো,সেগুলো আজ রেস্টুরেন্টে বসে রকমারি খাবার খাওয়ার মধ্যে নেই। কামরাঙ্গা ফুলের রঙটা সত্যিই খুব সুন্দর। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

Loading...

@baishakhi88 আপনার লেখা পোস্ট খুব ভালো লাগলো পড়তে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আর আপনার তোলা ছবি গুলো খুব সুন্দর হয়েছে। ভালো থাকবেন।

ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। আপনিও ভালো থাকবেন।

স্কুল জীবন আমাদের জীবনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দ মুখর সময়, যদিও সেই সময় বুঝিনি, যেটা তখন আমাদের মা বাবা বোঝাতে চাইতেন সেটাই আমরা এখন আমাদের ছেলে মেয়েদের বোঝাই। কাজেই আপনার লেখায় যে অনুভূতি আপনি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন সেটি অনুভব করতে পারলাম।

আসলে আমরা কেউই তখন বুঝিনা স্যার যেভাবে এখন আমরা আমাদের সন্তানেরা বোঝেনা। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

@baishakhi88 কামরাঙ্গা গুলো দেখে পুরোনো কথা মনে পড়ে গেল, আমাদের কলেজের সাথে একজন কাকু খুব সুন্দর কামরাঙ্গা মাখা বিক্সি করতেন। খুব ভালো লাগতে খেতে।

ধন্যবাদ দিদি আপনার জন্য পুরোনো কিছু কথা মনে করতে পারলাম। ভালো থাকবেন।

তোমাকেও ধন্যবাদ আমার লেখা পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো লাগলো জেনে তোমরাও কলেজে কামরাঙ্গা মাখা খেয়েছো।