বয়সের সাথে সাথে কোমল চেহারায় যে কাঠিন্যতা আসে এটা মেনে নেওয়া একটু কঠিন বটে।খেয়াল করে দেখুন তো একটা সময় যেভাবেই ছবি তোলা হতো তা সব সময়ই সুন্দর হতো।আর এখন ছবি তে চেহারার কাঠিন্যতা কে কোন ভাবেই যেন আর আড়াল করা যাচ্ছে না।ছবিগুলো আগের মতোন হচ্ছে না।
শৈশব কৈশোরে নিষ্পাপ যে মনটা ছিল সেটাইতো ফুটে উঠতো ছবিতে।আর এখন অনেক কিছু দিয়ে ঘেরা মন-মস্তিষ্কে, চেহারায় কোমলতা তো থাকার কোনো কারণ আছে বলে মনে করি না।বয়সের পরিবর্তনটা খুব দ্রুতই ঘটে মানুষের সাথে।এতটাই দ্রুত ঘটে যে একটি বয়স থেকে আরেকটি বয়সে যেতে যে মানসিক প্রস্তুতি নিতে হয় সে সময়টুকু ও অনেক সময় পাওয়া যায় না।বুঝতে বুঝতে বেশ খানিকটা সময় চলে যায় ।
একদা ৩২ টা ছবি আসবে এমন রিলে খুব হিসাব কষে চমৎকার ছবি তোলা হতো।আর বর্তমানে হাজার হাজার ছবি তোলার সুযোগ থাকা সেলফি মেশিনের ব্যবহার করতে ও বিরক্ত বোধ করি।কোনো ছবি যদি তুলি তা দেখে নিজেই বিরক্ত হয়ে যাই।এ কেমন হয়ে গেছি।আসলে মন কেন এমন হয়ে যায়? মানুষেরই পরিবর্তনটা শুধু কি বয়স জনিত নাকি তার সাথে রয়েছে নানা কারণ।
একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর মানুষকে জীবনের অনেক দায়িত্ব নিতে হয়।দায়িত্ব নিতে হয় অন্য মানুষদেরও।পাশাপাশি করতে হয় অনেক কাজ।প্রতিদিনের ঝড়-ঝঞ্ঝা যেগুলো আসবে তা তাকে সামাল দিতে হয়।ফলশ্রুতিতে কঠিন কঠিন কাজগুলোর প্রতিফলন হয় আমাদের চেহারায়।
হঠাৎ কোথায় যেন চলে যায় সেই লাবণ্যতা!!! পার্লারের শত ঘষামাজায় সেই উজ্জ্বলতা আসে না যা কিনা এক সময় বিনা পয়সা খরচেই চেহারায় ফুটে উঠতো।দামি দামি কসমেটিক্স আর ফল-সবজি যতই ঘষাঘষি করি না কেন আর সেরকম ভাবে নিজের চেহারা কে দেখতে পাই না।
অ্যালবামে পুরনো ছবিগুলো দেখে বিস্মিত হই যে এটা কি সত্যিই আমি।যদি আমি হয়ে থাকি তবে এটা আমার নতুন কোনো সত্তা যা আমারই ভেতর থেকে এসেছে।বহু সময় গড়িয়ে একটি কথাই আমি বুঝেছি যে একটি মেয়ে শুধু রাজকন্যাই হতে পারে,এর বাইরে আর কিছু নয়।পিতার গৃহে একটি মেয়ে যত সুন্দর থাকে এর পরবর্তীতে কোন জীবনেই তার সেই সৌন্দর্যটা খুঁজে পাওয়া যায় না।( যদিও ব্যতিক্রম আছে,আমি তার ধারে কাছে যাচ্ছি না)
কখনো একটি নাপা, প্যারাসিটামল খেতে হয়নি তাদের একটা সময় আসে যখন তাকে খেতে হয় গাদা গাদা ওষুধ।তাও কি কেবল এমনি এমনি!!!চারিদিকে নানা টেনশন,অস্থিরতা, কাজ আর কাজ।কল্পনার সেই রাজকুমার কবেই তার পঙ্খিরাজ ঘোড়া নিয়ে চলে গেছে।মনে হয় সেও বুঝে গিয়েছিলো যে তার সময়টা ক্ষনিকের ছিল।
আজও ভালবাসি বই পড়তে, আজও ভালবাসি সিনেমা দেখতে, আজও ভালবাসি সাজতে।কিন্তু একটিও করি না।কারণ সেই উচ্ছলতা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।মাঝে মাঝে হাঁতড়ে বেড়াই সেই দিনগুলিকে।নাহ! সেই দিনগুলো আর খুঁজতে চাই না।এ শুধু চোখে পানি এনে দেয়, দরকার কি!!!
নিষিদ্ধ বিষয় বস্তুগুলো আজকাল এডাল্ট জোকস এ পরিণত হয়ে গেছে।আবার খুব তীব্র বেগে এটি রোগাক্রান্ত শরীরের বর্ণনা দেয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে।এতে আমি বেশ ভয় পাচ্ছি কারণ সামনের দিনগুলো যে হতে পারে অকল্পনীয়।এখন তো আর এই গান ও গাইতে পারি না যে কঠিন কে আমি ভালোবাসি।কারণ সত্যিই আমি আর কঠিন কে ভালোবাসি না, ভয় পাই।
চারিদিকে বিদায়ের লাইনে একজন একজন করে তার জায়গা খালি করে দিচ্ছে। জানি সে শূন্যস্থান কখনো পূরণ হবে না। এমনি কোন একদিন আমাকেও আমার জায়গাটা শূন্য করে দিয়ে যেতে হবে।পৃথিবী থেকে কেউ চলে গেলে পৃথিবীর তাতে কিছুই আসে যায় না।আর জীবন চলতে থাকে তার আপন গতিতে।
শিশু বয়সে আমাদের চিন্তা ছিল কবে বড় হয়ে উঠবো বড় হওয়ার পর একটা সময় পার করার পর নিজের চেহারার প্রতি অনেক যত্নশীল হয়ে ওঠে বিশেষ করে বিয়ের আগে ।বিয়ের পরের জীবনটাই শরীরের প্রতি যত্ন না নিলেও সন্তান ও ক্যারিয়ারের প্রতি মানুষ যত্নশীল হয়ে ওঠে আর এভাবে একটা সময় নিজের চেহারার প্রতি যত্ন নিতে ভুলে যায় এবং দিনে দিনে বয়স বাড়ার সাথে সাথে যেন চেহারার পরিবর্তন ঘটতে থাকে।
আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটি আর্টিকেল আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য ভালো থাকবেন নিজের প্রতি যত্ন নিবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit